শিক্ষা মানুষের জীবনকে সুন্দর করার পূর্বশর্ত। শৈশব থেকেই তাই শুরু হয় শিক্ষাগ্রহণ কার্যক্রম। তবে শুধুমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাই যথেষ্ট নয়। শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশ সাধনের জন্য পড়ালেখার বাইরে কিছু সাংস্কৃতিক চর্চাও প্রয়োজন। সঙ্গীত চর্চা বেশ গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে শিশুর সৃজনশীলতায়।
মস্তিষ্ক বিকাশ : মস্তিষ্কের সুষ্ঠ বৃদ্ধি সাধনে প্রতিদিন সঙ্গীতচর্চার ইতিবাচক প্রভাব বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমণিত। এতে পড়াশোনার প্রতি মনোযোগও বাড়ে। বাদ্যযন্ত্র বাজানো ও সঙ্গীত সাধনা মস্তিষ্কের স্মৃতি, মনোযোগ ও সমস্যা সমাধানের নিউরন অংশে উদ্দীপনা জাগায়।
মানসিক বুদ্ধিমত্তা ও সৃজনশীলতা : বিশ্বব্যাপী সঙ্গীত এমন এক যোগাযোগের মাধ্যম যা শুধুমাত্র ভাষায় বেষ্টিত নয়। শিশুরা তাদের মানসিক বুদ্ধিমত্তা প্রকাশ করে সুরের মাধ্যমে। এতে তারা সহমর্মি হয় এবং নিজের অনুভূতি সম্পর্কে সচেতন হয়। তাদের চিন্তাভাবনার পরিধিও বিকশিত হয়।
সহযোগীতা ও যোগাযোগ : শিশুদের যোগাযোগ করার দক্ষতা উন্নত হয় এর মাধ্যমে। বিভিন্ন দলগত কাজ করে তারা। ফলে সামাজিক মেলামেশা, কথপোকথন সহ অপরের সহযোগীতা করার চর্চাও হয়। শিশুরা বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া প্রদান ও মানিয়ে নেওয়ার শিক্ষাও গ্রহণ করে।
শৃঙ্খলা ও খাপ খায়িয়ে নেওয়া : বাদ্যযন্ত্র বাজানো বা এধরণের কার্যকলাপে অংশগ্রহণ বক্তব্য প্রদান, শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতা শেখায়। সময় ব্যবস্থাপনার গুণাবলিরও উন্নতি সাধিত হয়। সঙ্গীতের ছন্দে ছন্দে গাঁথুনি মানব জীবনের ধারাকে প্রতিফলিত করে।
প্রতিষ্ঠানিক বিদ্যা ও গণিত : গণিতের সঙ্গে এক গভীর সম্পর্ক আছে সুরের। গানের সুর চলে ছন্দে আর ছন্দ চলে গণিতের নিয়মে। ধারা, তাল, অনুপাত- সবের সম্মেলন আছে সঙ্গীতে। সমস্যা সমাধান এবং যৌক্তিক চিন্তাভাবনার মতো ক্ষেত্রে সেতুবন্ধন স্থাপন করে সঙ্গীত।
বৈচিত্রে সম্মান : সঙ্গীতের মাধ্যমে শিশুরা ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তির মতামতকে সম্মান করা শেখে। শিশুর মধ্যের গোড়ামি দূর করার মাধ্যম সঙ্গীত। অন্যান্য সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সাথে পরিচিত হয়ায় তাদের প্রতি শ্রদ্ধা তৈরি হয়। শিশুর দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত করে এবং বিশ্বব্যাপী সচেতনতার অনুভূতি তৈরি করে। ফলে আন্তঃসংযোগের সহনশীলতা, সম্মান এবং জ্ঞানের কাঠামো প্রশস্ত হয়।
তথ্যসূত্র : টাইমস অফ ইন্ডিয়া