নিজের চিন্তা-ভাবনা, মনোভাব ও জীবনের ঘটনাপ্রবাহকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করার উপর নির্ভরশীল নিজের ভালো থাকা। সে সূত্রানুসারে এখন এটাও বলা যায়, জীবনের প্রতি মনোভাব ও দৃষ্টিভঙ্গীর উপর নির্ভর করে নিজের আয়ুও!
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণাপ্রাপ্ত তথ্য জানাচ্ছে- জীবনের প্রতি যারা ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন তাদের আয়ু, যারা নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করে থাকেন তাদের তুলনায় বেশি হয়। ইতিবাচক মনোভাব সম্পন্ন মানুষের আয়ু ৮৫ বছর বা তার বেশি হয়ে থাকে সাধারণত।
এমন তথ্যের পেছনে যে থিওরটি দাঁড় করানো হয়েছে তা হলো, ইতিবাচক মনোভাব সম্পন্ন মানুষেরা তাদের অনুভূতি বা ইমোশনকে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ফলে পারিপার্শ্বিক কারণে তাদের উপর মানসিক চাপ কম পড়ে।
এই গবেষণাটি করার জন্য দুইটি ভিন্ন দলের ৭০,০০০ নারী ও ১৫০০ জন পুরুষের উপর পরীক্ষা চালানো হয়। তাদের স্বাস্থ্য, খাদ্যাভ্যাস, মদ্যপানের অভ্যাস, ধূমপানের অভ্যাস, শরীরচর্চার রুটিন ও ইতিবাচক মনোভাবের মাত্রার উপর নির্ভর করে বের করা হয় তথ্য।
আয়ুর উপর নির্ভর করে বহু কিছু। বড় ধরনের অসুখের ফলে মৃত্যু হতে পারে, থাকতে পারে অন্যান্য কারণও। তবে গবেষক জানাচ্ছেন, জীবনের প্রতি ইতিবাচক মনোভাবের অভ্যাসের দরুন বয়স বৃদ্ধি হয় স্বাস্থ্যকরভাবে। যেটাকে বলা হচ্ছে ‘পজিটিভ সাইকোসোশ্যাল ফ্যাক্টর’।
কেন ইতিবাচক মনোভাব আয়ু বৃদ্ধিতে অবদান রাখে? এ সংক্রান্ত গবেষণায় কাজ করা গবেষক ও বস্টন ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর লিউইনা লি বলেন, ‘আমাদের গবেষণার প্রাপ্ত তথ্য থেকে আংশিকভাবে যা জানা গেছে, ভালো ও ইতিবাচক মনোভাব বিষণ্ণতা কমাতে কাজ করে, ফলে মানসিক চাপ অনেকটা কমে যায়। প্রাথমিকভাবে গবেষণার তথ্য থেকে বলা যায়, ইতিবাচক মনোভাব সম্পন্ন মানুষদের মাঝে আত্মবিশ্বাস থাকে নিজেদের লক্ষ্যে পৌঁছানোর। তারা সমস্যা সমাধান করার প্রতি বেশি নজর দেয় এবং মানসিক চাপকে ভালোভাবে সামলাতে পারে।’
নেতিবাচক মনোভাব সম্পন্ন মানুষদের জন্য গবেষকেরা পরামর্শ দেন, ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কাল্পনিক ইতিবাচক বিষয় চিন্তা করা ও ভাবা ইতিবাচক মনোভাব তৈরির ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে।
আরও পড়ুন: আবেগ ও অনুভূতিকে রাখতে হবে নিয়ন্ত্রণে