অলসতার কারণেই হাতছাড়া হয়ে যায় বহু কাজ, পিছিয়ে যায় ভালো সুযোগ। মুখে যতই বলা হোক না কেন, অলসতাকে পাশ কাটানোর জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন নিজেকে সেইভাবে প্রস্তুত করা।
কাজের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা ও মনোযোগ ধরে রাখার অন্তরায় হিসেবেও অলসতা এসে হাজির হয় আকস্মিকভাবে। নিশ্চিতভাবেই একজনের জীবনে সবচেয়ে বড় দুর্বলতার বিষয় হিসেবে দেখা দেয় এই অলসতা। জীবন থেকে অলসতা সরিয়ে দিতে চাইলে প্রয়োজন ধৈর্য ও পরিশ্রম। একদিনেই অলসতার মতো বিষয়কে সম্পূর্ণভাবে বিদায় জানানো সম্ভব নয়। অলসতাকে ঝেড়ে ফেলতে যে নিয়মগুলো মেনে চলা প্রয়োজন, আজকের ফিচারে তা তুলে ধরা হলো।
খুবই সূক্ষ্মভাবে নিজের চারপাশের পরিবেশ পরিস্থিতি মানসিক অবস্থার উপর প্রভাব বিস্তার করে। নিজের চারপাশের অগোছালো ও এলোমেলো অবস্থা স্বাভাবিকভাবেই মনকে কাজ করার প্রতি বিতৃষ্ণা তৈরি করে দেয়। তাই অলসতা কাটাতে প্রথমেই নিজের চারপাশের সবকিছুকে গুছিয়ে নিতে হবে। গোছানো পরিবেশে কাজের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়।
অলসতা ঝেড়ে কাজে মনোনিবেশ করার শুরুটাই হলো সবচেয়ে কঠিন। নিজের মনের ও ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ করার বিষয়টি স্বাভাবিকভাবেই বেশ কঠিন হয়ে ধরা দিবে। সে জন্যেই ছোট ছোট পদক্ষেতে এগুতে হবে। হয়তো অলসতার জন্যে সকালে শরীরচর্চা করা হয় না আপনার। তাহলে আজ থেকেই শরীরচর্চা করার জন্য প্রস্তুতি নিন। আধা ঘণ্টা কিংবা পনের মিনিটও নয়, মাত্র তিন মিনিট সময় বরাদ্দ রাখুন শরীরচর্চার জন্য। তিন মিনিট সময়ের জন্য নিজেকে কয়েকদিন প্রস্তুত করতে পারলে, পরবর্তীতে নিজ থেকেই শরীরচর্চা করার জন্য তাগিদ অনুভূত হবে।
অলসতাকে পেছনে ফেলার জন্য কাজের প্রতি পরিপূর্ণভাবে মনোনিবেশ করার চাইতে ভালো কোন বুদ্ধি হতেই পারে না। কাজের ভেতর নিমজ্জিত হতে পারলে খুব সহজেই বাড়তি অলসতাকে ঝেড়ে ফেলা সম্ভব হয়। তবে এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, কাজের মাঝে দশ-বিশ মিনিট সময়ের ছোট ছোট বিরতি নিতে হবে। এই বিরতিগুলো কাজের গতি বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করে।
হুট করে যে কোন একটি কাজ শুরু না করে তালিকা তৈরি করে গুরুত্ব অনুযায়ি কাজ শুরু করলে সবচেয়ে ভালো হয়। যে কোন একটি কাজ শুরু করলে দেখা যাবে সে কাজটি হয়তো সে সময়ের জন্য প্রয়োজনীয় ছিল না। ফলে অহেতুক কষ্টের ফলাফল শূন্য হলে কাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে তালিকা তৈরি করে গুরুত্ব অনুযায়ি কাজ শুরু করলে কাজের প্রতি আগ্রহ তৈরির হবে। যা অলসতাকে পেছনে ফেলে দিতে কাজ করবে।
যে কাজটি আজকেই করে ফেলছেন, তার উপকারিতা বা সুবিধাটুকু কি হতে পারে ভাবুন তো। অথবা আলসেমিকে বিদায় জানিয়ে যে পরিশ্রমটুকু আপনি আজকে করছেন, তার জন্য কি ভালো দিকের মুখোমুখি হতে হবে আপনাকে সে সম্পর্কেও একটু ভাবার চেষ্টা করুন। অবশ্যই পরিশ্রমের বিপরতে প্রাপ্তিতে ভালো কিছুই অপেক্ষা করে। সেটা যখন আপনি নিজ থেকে বুঝতে পারবেন ও কল্পনা করতে পারবেন, কাজ করার বিষয়টি তখন আপনার জন্য বেশ অনেকটা সহজ হয়ে উঠবে।
একদম প্রথম পয়েন্টে বলা হয়েছিল, নিজের চারপাশ গুছিয়ে নেওয়ার কথা। এখানে বলা হচ্ছে নিজেকে সুন্দর পোশাকে সজ্জিত করার কথা। এর পেছনে যুক্তিযুক্ত কারণ আছে অবশ্যই। আপনি যখন খুব ফিটফাট ও কেতাদুরস্ত থাকবেন, আপনার মাঝে কাজ করার প্রবণতা তৈরি হবে। কিন্তু আপনি যখন খুবই অগোছালো পোশাকে থাকবেন, আপনার মনের উপরেও তা নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করবে, যা থেকে দেখা দেবে আলস্য। তাই নিজের চারপাশের পাশাপাশি নিজেকেও টিপটপ রাখতে হবে সবসময়।
আরও পড়ুন: যে অভ্যাসগুলো কমাবে বয়স বৃদ্ধির হার
আরও পড়ুন: শিখতে হবে ‘না’ বলা!