সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ও স্বাদু পানীয় হলো ডাবের পানি। সহজলভ্য হলেও বিশেষ কোন কারণ ছাড়া ডাবের পানি তেমন একটা পান করা হয় না। অসুস্থ হলে কিংবা অতিরিক্ত গরম সময়ে ডাবের পানির কদর দেখা যায় কিছুটা।
শরীরের জন্য ক্ষতিকর জেনেও কোমল পানীয় পান করা থেকে বিরত থাকা হয় না বেশীরভাগ সময়। অথচ এক গ্লাস কোমল পানীয়ের পরিবর্তে এক গ্লাস ডাবের পানিতে রয়েছে, স্বাস্থ্যের জন্য হাজারো উপকারী উপাদান সমূহ।
ডাবের পানিতে কী কী স্বাস্থ্য উপকারিতা থাকতে পারে, সেটা সম্পর্কে ধারনা নেই বেশীরভাগ মানুষের। অসুস্থ রোগীদের ডাবের পানি পানের পরামর্শ দিয়ে থাকেন ডাক্তাররা। কিন্তু কেন ডাবের পানি পান করতে বলেন, সেটা আমরা জানি কী?
ডাবের পানির স্বাস্থ্য উপকারিতার কিছু পয়েন্ট আজকের ফিচারে তুলে ধরা হলো।
লো-ক্যালরিযুক্ত পানীয়
অন্যান্য যেকোন কোমল পানীয় কিংবা প্যাকেটজাত ফলের রস থেকে ডাবের পানি অনেক স্বাস্থ্যকর। লো-ক্যালরিযুক্ত পানীয় বলে, নিশ্চিন্তে পান করতে পারবেন যে কেউ। তবে যাদের ডায়বেটিসের সমস্যা আছে, তাদের জন্য কচি ডাবের পানি পান করা বেশি উপকারী।
খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে
প্রাকৃতিক এই উপাদানে রয়েছে ফসফাটেজ (Phosphatase), ফলিক অ্যাসিড ও অন্যান্য এনজাইম সমূহ। খাদ্য সহজে পরিপাক করতে সাহায্য করে এই সকল উপাদান সমূহ।
পানিশূন্যতা নিরাময় করে
আমাশয়, ডায়রিয়া, কলেরাজনিত কারণে রোগীর শরীরে দেখা দেয় পানিশূন্যতা। সাধারণ পানির পাশাপাশি এ সময়ে রোগীকে ডাবের পানিও পান করাতে হবে। দেহের হারানো ইলেক্ট্রলাইট ও প্লাজমাকে পুনরায় ফিরিয়ে আনতে এবং সঠিক মাত্রায় নিয়ে আসতে সাহায্য করে ডাবের পানি।
ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করে
অ্যান্টি-এজিং উপাদান হিসেবে সাইটোকিনস ও লরিক অ্যাসিড দারুন পরিচিত। এই দুইটি উপাদান ত্বকের পিএইচ (pH) এর মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখে বলে ত্বকে সহজে বয়সের ছাপ দেখা দেয় না। আর ডাবের পানিতে এই দুইটি উপাদান থাকে অনেক উচ্চমাত্রায়। যার ফলে ডাবের পানি ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে কাজ করে। একইসাথে প্রতিরোধ করে ত্বকের সংক্রামণ ও র্যাশ।
বিষণ্ণতা কমাবে ডাবের পানি
মানসিক চাপ ও বিষণ্ণতা কমানোর ক্ষেত্রে রিবোফ্লাভিন, প্যাথোজেনিক অ্যাসিড ও থায়ামিন হলো তিনটি উপশমকারী ভিটামিন। গুরুত্বপূর্ণ এই তিনটি ভিটামিনই পাওয়া যাবে ডাবের পানিতে।
হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে
ডাবের পানিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম। যা হাড় গঠনে ও হাড় মজবুত করতে কাজ করে।
কিডনির পাথরের সমস্যা দূর করে
কিডনির পাথরে সমস্যা মোকাবেলা করার জন্য নিশ্চিতভাবে এটা দুর্দান্ত একটা তথ্য। ডাবের পানিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম। যা কিডনির পাথরকে দ্রবীভূত করতে সাহায্য করে। একইসাথে এই সমস্যার যেন পুনরাবৃত্তি না হয় সেটাও নিশ্চিত করে ডাবের পানি।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন করে
যাদের উচ্চরক্ত চাপের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য ডাবের পানি ঔষধের মতো উপকারী। ডাবের পানিতে থাকা মিনারেলস (পটাসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম) ও ভিটামিন-সি রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
এছাড়াও মাইগ্রেনের সমস্যায় ভুক্তভোগীদের জন্য ত্রানকর্তা হিসেবে কাজ করে ডাবের পানি। পেশীর ব্যাথাতেও ডাবের পানি উপকারী, কারণ ডাবের পানিতে রয়েছে প্রচুর পটাসিয়াম। এছাড়া যারা স্বাস্থ্যকর ও কোমল চুলের জন্যে বিভিন্ন ধরণের প্রসাধনী সামগ্র ব্যবহার করেন, তারা ডাবের পানিও ব্যবহার করে দেখতে পারেন। ডাবের পানি চুলের গোড়া থেকে পুষ্টি জোগাতে ও চুল নরম করতে সাহায্য করে।