জীবনের বিভিন্ন ধাপে নারীদের শরীরে নানা রকম পরিবর্তন আসে। বয়ঃসন্ধিকাল থেকেই, কিশোরের তুলনায় কিশোরীর শরীর বেশি পরিবর্তিত হয়। নারীদের পরিবর্তন গুলো তুলনামূলকভাবে জটিলও বটে। তবে সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন আসে যখন নারীর শরীরে মধ্যেই নতুন এক জীবনের সূচনা হতে শুরু করে। প্রজননের মাধ্যমে একটি শিশুর জন্ম খুবই সাধারণ একটি ঘটনা হলেও যথেষ্ট জটিল প্রক্রিয়ায় এটি ঘটে। ব্যক্তিভেদে অনেক নারীর গর্ভকালে নানান জটিলতা দেখা যায়।
ভারতীয় চিকিৎসক মঞ্জু গুপ্তা একজন প্রসূতি এবং স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ। তিনি এক প্রতিবেদনে নারীদের প্রজনন সম্পর্কিত বিভিন্ন জটিলতার তথ্য দেন। তিনি বলেন, নারীদের গর্ভকালে কিছু সাধারণ সমস্যা লক্ষ্য করা যায়। এইসব সমস্যাগুলো সাধারণত নারীদের হরমোনের ভারসাম্যতা, বিভিন্ন সংক্রমণ, কাঠামোর অস্বাভাবিকতা, জীবন ধারার ধরণ এমনকি জেনেটিক কারণেও হতে পারে। জেনে নেওয়া যাক যেবসব কারণে গর্ভধারণে নারীরা জটিলতায় পড়েন তার বিস্তারিত-
হরমোন ভারসাম্যহীনতা: হরমোনের ব্যাঘাতের ফলে পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম (পিসিওএস), অনিয়মিত পিরিয়ড, ডিম্বাশয়ের সিস্টের মতো সমস্যা দেখা যায়। এসব কারণে গর্ভকালের উর্বরতাকে প্রভাবিত হতে পারে। এছাড়াও, অনিয়মিত মাসিক চক্র এবং অস্বাভাবিক হরমোনের মাত্রা স্বাভাবিক নয়। শরীরের অভ্যন্তরে গোপনে সমস্যার কারণে এসব হয়।
সংক্রমণ: যৌন সংক্রমণ সরাসরি শিশু গর্ভধারণ সমস্যার সাথে জড়িত। ক্ল্যামাইডিয়া, গনোরিয়ার মতো রোগের সময় মতো চিকিৎসা করা প্রয়োজন। না হলে দীর্ঘস্থায়ী পেলভিক পীড়া, দাগ পড়া এবং বন্ধ্যাত্বও হতে পারে। এমনকি মূত্রনালীর সংক্রমণ (ইউটিআই)ও প্রজনন স্বাস্থ্যক প্রভাবিত করতে পারে।
কাঠামো: এন্ডোমেট্রিওসিসের এমন এক শারীরিক জটিলতা যেখানে এন্ডোমেট্রিয়াল টিস্যু জরায়ুর বাইরে বৃদ্ধি পায়। এটি একপ্রকার কাঠামোগত অস্বাভাবিকতা। এরকম আরও সমস্যা রয়েছে যা বংশবৃদ্ধিতে বাঁধা প্রদান করে। যেমন- জরায়ু ফাইব্রয়েড, জরায়ু অঙ্গের অস্বাভাবিক ভঙ্গিতে বৃদ্ধি, নিতম্বে ব্যথা, ভারী মাসিক রক্তপাত এবং উর্বরতার অভাব।
জীবনধারা: ধূমপান, অ্যালকোহল সেবন, অপুষ্টিজনিত এবং স্লো পয়জন ধরনের খাদ্যগ্রহণ, মানসিক চাপ এবং দূষিত পরিবেশের বিষের সংস্পর্শও প্রজনন স্বাস্থ্যকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করতে পারে। এইসব কারণে মাসিক চক্র, হরমোনের মাত্রা এবং সামগ্রিক উর্বরতা ব্যাহত করতে পারে।
জিনগত সমস্যা: কিছু নারীর প্রজনন স্বাস্থ্য সমস্যায় জেনেটিক প্রভাব থাকতে পারে। যেমন- এন্ডোমেট্রিওসিস বা পিসিওএসের মতো সমস্যা পারিবারিক উৎস থেকে আসে। এসব কারণে প্রকট জিন নির্দিষ্ট প্রজনন ব্যাধিকে তরান্বিত করতে পারে।
তথ্যসুত্রঃ হিন্দুস্তান টাইমস