রমজান মাসে সারাদিন রোজা রাখার পর প্রথম খাবার খাওয়া হয় ইফতারে। শরবত ছাড়া ইফতার কি কল্পনা করা যায়! সারাদিন রোজা শেষে পুনরুজ্জীবিত হতে শরবত তো লাগবেই। তার উপর সারাদিনের রোজার পর ভরপেট খেয়ে একটু যদি মিষ্টান্ন হয়, তাহলে তো কথাই নেই! তবে এইসব খাবারের যে ‘মিষ্টি’ স্বাদ সৃষ্টিকারী উপাদান, তা হলো চিনি। অধিকাংশ খাবারেই মিষ্টি স্বাদ আনতে সাধারণত চিনি ব্যবহার করা হয়। তবে, চিনি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া নিয়ে থাকে নানারকম শঙ্কা। বিশেষজ্ঞরাও পরামর্শ দের চিনি খাওয়া এড়িয়ে চলার। তবে যদি একান্ত খেতেই হয়, তবে সেক্ষেত্রে সামান্য পরিমাণে খাওয়া উচিত। জাতীয় খাদ্যগ্রহণ নির্দেশিকা অনুসারে, একজন প্রাপ্তবয়ষ্ক মানুষের প্রতিদিন ২৫ গ্রাম অর্থাৎ ৫ চা চামচের বেশি চিনি খাওয়া ঠিক নয়।
চিনি শরীরে প্রবেশ করার পর তা ভেঙে গ্লুকোজে পরিণত হয়। তবে, পরিমিত পরিমাণের বেশি চিনি খাওয়া হলে তা আর বিভাজিত হতে পারে না। তাই তা কঠিন আকারেই রয়ে যায়। পরবর্তীতে এই কারণে ডায়বেটিস, ওজন বৃদ্ধি, রক্ত চলাচলে বাধা, স্মৃতিনাশ, দাঁতক্ষয়, ত্বকের সমস্যা- নানারকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। এছাড়াও ক্যান্সার, স্থূলতা, লিভার ও হার্ট সমস্যাসহ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকিতেও এর অবদান থাকতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলে, বাংলাদেশের অসংক্রামক রোগের মধ্যে শতকরা ৬৭ভাগই এসব রোগের কারণে হয়।
অনেকে মনে করে বাড়িতে থাকা চিনি কমিয়ে খাওয়াই যথেষ্ট। তবে অনেকে অজান্তেই অপরিমিত চিনি খেয়ে নিচ্ছে। ভারী খাবারের পর কোমলপানীয় খেতে ভালোই লাগে। ভাজা-পোড়ার সাথে বা বিভিন্ন খাবার রান্নার সময় ব্যবহার করা হয় সস। জন্মদিনের কেক, নাস্তায় খাওয়া কুকি ও বিস্কুট, ছোটদের জন্য কেনা চকলেট বা ক্যান্ডি- এই সব খাবার চিনিতে পরিপূর্ণ।
এইসব সমস্যা এড়াতে চিনি সমৃদ্ধ খাবার পুরোপুরি পরিত্যাগ করাই শ্রেয়। বিশেষ করে বাইরের প্রক্রিয়াজাত করা খাবার খাওয়া উচিত নয়। যেকোনো খাবার কেনার আগে উৎপাদন প্রণালিতে একবার চোথখ বুুলিয়ে নেবেন। বাড়িতে খাবার তৈরি করার ক্ষেত্রে চিনির বিকল্প হিসেবে মধু বা গুড়ের ব্যবহারের প্রতি ঝোঁক বাড়াবেন।