কোন খাবার খেলে ওজন বাড়বে না ও ওজন নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হবে না সেটা বুঝে ওঠা সম্ভব হয় না। একেবারে না খেয়ে থাকা সম্ভব নয়। স্বাস্থ্যকর, স্বল্প ক্যালোরিযুক্ত ও উপকারী খাদ্য উপাদান বেছে নেওয়া তাই খুবই জরুরি।
আজকের ফিচারে এমন কয়েকটি খাবারের সাথে আপনাদের পরিচিত করিয়ে দেওয়া হবে, যা ওজন বৃদ্ধি তো করবেই না, বরং দৈনিক ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণ কমিয়ে আনতেও সাহায্য করবে।
এমন খাবারের তালিকার প্রথম দিকেই থাকবে ডিম। শুধু ডিমের সাদা অংশ বা কুসুম নয়, সম্পূর্ণ ডিমই খাওয়া যাবে নিশ্চিন্তে। গবেষণা জানাচ্ছে, ডিম খাওয়ার ফলে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের (LDL) মাত্রা বৃদ্ধি পায় না। এছাড়া ডিমের প্রোটিন ও অ্যামিনো অ্যাসিড সুস্বাস্থ্য ধরে রাখতে প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ। কার্বোহাইড্রেটের চাইতে ডিমের প্রোটিন পেট ভরা রাখতে কাজ করে বিধায়, সকালের নাশতায় একটি ডিম ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
পর্যাপ্ত পরিমাণ জলীয় অংশ ও খাদ্যআঁশ সমৃদ্ধ ওটস খুবই চমৎকার একটি খাবার। যদিও ওটসের নিজস্ব কোন স্বাদ নেই ও এটা খেতে প্রায় বিস্বাদ বলে অনেকেই খেতে পছন্দ করেন না। কিন্তু ফল, ড্রাই ফ্রুটস, বাদাম, মধু ও দুধের সাথে মিশিয়ে খেতে দারুণ লাগবে। বেটা গ্লুকেন ও অদ্রবণীয় খাদ্য আঁশ সমৃদ্ধ ওটস খেতে পারবেন ইচ্ছামতো অথচ ওজন নিয়ে একেবারেই ভাবতে হবে না।
ক্ষুধা দূর করার জন্য স্যুপকে উপযুক্ত খাবার হিসেবে দেখেন না অনেকেই। কিন্তু স্যুপও হতে পারে ক্ষুধা নিবারণের জন্য পারফেক্ট একটি খাবার। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে সলিড খাবারের চাইতে স্যুপ ক্ষুধা দূর করতে বেশি কার্যকরি। বিভিন্ন ধরনের সবজি ও মুরগির মাংসে তৈরি ব্রথ ঘরানার স্যুপ একইসাথে স্বল্প ক্যালোরি, সুস্বাদু, স্বাস্থ্যকর ও ক্ষুধা দূর করতে কাজ করবে। বিশেষ করে যারা বাড়তি ওজন কমাতে চেষ্টা করছেন, তাদের জন্য এমন স্যুপ দারুণ উপকারী।
অন্যান্য ফলের মাঝে আপেল থেকে সবচেয়ে বেশি পেকটিন নামক দ্রবণীয় আঁশ পাওয়া যাবে। যা পাকস্থলিস্থ খাদ্য পরিপাকে কাজ করে। ৮৫ শতাংশ জলীয় অংশ সমৃদ্ধ ও স্বল্প ক্যালোরি সমৃদ্ধ আপেল হতে পারে সবচেয়ে দারুণ একটি খাদ্য উপাদান। বিশেষত যারা ওজন কমাতে চেষ্টা করছেন, সকাল ও বিকালের নাশতায় একটি আপেল একইসাথে ক্ষুধাভাবকে দূর করবে ও ওজনকে নিয়ন্ত্রণ করবে।
বিভিন্ন ধরনের মাংসের ভিড়ে স্বাস্থ্যকর প্রাণিজ প্রোটিন গ্রহণ করতে চাইলে মাছ সবচেয়ে উৎকৃষ্ট খাদ্য উপাদান। উচ্চমাত্রার প্রোটিন ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ মাছ শারীরিক সুস্থতার নানান চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে কাজ করবে। তবে মাছের পাশাপাশি লিন মিট তথা মুরগির মাংসের থেকেও পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রাণিজ প্রোটিন পাওয়া যাবে।
অলস সময়ে, বই পড়া কিংবা সিরিজ দেখার সঙ্গী হিসেবে চোখ বন্ধ করে রাখতে পারেন খই বা পপকর্ন। পটেট চিপস বা অন্যান্য তেলেভাজা খাবারের চাইতে খই অনেক স্বাস্থ্যকর একটি খাবার। বিশেষত খইয়ের ভেতরে পর্যাপ্ত পরিমাণ বাতাস থাকায়, অল্প খইতেই ক্ষুধাভাব দূর হয়ে যায়। বাইরের প্যাকেটজাত খই না কিনে ঘরে অল্প তেল ও লবণে প্রস্তুত করা খই হবে স্বাস্থ্যকর। চাইলে খইয়ের সাথে আদা ও রসুনের পাউডার এবং অ্যাভোকাডো অয়েল যোগ করা যেতে পারে স্বাদ বাড়ানোর জন্য।
আরও পড়ুন: জানা-অজানায় অপরাজিতা ফুলের চা!
আরও পড়ুন: খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করবে যে পাঁচ খাবার