দূরপাল্লার ভ্রমণ, অবসর সময়, বন্ধুদের সাথে আড্ডায় কিংবা অভ্যাসবশত চুইংগাম খেয়ে থাকেন অনেকেই। সবার আগ্রহ ও পছন্দের উপর ভিত্তি করেই একদম কম দামী থেকে শুরু করে বেশ ভালো দামের ও মানের চুইংগাম পাওয়া যায় সর্বত্র। অনেকেই ভেবে থাকেন দামী কিংবা সুগারবিহীন চুইংগাম খেলে দাঁতের কোন ক্ষতি হবে না, যা একেবারেই ভুল ধারণা। এই ফিচার থেকে জেনে রাখুন চুইংগামের পাঁচটি ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে যা চুইংগামের প্রতি আপনার ধারণা বদলে দিতে কাজ করবে।
১. সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের চাইতে শিশুরা চুইংগাম খেতে বেশি ভালোবাসে। চুইংগামের মিষ্টি ও হরেক ফলের স্বাদের জন্যেই মূলত শিশুদের মাঝে চুইংগাম এতো জনপ্রিয়। অনেকে আবার ক্ষুধাভাব কমাতে চুইংগাম খেয়ে থাকেন। এখানে জানিয়ে রাখা প্রয়োজন, চুইংগাম তৈরিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ চিনি প্রয়োজন হয়। যা দাঁতে সরাসরি ক্ষতিকর প্রভাব তৈরি করে। এছাড়া চুইংগামের এই চিনি রক্তে চিনির মাত্রাও বৃদ্ধি করে দেয়।
২. অনেকেই বলতে পারেন, চিনিবিহীন চুইংগামও বাজারে পাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে জানিয়ে রাখি, এই চুইংগামগুলো তৈরিতে ব্যবহৃত হয় আর্টিফিশিয়াল সুইটনার। এই উপাদানটি শরীরের মেটাবলিজমের উপর প্রভাব ফেলে। এছাড়া এইসকল আর্টিফিশিয়াল সুইটনারে থাকে ক্যানসার তৈরিকারী উপাদান। যা পরবর্তীতে ক্যানসারের পাশাপাশি ওজন বৃদ্ধি ও সন্তান জন্মদানে সমস্যা তৈরি করতে পারে।
৩. বেশ কিছু টুথ হোয়াইটেনিং চুইংগামে টাইটেনিয়াম ডাইঅক্সাইড নামক এক প্রকার উপাদান ব্যবহার করা হয়। এতে করে এই চুইংগাম খাওয়ার পর দাঁতে চকচকে ভাব দেখা দেয়। এই উপাদানটি সাময়িক সময়ের জন্য দাঁতকে সুন্দর করলেও, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় সমস্যা, শ্বাসকষ্টের সমস্যা ও ক্যানসারের সমস্যা তৈরিতে ভূমিকা রাখে।
৪. চুইংগাম খেলে বুক জ্বালাপোড়াভাব কমে- এটা একেবারেই ভ্রান্ত একটি ধারণা। বরং অতিরিক্ত চুইংগাম খাওয়া হলে পেটের সমস্যা, হজমে সমস্যা, ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে।
৫. চুইংগাম সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় দাঁতের। দাঁতের ক্ষয়রোগ দেখা দেওয়ার পেছনে চুইংগামের ভূমিকা থাকে সবচেয়ে বেশি।
৬. একেবারেই সাম্প্রতিক সময়ের একটি পরীক্ষামূলক গবেষণার তথ্য জানাচ্ছে, নিয়মিত চুইংগাম খাওয়ার সাথে মাইগ্রেন অথবা মাথাব্যথার সমস্যা সম্পর্কযুক্ত। অনবরত চুইংগাম চাবানোর ফলে Temporomandibular Joint এর উপর বাড়তি চাপ পড়ে। যা থেকে মুখের চাপার শক্তি কমে যায় এবং তার উপর বাড়তি চাপ দেওয়া হলে সমস্যা তৈরি হয়।
৭. চুইংগাম মূলত তৈরি করা হয় কেমিক্যাল উপাদান ও নন-এডিবল উপাদানের সমন্বয়ে। চুইংগাম খাওয়ার ক্ষেত্রে চুইংগাম চিবিয়ে তার স্বাদ বা ফ্লেভার গ্রহণ করে ছিবড়ে অংশটি ফেলে দেওয়া হয়। চুইংগাম ফেলে দেওয়ার পরেও তার কেমিক্যালের অংশ আমাদের মুখের ভেতর দীর্ঘসময় রয়ে যায়। যা পরবর্তীতে ক্ষতিরক প্রভাবের মাত্রা বৃদ্ধি করে।
আরও পড়ুন: মাড়ির রক্তপাত প্রতিরোধে কী করণীয়?
আরও পড়ুন: দাঁতে নখ কাটার ৭ স্বাস্থ্য ঝুঁকি