খুব গুরুত্বপূর্ণ কোন একটি মিটিংয়ে আছেন। হুট করেই শুরু হলো বিকট শব্দে হেঁচকি ওঠার সমস্যা। হাতের কাছে থাকা পানি পান করেও হেঁচকি বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে মিটিং ছেড়ে উঠেও যেতে পারছেন না। ভীষণ বিব্রতকর ও কষ্টদায়ক এই সমস্যাটির জন্য ভোগান্তিতে পড়তে হয় কমবেশি সবাইকেই।
মানবশরীরে বুকের খাঁচাকে পেটের অংশ থেকে আলাদা করে রাখে ডায়াফ্রাম নামক একটি অংশ। এই ডায়াফ্রামের আকস্মিক সংকোচন বা বন্ধের দরুন মুখ থেকে হিক জাতীয় শব্দ তৈরি হয়। সেখান থেকেই Hiccups বা হেঁচকির সৃষ্টি। হেঁচকির সমস্যা দেখা দেওয়ার পেছনে বা ডায়াফ্রামের চাপ পড়ার মতো বেশ কিছু কারণ কাজ করে। তার মাঝে প্রধান কারণগুলো হলো-
১. খাবার দ্রুত খাওয়া বা দ্রুত গিলে ফেলা।
২. অতিরিক্ত গরম বা ঝাল খাবার খাওয়া।
৩. বদহজমের সমস্যা দেখা দেওয়া।
৪. কোমল পানীয় পান।
৫. ঘুমের অভাব, শারীরিক চাপ ও ক্লান্তি।
৬. গর্ভাবস্থা।
৭. নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ সেবন।
সাধারণত হেঁচকির সমস্যাটি নবজাতক ও শিশুদের মাঝে দেখা দেয়। তবে হেঁচকি যেকোন বয়সের যে কারোর ক্ষেত্রেই যেকোন সমস্য দেখা দিতে পারে। হেঁচকি মূলত ১-২ মিনিট স্থায়ী হয়। কিন্তু গুরুত্বর আকার ধারণ ধারণ করলে ৪৮ ঘন্টা টানা হেঁচকি উঠতে পারে। সেক্ষেত্রে হেঁচকির সাথে মুখ শুকিয়ে যাওয়া, মাথাব্যথা, বুকে ব্যথা, নিঃশ্বাসে সমস্যা, বমি হওয়ার মতো উপসর্গগুলোও দেখা দেওয়া শুরু হয়। এমন হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হেঁচকি গুরুত্বর হয় না বলে সাধারণ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণে সহজেই সমস্যাটির হাত থেকে নিস্তার পাওয় যাবে।
১. হেঁচকি দেখা দিলে এক নিঃশ্বাসে এক গ্লাস পানি পান করতে হবে।
২. নাকের এক পাশের অংশ ধরে রেখে অন্য পাশের অংশ দিয়ে জোরে জোরে শ্বাস নিতে হবে।
৩. কাগজের বা পলিথিনের ব্যাগের সাহায্যে নিঃশ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
৪. এক চা চামচ পরিমাণ চিনি মুখের ভেতর রেখে ধীরে চুষে খেতে হবে।
৫. আশেপাশে কেউ থাকলে বলতে হবে চমকানোর মতো কোন কাজ করে মনোযোগ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে।
অনেকের ক্ষেত্রে প্রতি মাসে কিংবা সপ্তাহেই হেঁচকির সমস্যাটি নিয়মিত দেখা দেয়। এমনটা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করতে হবে ও প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করাতে হবে। কারণ নিয়মিত হেঁচকির সমস্যার আড়ালে শারীরিক অন্য কোন সমস্যা লুকায়িত থাকতে হবে।
আরও পড়ুন: নিত্যদিনের ৫ নিরীহ ভুলে ঝুঁকিতে পড়ছে কিডনি
আরও পড়ুন: ইতিবাচক মনোভাব অবদান রাখে আয়ু বৃদ্ধিতে