বিরক্তি বোধ, মানসিক চাপ, অবসন্নতা কিংবা রাগের ফলে অনেকেই মনকে ভিন্ন দিকে সরানোর উদ্দেশ্যে খাবার খেয়ে থাকেন। এতে করে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি খাবার খাওয়া হয়ে যায়।
অমনোযোগে খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে শুধু যে বেশি খাওয়া হয় তা নয়, অস্বাস্থ্যকর, পুষ্টিহীন, উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবার খাওয়া হয় বেশি। যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব তৈরি করার পাশপাশি ওজনকে বাড়িয়ে দেয় অনেকটা।
ক্ষুধা না থাকা সত্ত্বেও অনবরত খাবার খাওয়ার ফলে শরীরের চাহিদার তুলনায় বাড়তি ক্যালোরি ও ফ্যাট জমে যায়। যা পরবর্তীতে ডায়বেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হাই কোলেস্টেরল লেবেল সহ নানাবিধ শারীরিক সমস্যার সূত্রপাত ঘটায়।
এমন সমস্যা যদি আপনারও থাকে, তবে এখন থেকে সতর্ক হয়ে যাওয়া প্রয়োজন। অমনোযোগে খাবার খাওয়ার এই অভ্যাসটি কীভাবে দূর করবেন বলে ভাবছেন? আজকের ফিচারে তুলে ধরা হলো অমনোযোগে খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকার পাঁচটি পরিকল্পিত ধাপ।
রিমাইন্ডার হিসেবে চোখের সামনে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকাকে রেখে দিলে, অমনোযোগে খাবার খাওয়ার অভ্যাসটি কমে যাবে অনেকখানি। সকালে কোন খাবার কতটুকু খাওয়া যাবে, দুপুরে কোন খাবারগুলো খেতে হবে কিংবা রাতের জন্য কোন খাবারগুলো উপকারী- এই তালিকা খাবার টেবিল কিংবা নিজের ঘরের দরজাতে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। এছাড়াও কোন খাবারে কত ক্যালোরি এবং কোন জাংক ফুডটি খেলে কত ক্যালোরি গেইন হয়- এমন কোন তালিকা চোখের সামনে থাকলেও, অকারণে ও অমনোযোগে অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাসটি দূর হবে।
খাবার খাওয়ার নিজস্ব প্লেট হিসেবে নির্বাচন করুন হাফ প্লেট এবং পান করার গ্লাস হিসেবে নির্বাচন করুন তুলনামূলক বড় আকৃতির গ্লাস। হাফ প্লেট ভর্তি খাবার নিলেই মনে হবে যে অনেক খাবার নেওয়া হয়ে গেছে। এই সিগন্যালের জন্য পরিমাণে কম খাবার খেলেও মস্তিষ্ক জানান দিবে যে পেট ভরে গেছে। এছাড়াও অমনোযোগে যদি খাওয়া হয়, হাফ প্লেটে খাবার নেওয়ার ফলে পরিমাণে কম নিতে হবে।
অন্যদিকে পানি পান করার গ্লাসটি আকারে বড় হলে বেশি পানি কিংবা তরল পা করা হবে। যা পেট ভরা রাখতে কাজ করবে।
খাবারের টেবিলে বিভিন্ন ধরণের খাবার রাখুন। কিন্তু সকল খাবার হতে হবে স্বাস্থ্যকর। যেমন: চলতি সময়ের কয়েক ধরণের ফল, ডায়বেটিক কুকিজ, সুগার ফ্রি জুস প্রভৃতি। যখন কোন কাজ নেই, কিংবা মন খারাপ কিংবা অকারণে কোন খাবার খেতে ইচ্ছা করছে, তখন খাবার টেবিলের সামনে গেলে অফুরান খাবার থেকে যেকোন খাবার খেতে পারবেন। কিন্তু সকল খাবারই স্বাস্থ্যকর।
মোবাইল ফোন, ট্যাব, ল্যাপটপ কিংবা টিভিতে বুঁদ হয়ে থাকলে সম্পূর্ণ মনোযোগ স্বাভাবিকভাবে সেদিকেই থাকবে। একদিকে গ্যাজেট চালানো এবং অন্যদিকে খাবার খাওয়া- দুটো কাজ একইসাথে চালিয়ে যাওয়ার মতো ভুল কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে যথাসম্ভব। কেমন টিভিতে যখন পছন্দের সিরিজটি দেখছেন, তখন মনের ভুলে প্রয়োজনের চাইতে বেশি খাবার খাওয়া হয়েই যায়। এই অভ্যাসতিকে বাদ দিতে হবে সম্পূর্ণভাবে।
এই সমস্যাটির মূল সমাধান আসবে সতর্ক ও সাবধান হওয়ার মাধ্যমে। বহু উপায় ও পদ্ধতি মেনে চললেও, দিন শেষে যদি নিজের থেকে সতর্কতা অবলম্বন করা না হয় তবে ফলাফল খুব একটা ইতিবাচক হবে না মোটেও। যে কারণে নিজেকে ব্যস্ত রাখার ও মনযোগী করার চেষ্টা করতে হবে সবার আগে। মনোযোগ শুধু খাবার খাওয়ার সময় নয়, সকল ক্ষেত্রেই প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: তিনগুণ দ্রুততায় ওজন কমবে সহজ ‘একটি’ অভ্যাসে
আরও পড়ুন: গাড়িতে অবস্থানকালে যে কাজগুলো করা বারণ