ফলে নারীদের ক্যানসারজনিত কারণে মৃত্যুর হারের মাঝে অধিকাংশ স্থান দখল করে থাকে স্তন ক্যানসার বা ব্রেস্ট ক্যানসার।
গবেষণার তথ্য সুপারিশ করে ৫-১০ শতাংশ ক্ষেত্রে স্তন ক্যানসার দেখা দেওয়ার পেছনে থাকে বংশগত ও জিনগত কারণ। বাদবাকি ক্ষেত্রে এই ক্যানসার দেখা দেওয়ার পেছনে নির্ভর করে জীবনযাপনের ধরণ, খাদ্যাভ্যাস ও নিত্যদিনের অভ্যাস সমূহ।
এ কারণে স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে সঠিক নিয়ম মেনে চলা খুবই প্রয়োজন ও গুরুত্বপূর্ণ। এমন জরুরী সাত সচেতনতামূলক বিষয় আজকের ফিচারে তুলে ধরা হলো।
বাড়তি ওজন স্বাস্থ্যের জন্য কখনোই ভালো কিছু নয়। ডায়বেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও ওবেসিটি তো বটেই, অতিরিক্ত ওজনের দরুন ক্যানসারের মতো ভয়াল রোগও দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে নারীদের মেনোপজ পরবর্তী সময়ে ব্রেস্ট ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যায় বাড়তি ওজনের ফলে।
অলসতাজনিত কারণে কিংবা সময়ের অভাবে শারীরিক কার্যক্রম অথবা শরীরচর্চার অভ্যাসটি অনেকেই গড়ে তোলেন না। নিয়ম মেনে শরীরচর্চা যদি করা নাও হয়, দৈনিক এমন কোন শারীরিক কার্যক্রম করতে হবে, যা শরীরে ঘাম তৈরি করবে। তিরিশ- এক ঘণ্টা সময়ের শারীরিক কার্যক্রমও স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে কাজ করবে।
স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস সুস্বাস্থ্যের পাশাপাশি স্তন ক্যানসার প্রতিরোধেও কাজ করবে। বিশেষত রঙিন সবজি তথা গাজর, বিট, ব্রকলি প্রভৃতি এবং আপেল, কমলালেবু, বেদানা, স্ট্রবেরি, ড্রাগন ফ্রুট, টমেটোর মতো ফলগুলো সামগ্রিকভাবে শারীরিক সুস্থতা প্রদান করবে।
বহু স্বাস্থ্য উপকারিতার মজাদার ও সুস্বাদু এই খাবারটি স্তন ক্যানসার প্রতিরোধেও কাজ করবে। গবেষণা জানাচ্ছে, ডার্ক চকলেটে ক্যানসারের বিপক্ষে কাজ করার মতো উপাদান রয়েছে, যা ক্যানসারকে দূরে রাখে। সেক্ষেত্রে নিয়মিত ডার্ক চকলেট না খেলেও, প্রতি সপ্তাহে ১০০ গ্রাম পরিমাণ ডার্ক চকলেট খেলেও উপকার পাওয়া যাবে।
সকালে দ্রুত ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাসটি কষ্টকর হলেও, সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠার ফলে স্তন ক্যানসারের সম্ভাবনা কমে যাত অনেকখানি। ৭-৮ ঘণ্টার ভালো ঘুম শেষে, ঘুম থেকে উঠতে হবে একদম কাক ডাকা ভোরে। তবেই মিলবে এই উপকারিতা, এমনটাই জানাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাজ্যের ব্রেস্ট ক্যানসার অ্যাসোসিয়েশন কনসরটিয়াম।
ঘরে বসে নিজেই নিজের স্তন পরীক্ষা করতে হবে। গোসলের সময় খুব সহজেই স্তন ভালোভাবে পরীক্ষা করে নেওয়া যায়। বগলের নিচের অংশ থেকে শুরু করে স্তন ও স্তনের আশেপাশের অংশে শক্ত চাকা, ছোট গুটির মতো দলা, স্তনের বোটার চারপাশের ত্বকে গুঁড়ি গুঁড়ি অংশ, স্তনে ব্যথাভাব, চুলকানির প্রাদুর্ভাব, বোটার রঙ আকস্মিকভাবে পরিবর্তন হওয়া, বোটা থেকে সাদা তরল অথবা রক্ত নিঃসৃত হওয়ার মতো লক্ষণগুলো দেখা দিলেই স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের দ্বারস্থ হতে হবে।
নিয়মিত স্তন পরীক্ষার ক্ষেত্রে কোন সমস্যা দেখা দিলে একদম প্রাথমিক ধাপেই শনাক্ত করা সম্ভব হয়। এতে করে সঠিক চিকিৎসায় দ্রুত সেরে ওঠা যায়।
যে মায়েদের নবজাতক শিশু আছে, তাদের স্তন্যপান করানোর প্রতি জোর দিতে হবে। মাতৃদুগ্ধ একদিক থেকে শিশুর জন্য যেমন উপকারী, ঠিক তেমনিভাবে স্তন্যপান মায়ের জন্যেও উপকারী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হরমোনাল ফ্যাক্টর ইন ব্রেস্ট ক্যানসার এর গবেষণালব্ধ ফলাফল থেকে জানিয়েছে, ১২ মাস স্তন্যপানের ফলে ৪.৮ শতাংশ স্তন ক্যানসারের সম্ভাবনা কমে যায়।
আরও পড়ুন: নো ব্রা ডে: ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে জরুরি সচেতনতা
আরও পড়ুন: পিরিওডকালীন সময়ে হাঁটাহাঁটি বন্ধ থাকবে?