সন্তান হতাশাগ্রস্থ হবে কিনা, তার সঠিকভাবে মানসিক বিকাশ হবে কিনা, বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়া সম্পর্কের সাথে সে মানিয়ে নিতে পারবে কিনা! এমন শতেক কারণের মাঝে দুশ্চিন্তার পাল্লা আরও খানিকটা ভারি করতে এবারে গবেষকেরা জানালো চমকে দেওয়ার মতো এক তথ্য।
যে সকল শিশুর বাবা-মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে তাদের ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে, যাদের বাবা-মা একসাথে আছে তাদের তুলনায় অনেক বেশি। বিশেষ করে, ছয় বছর বয়সের আগেই যে সকল সন্তানের বাবা-মায়ের মাঝে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে, তাদের মাঝে ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার প্রবণতা দেখা গিয়েছে সবচেয়ে বেশি।
লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্সের গবেষকেরা ২০০০ সাল থেকে ২০০২ সালের মাঝে জন্ম নেওয়া ৭,৫৭৪ জন শিশুর তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখেন। তথ্যের ফলাফল দেখে গবেষকেরা বিবাহ বিচ্ছেদের মধ্যে দিয়ে যাওয়া পরিবারের সন্তানদের বাবা-মাদের, সন্তানদের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিষয়ে সতর্ক করতে ডেকে পাঠান।
গবেষণাপত্রে গবেষকেরা বেশ কয়েকটি কারণ তুলে ধরেছে। যে সকল কারণে ধনী-গরীব নির্বিশেষে বিবাহ বিচ্ছেদের মধ্য দিয়ে যাওয়া পরিবারের সন্তানদের ওজন বেড়ে যায়। কারণগুলো হলো-
১. আলাদা সংসারের ফলে ফ্রেশ ফল ও সবজি কেনার টাকায় ঘাটতি।
২. কর্মক্ষেত্রে বাবা-মায়ের অধিক সময় ব্যয়ের ফলে পুষ্টিকর খাবার প্রস্তুত করার জন্য সময়ের স্বল্পতা।
৩. খেলাধুলার মতো এক্সট্রা-কারিকুলার অ্যাকটিভিটিসের জন্য আর্থিক স্বল্পতা।
৪. স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার জন্য বাবা-মায়ের মধ্যে সময়ের অভাব।
৫. আবেগজনিত সমস্যার কারণে সন্তানকে অত্যাধিক খাবার খাওয়ানো এবং সন্তানদের চিনিযুক্ত ও ফ্যাটযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া।
শিশুদের সম্পর্কে এই সকল তথ্যাদি সংগ্রহ করা হয়েছে ‘ইউকে মিলেনিয়াম কোহর্ট স্টাডি’ থেকে।
জার্নাল ডেমোগ্রাফিতে প্রকাশিত হওয়া এই গবেষণাটির তথ্য জানায়, বাবা-মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদের ২৪ মাস (দুই বছর) পর তাদের সন্তানেরা ওজন বেড়ে যায়, সে সকল সন্তানদের তুলনায় যাদের বাবা-মা একসাথে আছে।
পরবর্তিতে আরও দেখা গেছে, বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের ৩৬ মাস পর সে সকল সন্তানেরা ওবিস হয়ে যায়।
গবেষকেরা পরামর্শ দেন গবেষণার কার্যক্রমটি চালিয়ে যাওয়ার জন্য। কারণ সময়ের সাথে সাথে বিচ্ছেদ হওয়া পরিবারের সন্তানদের ওজন বাড়তে থাকে এবং এই গবেষণাটি বন্ধ করে দেওয়া হয় যখন সন্তানদের বয়স ১১ বছর হয়।
আরও পড়ুন: আগ্রহ নিয়ে শিশুও খাবে সবজি!