পরপর গরম ও ঠাণ্ডার প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার ফলে ফ্লু ও ঠাণ্ডাজনিত শারীরিক সমস্যা তুলনামূলক বেশি দেখা দেয়। মৌসুমি ফ্লু ও ঠাণ্ডার সমস্যায় বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। সঠিক যত্ন, বিশ্রাম ও খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে দ্রুতই সেরে ওঠা সম্ভব হয়। কিন্তু কিছু খাবার এই ফ্লু ও ঠাণ্ডার সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে দেয়। অসুস্থতার সময় না জেনে এমন খাবার খাওয়া হলে ভুগতে হবে দীর্ঘসময়। সচেতনতায় জেনে রাখুন কোন খাবারগুলো দূরে রাখতে হবে ফ্লু ও ঠাণ্ডাজনিত সমস্যায়।
অতিরিক্ত চিনি গ্রহণ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দিতে পারে। মিষ্টি খাবার গ্রহণে রক্তে চিনির মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা ইনফেকশনের বিরুদ্ধে কাজ করা শ্বেত রক্তকনিকাকে দমন করে। এতে করে ইনফেকশন ও প্রদাহের সমস্যা বৃদ্ধি পায়, যেখানে এই সমস্যাগুলো কমা প্রয়োজন। আরও সমস্যার বিষয় হলো চিনি শরীরে প্রদাহ তৈরিকারী উপাদান সাইটোকিনসের (Cytokines) মাত্রা বৃদ্ধি করে সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। এ কারণে ফ্লু ও ঠাণ্ডাজনিত সমস্যায় চিনিযুক্ত খাবার থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকতে হবে।
ঠাণ্ডা ও গলার কোন সমস্যা থাকলে ঝালযুক্ত খাবার থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকতে হবে। ঝাল খাবারে থাকা ক্যাপসাইসিন সাময়িকভাবে নাকবন্ধভাবকে কমালেও খাবার পরিপাক ও পাকস্থলীর সমস্যা বৃদ্ধি করে। কারণ অসুস্থতার সময় খাদ্য পরিপাক ক্ষমতা তুলনামূলক দুর্বল হয়ে যায়।
ঠাণ্ডা ও ফ্লুজনিত অসুস্থতায় মুখের রুচি একেবারেই কমে যায় এবং খাবারের প্রতি অনীহা কাজ করে। ফলে অনেকেই সাধারণ খাবারের পরিবর্তে তৈলাক্ত ও জাংক ফুড খাবারের প্রতি ঝুঁকেন। এই কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। জাংক ফুডে থেকে ফ্যাট ক্ষেত্র বিশেষে প্রদাহ তৈরি করে এবং একইসাথে পেটের সমস্যা তৈরি করে।
ক্যাফেইন সমৃদ্ধ পানীয় তথা চা, কফি, কোমল পানীয় শরীরকে পানিশূন্য করে দেয়, অর্থাৎ ডিহাইড্রেশন তৈরি করে। ক্যাফেইন হলো ডায়রেটিক (Diuretic) তথা মূত্রবর্ধক, এতে করে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। যা সুস্থ হওয়ার প্রক্রিয়াকে স্লথ করে দেয়। এছাড়া ক্যাফেইন সমৃদ্ধ সকল পানীয়তেই উচ্চমাত্রার চিনি থাকে, যা প্রদাহ বৃদ্ধি করে। তাই অসুস্থতার সময় ক্যাফেইন সমৃদ্ধ পানীয় পান থেকে বিরত থাকতে হবে।
ধারালো কোনা বিশিষ্ট, শুকনো ও শুষ্ক খাবার মুখ ও গলার ভেতরের অংশকে শুকনো করে তোলে। ফলে খাবার গিলতে সমস্যা হয় এবং গলাব্যথা ও প্রদাহ তৈরি হয়। এমন শুষ্ক খাবারের মাঝে বিস্কুট, বাদাম, চিপস, চানাচুর প্রভৃতি থাকবে। ঠাণ্ডার সময় সাধারণত মুখের ভেতরের অংশ তুলনামূলক শুষ্ক থাকে। তাই চেষ্টা করতে হবে এ সময়ে স্যুপ জাতীয় বা নরম খাবার গ্রহণের।
ঠাণ্ডা-কাশির সমস্যায় সবার আগে টকজাতীয় ফল খাওয়ার কথা মাথায় আসে। কারণ ভিটামিন-সি ঠাণ্ডা ও ফ্লুয়ের সমস্যা কমাতে কাজ করে। কিন্তু সেই সাথে এটাও খেয়াল রাখতে হবে যে, এ সময়ে পাকস্থলী নাজুক ও দুর্বল থাকে। তাই চেষ্টা করতে হবে কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠার পর এবং পাকস্থলী সবল হলে সাইট্রাস ঘরানার ফল তথা- লেবু, কমলালেবু, জাম্বুরা, গ্রেপফ্রুট প্রভৃতি খাওয়ার।
আরও পড়ুন: চোখের বাড়তি চাপ কমাবে ৫ এক্সারসাইজ
আরও পড়ুন: হুট করে দেখা দেওয়া হেঁচকির সমস্যা