রমজান মাসে তেলে ভাজা খাবারের চাহিদা বেশ বেড়ে যায়। চপ, বেগুনী, পকোড়া থেকে শুরু করে কাবাব, পরোটা বা যেকোনো ধরনের ফ্রাইস; সবকিছু রান্নাতেই তেল বিশেষ ভূমিকা পালন করে। শুধু কি তাই? কালো জাম, জিলাপি, বুন্দিয়ার মতো মিষ্টি জাতীয় খাবারেও অনেক তেল ব্যবহার করা হয়।
এ কারণে রমজান বাইরে দেখা যায় দোকানের ঢল! বড় বড় রেস্তোরা ছাড়াও, ছোট অনেক অস্থায়ী দোকানেও তেলে ভাজা তৈরি হয় ব্যাপক হারে। তবে এসব খাবার ডুবো তেলে ভেজে রান্না হয়। বাড়িতে বা বাইরে যেখানেই রান্না করা হোক। রান্নার পর দেখা যায় অনেক তেল রয়ে যায়। সেই তেলগুলো না ফেলে পরবর্তীতে রান্নায় ব্যবহার হয়।
ব্যবহৃত তেল দিয়ে রান্না করাকে চিকিৎসকরা সমর্থন করেন না। গ্যাস্ট্রিক, কোষ্ঠ্যকাঠিন্য, পেট ব্যথা, পেট খারাপ, অস্বস্তি সহ নানারকম প্রাথমিক সমস্যা দেখা দেয়। তবে বার বার অধিকবার ব্যবহৃত তেলে তৈরি খাবার খাওয়া আরও গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
এইনিয়ে ভারতীয় এক প্রতিবেদনে লেখা হয়, মস্তিষ্কে পুনঃব্যবহৃত তেলের খাবারের প্রভাব পড়ে। বিজ্ঞানীর আবিষ্কার করেন, খাদ্যতালিকার সাথে স্নায়ুউত্তেজক রোগের সম্পৃক্ততা রয়েছে। দীর্ঘদিন এই ধরনের খাবার খাওয়ার ফলে নিউরোটক্সিসিটির প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।
সারাদিন রোজা রেখে রান্না করতে কষ্ট হয় বলে প্রায়ই হয়তো বাইরে থেকে খাবার কিনে আনেন। আবার অনেকে বাইরের খাবারই খেতে পছন্দ করেন। তবে দেখা যায় বাইরের খাবার প্রায়ই ব্যবহৃত তেল ব্যবহার করা হয়। সমগ্র বিশ্বেই নিউরোটক্সিনের অস্বাভাবিক হার বাড়তে দেখা যায়। বিজ্ঞানীরা খতিয়ে দেখে ধারণা করেন, তেল পুনরায় গরম করার প্রভাবের সাথে এর সম্পর্ক থাকতে পারে। একটি ইঁদুরের উপর পরীক্ষা করে দেখা যায়, বার বার ভাজা তেলে রান্না খাবার খাওয়ার ফলে ইঁদুরের অন্ত্র,মস্তিষ্ক এবং যকৃতের ভারসাম্য ব্যাঘাত ঘটে। কোলেস্টেরল বাড়ার সম্ভাবনাও বাড়তে থাকে।
এই জন্য ব্যবহৃত তেল খাওয়া কমাতে হবে। শরীরের অতিরিক্ত কোলেস্টেরল এবং চর্বিও কমে এমন খাবার প্রতিদিন খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে। ওমেগা-৩, ফ্যাটি এসিড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, প্রোবায়োটিকস সমৃদ্ধ খাবার এই সমস্যা কাটাতে সাহায্য করতে পারে। মস্তিষ্কের জন্য উপকারী খাদ্য হলো শস্য এবং বীজজাতীয় খাবার, উপকারী চর্বিযুক্ত মাছ, বাদাম, শাক-সবজি এবং ফলজাতীয় খাবার।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া