পুরো রোজার মাস জুড়েই ইফতারিতে থাকে বিভিন্ন ধরণের মুখরোচক খাবারের আয়োজন। সারাদিন অভুক্ত থাকার পর প্রিয় ও পছন্দের খাবারগুলো ইফতারিতে না থাকলে চলে নাকি! প্রচলিত আলুর চপ, বেগুনী, বড়া ও ছোলা ছাড়া অনেকের তো ইফতারিই হয় না।
বহু আগে থেকেই ইফতারিতে এই সকল খাবার খাওয়ার চল চলে আসছে। যে কারণে বেশিরভাগ বাসায় ইফতারিতে থাকে তেলে ভাজা এই পদগুলো। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, খালি পেটে এই খাবারগুলো খাওয়া কতটা নিরাপদ?
উত্তরটাও অনেকের জানা। স্বাভাবিক অবস্থাতেই তেলে ভাজা খাবার এড়িয়ে চলার জন্য বলা হয়ে থাকে। সেখানে একদম খালি পেটে এমন ভাজাপোড়া খাবার শরীরে নেতিবাচক প্রভাবের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এখন প্রশ্ন হতে পারে- কী খাওয়া যাবে ইফতারিতে, অথবা কেমন খাবার খাওয়া উচিৎ ইফতারিতে?
আজকের ফিচারে তুলে ধরা হলো, কেমন ধরণের খাবার রাখা উচিৎ প্রতিদিনের ইফতারিতে। যা একইসাথে হবে পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত।
১. ইফতারির টেবিলে খেজুর রাখতে একদম ভোলা যাবে না। প্রতিদিনের ইফতারি শুরু করুন দুটি খেজুর দিয়ে। রোজা রাখার ফলে মাথাব্যথা, মাথাঘোরা ভাব, রক্তে চিনি স্বল্পতা অথবা নিম্নরক্ত চাপের সমস্যা দেখা দিতে পারে। খেজুর খাওয়ার ফলে শরীরে শক্তি পাওয়া যাবে এবং ভালো বোধ হবে।
২. পানি পানের কথা বলাই বাহুল্য। তবে একবারে বেশি পরিমাণে পানি পান করা উচিৎ নয়। পানি পানের সাথে ফলের রস ও শরবত পান করা যেতে পারে। যা শরীরের পানিশূন্যতা দূর করবে।
৩. খেজুর ও পানির পর এবার আসা যাক মূল খাবারের দিকে। ভাজাপোড়া সকল ধরণের খাবারের কথা ভুলে যান। তার পরিবর্তে তৈরি করুন স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিতে ভরপুর স্যুপ। সেটা হতে পারে চিকেন কিংবা ভেজিটেবল স্যুপ। ইফতারিতে এক বাটি গরম স্যুপ শুধু শরীরকে চাঙ্গাই করবে না, সারাদিনের পুষ্টির চাহিদাও পূরণ করবে।
৪. এবার খেতে পারেন সালাদ। কারণ সালাদে রয়েছে ভিটামিন, মিনারেলস ও ফাইবার। একটা ব্যাপার এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে- সালাদ যত বেশি রঙিন হবে, পুষ্টির মাত্রা তত বেশি হবে। এই সালাদ হতে পারে কয়েক ধরণের ফলের অথবা সবজির। তবে সালাদ খুব বেশি পরিমাণে খাওয়ার প্রয়োজন নেই।
৫. ব্যালেন্স ডায়েট রক্ষা করার জন্য কিছু পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট অর্থাৎ শর্করা জাতীয় খাবার অবশ্যই খেতে হবে। সেটা হতে পারে ভাত, রুটি, পাস্তা কিংবা আলুর কোন পদ। ভাত কিংবা রুটি খেতে পারেন মুরগির মাংস, মাছের ঝোল, ডাল, সবজী রান্না দিয়ে।
৬. একদম শেষে খেতে পারেন পছন্দসই মিষ্টি জাতীয় কোন খাবার। হাতে বানানো মিষ্টি, মিষ্টি দই, জিলাপি, কেক, পিঠা, ফালুদা, শাহী টুকরা প্রভৃতি। মিষ্টি জাতীয় এই সকল খাবারে থাকে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট ও চিনি। সারাদিন অভুক্ত থাকার ফলে শরীরে কিছুটা বাড়তি শক্তির প্রয়োজন হয়। যা পূরণে সাহায্য করবে মিষ্টি খাবার।
ইফতারিতে যথেচ্ছা খাবার খাওয়ার ফলে অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনা দুর্লভ নয়। সংযত ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাসের মাধ্যমেই পুরো রমজান মাস জুড়ে সুস্থ থাকা সম্ভব। তাই প্রতিদিনের ইফতারির আয়োজন হোক পরিকল্পনা অনুযায়ী ভাজাপোড়া খাবার বিহীন।