যার ফলে নিজেরাও অসুস্থ হয়ে পড়ছি নিজেদের অজান্তেই। ঘরের রঙ থেকে জাইলিন (Xylene), কীটনাশক স্প্রে, আসবাবের ওয়াক্স থেকে বেনজিন (Benzene), পরিষ্কারক উপাদান থেকে ট্রাইক্লোরোইথিলিন (Trichoroethylene) ও এয়ার ফ্রেশনার থেকে ফরমালডিহাইড (Formaldehyde) মিশে যাচ্ছে আমাদের ঘরের বায়ুতে।
এই সকল উপাদানের উপস্থিতি থেকেই দেখা দেয় মাথাব্যথা, গলাব্যথা, শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যা, অ্যালার্জির প্রাদুর্ভাবসহ নানাবিধ শারীরিক উপসর্গ।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইনভারোমেন্টাল প্রটেকশন অ্যাজেন্সির (EPA) এর তথ্য মতে, আমাদের বাসাবাড়ির আবহাওয়া বাইরের আবহাওয়ার তুলনায় পাঁচ গুণ পর্যন্ত অধিক দূষিত হতে পারে।
আতঙ্কিত হবার মতো তথ্য হলেও, সচেতনতা ও সঠিক পদক্ষেপ এই সমস্যাটি কমাতে পারে অনেকখানি। নাসা ক্লিন এয়ার স্টাডি (Nasa Clean Air Study) ঘরের ভেতরের বায়ুকে পরিশোধিত করার উদ্দেশ্যে সহজ ও কার্যকর কিছু উপায়ের খোঁজ করে বেশ কিছু হাউজ প্ল্যান্ট তথা ঘরোয়া গাছের নাম জানিয়েছে। যা ঘরের টক্সিন উপাদানের মাত্রা কমাতে ও ঘরের বায়ুকে পরিশোধিত করতে কাজ করবে।
বায়ু থেকে ফরমালডিহাইড ও কার্বন মনোঅক্সাইড দূর করতে কাজ করে। নাসার গবেষণার তথ্যানুসারে চব্বিশ ঘণ্টার মাঝে বায়ুতে থাকা ফরমালডিহাইড ও কার্বন মনোঅক্সাইদের প্রায় ৯৫ শতাংশই দূর করে ফেলে স্পাইডার প্ল্যান্ট।
মানিপ্ল্যান্ট তথা ডেভিল আইভিকে চেনেন না এমন মানুষ নেই বললেই চলে। ঘরে অন্যান্য গাছ না থাকলেও, মানিপ্ল্যান্টের এক-দুইটি পাতা পাওয়া যাবে প্রায় সব বাসাতেই। সুপরিচিত ও উপকারী এই গাছ ঘরোয়া বায়ু থেকে ফরমালডিহাইড, বেনজিন ও জাইলিন দূরীকরণে কাজ করে।
জারবেরা তথা বারবেরটন ডেইজি (Barberton Daisy) ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির সঙ্গে ঘরের বায়ুর অবস্থাতেও উন্নতি আনে। সারা বছরে যেকোন সময়ে ঘরোয়া পরিবেশেই এই গাছ ফুল দেবে। বায়ু থেকে ফরমালডিহাইড, বেনজিন ও জাইলিন এর মাত্রা কমিয়ে ফেলতে এবং বায়ুকে পরিশোধিত করতে এই গাছ খুব দারুণ কাজ করে।
মানি প্ল্যান্টের মতোই ভ্যারিগেইটেড (Variegated) স্ন্যাক প্ল্যান্ট বেশ সুপরিচিত ঘরোয়া গাছ। তবে এই গাছের বিকাশ ও বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন তুলনামূলক বেশি আর্দ্রতাপূর্ণ স্থান। তাই ওয়াশরুমে এই গাছগুলো ভালো থাকবে। ফেসিয়াল টিস্যু, টয়লেট টিস্যু, হেয়ার কেয়ার প্রডাক্ট থেকে নির্গত হওয়া ফরমালডিহাইড দূর করতে গাছগুলো উপকারী।
চন্দ্রমল্লিকা তথা ফ্লোরিস্টস ক্রিসান্থিমাম একেবারেই ঘরোয়া গাছ না হলেও, ঘরের সাথে লাগোয়া বারান্দা (হালকা আলো ও পর্যাপ্ত বাতাসযুক্ত) এবং ঘরের সামনের অংশে বড় টবে এই গাছ রাখা যাবে। যা ঘরের বাইরের পরিবেশের সঙ্গে, ঘরের ভেতরের বাতাসকেও পরিশোধিত করতে কাজ করবে। নাসা জানাচ্ছে, ঘরের ভেতরের বাতাসে ঘুরে বেড়ানো ক্ষতিকর পদার্থের মাত্রা কমিয়ে ফেলতে এই গাছ খুব ভালো কাজ করে।
আরও পড়ুন: ঘরের পরিবেশ থাকুক দূষণমুক্ত