মিষ্টি খাবার খেতে ভীষণ পছন্দ করেন কি? ঝাল কিংবা টক জাতীয় খাবারের চাইতে মিষ্টি খাবারের প্রতি আগ্রহ কি তুলনামূলক ভাবে বেশি? প্রশ্ন দুইটির উত্তর যদি হ্যা হয়ে থাকে তবে একটু নড়েচড়ে বসুন।
কারণ অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার খাওয়ার ফলে আপনি অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন কী না, সেটার দিকে খেয়াল রাখা প্রয়োজন আপনার সুস্থতার খাতিরেই।
পছন্দের খাবার খাওয়ার সময় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা পরিমাণের দিকে খেয়াল রাখি না। যার ফলে, প্রয়োজনের চাইতে অনেক বেশি ‘চিনি’ গ্রহণ করা হয়ে যায়। অতিরিক্ত কোন কিছুই শরীরের জন্য ভালো নয়। যে কারণে বাড়তি চিনি গ্রহণ শরীরে বিরূপ প্রভাব ফেলে দেয়।
তবে মূল সমস্যাটি হলো, অনেকেই বুঝতে পারেন না তার মিষ্টি খাবার গ্রহণের মাত্রা কখন কমানো উচিৎ। এক্ষেত্রে কিছু সাধারণ লক্ষণ রয়েছে, যা সরাসরিভাবে প্রকাশ করে আপনার অতিরিক্ত মিষ্টি গ্রহণের মাত্রা।
কী সেই সকল লক্ষণ? মিলিয়ে নিন নিজের সাথে।
মিষ্টি জাতীয় খাবারের জন্য ক্রমাগত ইচ্ছা তৈরি হওয়া
যত বেশিই মিষ্টি খাবার খান না কেন, আপনার মাঝে আরো বেশি মিষ্টি খাবার খাওয়ার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার খাওয়ার এই ইচ্ছাটা এক পর্যায়ে ‘আসক্তি’ হয়ে দাঁড়ায়। মিষ্টি খাবার অনেক মজাদার বলে আপনার মাঝে এই আসক্তিভাব তৈরি হচ্ছে, ব্যাপারটা কিন্তু তেমন নয়।
মিষ্টি খাবার খাওয়ার ফলে রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে যায়। আবার কিছুক্ষণ পরেই সেই বাড়তি ইনসুলিন হুট করেই কমে যায়। যা অনেকটা ড্রাগসের মতো আচরণ করে। পাশাপাশি অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে হরমোন অনেকটা ‘ওয়েভ’ এর মতো আচরণ করে। ফলাফল স্বরূপ আরো বেশি মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়।
সারাদিন খুব ক্লান্তি বোধ হওয়া
আগেই বলা হয়েছে মিষ্টি জাতীয় খাবার গ্রহণের ফলে প্রাথমিকভাবে ইনসুলিন অনেক বৃদ্ধি পায় এবং পরবর্তিতে অনেক কমে যায়। রক্তে ইনসুলিনের এমন বাড়া-কমার ফলে সরাসরি প্রভাব পরে এনার্জি লেভেলের উপর।
মিষ্টি খাবার ফলে কিছু সময়ে এমন বেশি এনার্জি পাওয়া গেলেও পরবর্তিতে ক্লান্তিবোধ হতে থাকে। এই ক্লান্তিভাব অনেক লম্বা সময় ধরে বিদ্যমান থাকে বলেই, দিনভর ক্লান্তিবোধ কাজ করে।
ত্বকে ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়
রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে অনেকের ত্বকের ওপর বিরূপ প্রভাব দেখা দেয়। ইনসুলিনের এমন উঠা-নামার ফলে হরমোনের তারতম্য দেখা দেয়। যার প্রভাবে ত্বকে ব্রণের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়।
মুড সুইং হবার সমস্যা দেখা দেয়
এখানেও সেই একই ব্যাপার ঘটে। রক্তে ইনসুলিনের তারতম্য দেখা দেবার ফলে মুড সুইং তথা মনমেজাজ হুট করে বদলে যাবার মতো সমস্যা হয়। দেখা যায় অকারণেই খুব মন খারাপ হয়ে যায়, অথবা অনেক রাগ হয়। যেহেতু প্রথমেই বলা হয়েছে অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার খাওয়ার ফলে ক্লান্তিবোধ হয়। এই ক্লান্তিবোধ থেকেও অকারণ মন খারাপভাব দেখা দিয়ে থাকে।
অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার মানেই হলো অতিরিক্ত চিনি। যার অর্থ অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণ। এতে করে ওজন বৃদ্ধি পাবার ব্যাপারটাও বাধ্যতামূলক। আর বাড়তি ওজন মানেই নানা ধরণের শারীরিক অসুস্থতার আধার। তাইতো সুস্থ থাকতে চাইলে অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার খাওয়ার ব্যাপারে সচেতন হতে হবে।