অফিসের নিত্যদিনের কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ও সুষ্ঠুভাবে সকল কাজ সম্পন্ন করা জন্যে মিটিং আবশ্যক। শুধু তাই নয়। একটি কর্মক্ষেত্রে একসাথে কাজ করেন শত থেকে হাজারজন মানুষ। তাদের মাঝে সমন্বয় ঘটানোর জন্যেও নিয়মিত বিভিন্ন বিষয়ে মিটিং করা দারুণ জরুরি।
কিন্তু জরুরি এই মিটিংগুলো কতটা ফলপ্রসূ হয়, সেটা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। স্যালারি ডট কমের করা একটি সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ৪৭ শতাংশ চাকুরীজীবী মনে করেন কর্মক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশী সময় নষ্ট হয় মিটিং-এ। অথচ হবার কথা ছিল ঠিক তার উল্টোটাই। এমনটা হবার মূল কারণ, মিটিংগুলো প্রচন্ড বিরক্তিকর হওয়া।
মিটিং সাইন্স রিসার্চার ও ‘দ্যা সারপ্রাইজিং সায়েন্স অব মিটিংস’ বইটির লেখক স্টিভেন জি রোজেলবার্গ দুই দশকের বেশি সময় ধরে গবেষণা করে লেখা বইটিতে তুলে ধরেছেন- কীভাবে বিরক্তিকর, সময় নষ্টকারী মিটিংগুলোকে আকর্ষণীয় ও কার্যকর করে তোলা সম্ভব হবে।
মিটিং আকর্ষণীয় করার জন্য সচেতন হতে হবে নিজেকেই। সেজন্য মিটিং বিষয়গুলোতে কথা বলতে হবে, জানাতে হবে নিজের মতামত। রোজেলবার্গের মতে, মিটিংগুলো বোরিং হবার অন্যতম কারণ- একজনেরই একটানা কথা বলে যাওয়া। মিটিং-এ অংশগ্রহণকারীরা যতটা সাড়া দেবেন, কথা বলবেন মিটিং ততটাই আকর্ষণীয় ও প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে।
ঘন্টার পর ঘন্টার মিটিং কেউই পছন্দ করে না। আর সেটা যদি হয় খুব ছোট বা অদরকারি বিষয়ে, তাহলে তো কথাই নেই। এই মিটিং গুলোর পিছনে প্রতিটি অফিসের প্রচুর পরিমাণ অর্থ অপচয় হয়। তাই মিটিং ডাকার আগে অবশ্যই এর প্রয়োজনীয়তা বুঝতে হবে। এতে করে সময় ও অর্থ- উভয়ের অপচয় রোধ হবে বলে মনে করেন রোজেলবার্গ। তার মতে, মিটিং তখনই আকর্ষনীয় হবে যখন সেটা হবে কোন তথ্য জানার জন্য এবং সকলে সেই বিষয়ে আগ্রহের সাথে প্রশ্ন করবে।
রোজেলবার্গের মতে প্রতিটা মানুষই চাপের মুখে ভালো কাজ করে। তাই তাদের থেকে ভালো ফলাফল পেতে হলে চাপ দিয়ে কাজ করাতে হবে। আর এজন্যই মিটিং-এর সময় কমিয়ে কাজের চাপ বাড়াতে হবে। মিটিং মানেই যে তার ব্যাপ্তিকাল কমপক্ষে ১ ঘণ্টা হতে হবে, এই ধারণা ভুলে যেতে হবে।
টেকনোলোজির যুগে অনলাইন মিটিং হরহামেশাই হচ্ছে। সেক্ষেত্রে মিটিং-এ আঞ্চলিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে পরিচিত হতে হবে। তাদের কথা বলার সুযোগ দিয়ে তাদের পরিচয় জানলে এবং মাঝে মাঝে তাদের সম্বোধন করলে অনলাইন মিটিংগুলো আরো আকর্ষণীয় হতে পারে বলে মনে করেন রোজেলবার্গ।
অনলাইন মার্কেট প্লেস ‘অ্যামাজন’ তাদের প্রতিটি মিটিং এ সদস্য সংখ্যা নির্ধারণের ক্ষেত্রে একটি নিয়ম অনুসরণ করে। ‘টু পিজ্জা রুল’ নামের এই নিয়মটির মানে হচ্ছে, একটি মিটিং-এ ততজন মানুষ থাকবে যতজন মিলে দুইটি পিজ্জা ভালোভাবে খেতে পারবে। তাই মিটিং এ লোক কম থাকলে তা বেশী ফলপ্রসূ হয়।
আরো পড়ুন: কর্মোদ্দীপ্ত থাকতে সাহায্য করবে এই নিয়মগুলো!
আরো পড়ুন: ‘প্রমোশন’ হবে নতুন বছরে!