বেশি ক্লান্ত থাকলে শুয়েও পড়া হয় গা এলিয়ে। অফিস, ক্লাস বা প্র্যাকটিস থেকে ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফেরার পর বিছানায় বসা কিংবা শোয়াতে কোন সমস্যা নেই, যদি তার আগে বাইরের পোশাক পরিবর্তন করে নেওয়া হয়।
নিশ্চয় বাইরে থেকে বাসায় ফেরার সাথে সাথেই পরিধেয় পোশাক পরিবর্তন করা হয় না। সেই পোশাকেই বিছানায় শুয়ে পড়া এমনকি ঘুমিয়েও যাওয়া হয়। যা খুবই অস্বাস্থ্যকর একটি অভ্যাস। কারণগুলো জেনে রাখুন এবং আজ থেকেই এই অভ্যাসটি পরিহার করার চেষ্টা করুন।
এমনটা বলার কারণ হলো- যতই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার চেষ্টা করা হোক না কেন, একটা নির্দিষ্ট সময় পর শরীর তার নিজস্ব ধারায় অপরিষ্কার হবেই। কীভাবে? প্রতিটি মানুষের শরীর থেকে অনবরত মরা চামড়া ঝরে, তেল নিঃসৃত হয় এবং ঘাম বের হয়। এসকলই শারীরবৃত্তীয় স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার অংশ। সকালে থেকে সারাদিনভর যে পোশাকটি পরে থাকা হয়, সেটাতে কি পরিমাণ মরা চামড়া, তেল ও ঘামের অংশবিশেষ থাকতে পারে, সেটা সম্পর্কে ধারণা খুব কম আমাদের। শুধু এতটুকু বলা যায়, প্রতিদিন একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের শরীর থেকে ৫০০ মিলিয়ন মরা চামড়া ঝরে এবং প্রায় ১ লিটার ঘাম নিঃসৃত হয়।
বাইরে পরে থাকা পোশাকে সরাসরি বিছানায় বসার ফলে এই সকলই বিছানার সংস্পর্শে চলে আসে। গোসলের পরে আবারো বিছানায় বসার পরে যা পুনরায় শরীরের সংস্পর্শে চলে আসে। ফলে ত্বক কখনোই পুরোপুরি পরিষ্কার থাকে না এবং ত্বকের সমস্যা দেখা দিতে থাকে ঘনঘন।
টাইটেলটি পড়েই নিশ্চয় মুখ বিকৃত করে ফেলছেন। কিন্তু এটাই সত্যি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির মাইক্রোবায়োলজি এন্ড ইম্মিউনোলজি বিভাগের ডিরেক্টর ফিলিপ টিয়ের্নো বলেন, ‘যেকোন পোশাকে ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণু এক মাসের বেশি সময় পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে’।
এবার আরও ভয়ানক তথ্য জানুন। একেবারে প্রাইজ ট্যাগসহ নতুন পোশাক পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা নরোভাইরাস স্টেফ জার্মসহ বিভিন্ন ধরণের ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণুর পেয়েছে। একবারও পরা হয়নি এমন পোশাকেও ব্যাকটেরিয়া উপস্থিত থাকে বলে তারা জানায়। যে কারণে পরিধেয় পোশাকে কখনোই বাইরে থেকে ফিরে বিছানায় বসা উচিৎ নয়।
এতোক্ষণ তো শুধু নিজ শরীর ও পোশাকের ব্যাকটেরিয়ার কথা বলা হলো। কিন্তু বাইরের ধুলাবালির কথাও মনে রাখতে হবে। বাসা থেকে বের হবার সাথেই বাইরের আবহাওয়া পরিমন্ডলের ধুলা-বালির সঙ্গে হাজারো রোগজীবাণুর সংস্পর্শে আসা হয়। এছাড়া বাস কিংবা রিকশাতে কি পরিমাণ জীবাণু থাকে সেটা নিশ্চয় আর আলাদাভাবে বলতে হবে না। এই সকল কিছু স্বাস্থ্য তো বটেই ত্বকের উপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করে চর্মরোগ তৈরি করে।
আরও পড়ুন: দীর্ঘায়ু পাওয়া যাবে মাত্র দশ মিনিটেই