সবার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষ হয় তার জীবনসঙ্গী। কারণ, জীবনের শেষ দিন অবধি সেই মানুষটির সঙ্গেই কাটানোর আশা থাকে। সকল সুখ-দুঃখের সমান ভাগীদার হয় বলেই তাকে ‘বেটার-হাফ’ বলে আখ্যায়িত করা হয়। তাই, প্রতিটি মানুষের জীবনে বিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
সারাজীবনে নেওয়া বড় সিদ্ধান্তগুলো মধ্যে অন্যতম হলো- বিবাহ। তাই, বিয়ে কাকে করবেন- সেটা নির্বাচন করা একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। তেমনভাবে, বিবাহিত জীবন সুখের করতে হলেও কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়। নিজেদের আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে অবশ্যই বিয়ের আগেই বিশদ আলোচনা করে নেওয়া উচিত। কারণগুলো জেনে নিন-
১. সুখী বিবাহিত জীবন: জীবন সম্পর্কে একই রকম ধারণা পোষণকারী সঙ্গী, জীবনের জটিলতা কমিয়ে আনে। জীবন ধারণের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো টাকাপয়সা। সঙ্গীর আর্থিক চাহিদা, বিয়ের পরবর্তী জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়ায়। তাই, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার আগে জেনে নিন হবু সঙ্গীর জীবনযাপনের ধরণ কেমন!
২. আর্থিক সক্ষমতা: বিয়ের পর অর্থের অভাব দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই দু’জনকেই একে অপরের আয় সম্পর্কে অবগত হতে হবে। সম্মিলিত মাসিক আয় অনুযায়ী ভবিষ্যতে সাংসারিক খরচ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
৩. আর্থিক লক্ষ্যপূরণ: দু’জনকেই নিজেদের অর্থ সম্পর্কিত লক্ষ্যগুলো সঙ্গীকে জানাতে হবে। খরচ, বিনিয়োগ, সঞ্চয়, বাজেটকরণ- ইত্যাদি ক্ষেত্রে দু’জনের লক্ষ্য ভিন্ন হতে পারে। জীবনের দীর্ঘস্থায়ী এসব সিদ্ধান্ত একত্রে নিতে হবে, যেন বিপদে-আপদে একে অপরের পাশে থাকা যায়।
৪. ঋণের বোঝা: কোনো ঋণ থাকলে সে সম্পর্কে আগে থেকেই সঙ্গীকে জানিয়ে রাখুন। আর্থিক প্রতিশ্রুতি, বিল, লোন বা ধার-দেনা থাকলে তা লুকিয়ে রাখবেন না। সম্পর্কে আবদ্ধ হওয়ার পর এসব কারণে সাংসারিক অশান্তি সৃষ্টি হতে পারে।
৫. অর্থের চাহিদা: সঙ্গীর আর্থিক চাহিদা সম্পর্কে আগেই জেনে নিন। এতে, আয় অনুযায়ী ব্যয় করার বাস্তব পরিকল্পনা করে রাখতে পারবেন। সঙ্গীর অভ্যাস, গুরুত্ব, স্বপ্ন এবং চাহিদা সবকিছুর সাথেই আপনি যুক্ত হতে চলেছেন। তাই দু’জনকেই আয় বুঝে ব্যয় করতে হবে।
৬. ব্যাংক অ্যাকাউন্ট: দু’জনের পৃথক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকা প্রয়োজন। সম্পর্কে ভারসাম্য, বিশ্বাস ও শান্তি রক্ষার জন্য পৃথক অ্যাকাউন্ট থাকাই উত্তম। এতে ঝগড়া, ভুল বোঝাবুঝি এমনকি বিচ্ছেদও এড়ানো যায়। যৌথ অ্যাকাউন্ট খোলার আগে অবশ্যই কিছুদিন অপরপক্ষের খরচের অভ্যাসের উপর নজর রাখুন।
৭. পরিবার পরিকল্পনা: বিয়ের পর দিন যত গড়াবে পরিবার বড় হতে থাকবে। এতে খরচও বাড়তে থাকবে। তাই, মানসিকভাবে প্রস্তুত হওয়ার পাশাপাশি আর্থিক অবস্থায়ও লক্ষ্য রাখতে হবে। বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে, সিংহভাগে দেখা যায়- আর্থিক কলহ থেকেই ঝগড়া শুরু হয়। তাই, পরিবার পরিকল্পনা করার আগে অবশ্যই একে অপরের সাথে সামগ্রিক আলোচনা করে রাখা দরকার।