বিষণ্ণতা একটি ভয়ংকর সমস্যা। বাইরে থেকে কোনো আঘাতের চিহ্ন না থাকলেও; ভেতরে ভেতরে একটি মানুষ অনেক বেশি দুর্বল হতে পারে, এই বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হওয়ার কারণেই। অফিশিয়াল তথ্য অনুসারে, পুরো বিশ্বে ৪৫.৭ মিলিয়ন মানুষ বিষণ্ণতায় ভোগেন। দিন দিন এই সংখ্যা বেড়েই চলেছে। যদিও ডিপ্রেশন মেয়েদের মধ্যে বেশি দেখা যায়; তবে পুরুষদের মধ্যেও অনেকে বিষণ্ণতায় ভুগতে পারেন। বরং পুরুষদের বিষণ্ণতা বা ডিপ্রেশনে ভোগার সংখ্যা, নারীদের চেয়ে বেশি। ভারতীয় মনোরোগ বিশেষজ্ঞ প্রতিক্ষা সাক্সেনা বলেছেন, পুরুষদের মধ্যে বিষণ্ণতার কয়েকটি লক্ষণ পর্যবেক্ষণ করা যেতে পারে। যেমন-
১. ঘুমাতে অসুবিধা হওয়া বা ক্লান্ত বোধ করা।
২. অস্বাভাবিক ক্ষুধা পরিবর্তনের কারণে, ওজন হ্রাস বা বৃদ্ধি।
৩. মানসিক শূন্যতা বা শারীরিকভাবে অসুস্থ বোধ করা।
৪. যৌন ইচ্ছা বা কর্মক্ষমতা হ্রাস।
৫. মাথাব্যথা।
৬. পেশী ব্যথা।
৭. পেট খারাপ করা।
৮. দৈনন্দিন কাজকর্মে আগ্রহ হারিয়ে ফেলা।
৯. কাজে মনোনিবেশ করতে বা মনোযোগ ধরে রাখতে অক্ষমতা।
পুরুষদের বিষণ্ণতায় ভোগা নিয়ে কিছু প্রথা আছে। সেগুলা ভাঙ্গার উপায় বলেছেন সিনিয়র মনোরোগ বিজ্ঞানী ডাঃ সমীর কুমার প্রহরাজ:
১. বিষণ্ণতাকে মেয়েলি রোগ ভাবা বন্ধ করতে হবে। প্রচলিত খুব সাধারণ একটি ভুল ধারণা হলো, পুরুষরা শক্তিশালী। তাই তারা বিষণ্ণ হতে পারে না।
২. অনেকে বিভিন্ন জিনগত কারণে বিষণ্ণতায় ভুগতে পারেন। এরকম ব্যক্তিরা বিভিন্ন প্রতিকূলতার মুখোমুখি হন।
৩. বিশ্বব্যাপী আত্মহত্যার চেষ্টা করার ক্ষেত্রে নারীর সংখ্যা বেশি। কিন্তু বেশি সংখ্যক পুরুষ আত্মহত্যা করে মারা যান।
৪. বিষণ্ণতায় ভোগা পুরুষরা রাগ এবং বিরক্তি বেশি প্রকাশ করে। অপরদিকে নারীরা সাধারণত দুঃখ প্রকাশ করে।
৫. অনেক পুরুষ খোলাখুলিভাবে বিষণ্ণবোধ করার কথা স্বীকার নাও করতে পারে। অতিরিক্ত কাজের চাপ, পরিবার বা কর্মক্ষেত্রের দায়িত্ব এড়ানো এবং ঝুঁকি নেওয়ার আচরণে বিষণ্ণতা প্রকাশ পায়।
৫. পুরুষদের বিষণ্ণতার ব্যাপারে সাহায্য চাওয়ার প্রবণতা কম। তাই, পরিবারের নারী সদস্যদের ব্যাপারে লক্ষ্য রাখতে হবে।
তথ্যসূত্র:নিউজ১৮