আমরা নিজেদের মন ও মাথার ভেতরেই কাটাই দিনের বেশিরভাগ সময়। সেখানে ভিড় জমানো বিভিন্ন ভাবনাই পরিচালিত করে আমাদের প্রতিদিনের জীবনকে। এ কারণেই বাড়তি নজর দেওয়া প্রয়োজন আমাদের চিন্তাভাবনার উপর।
নেতিবাচক চিন্তা শুধু মনকেই বিষিয়ে দেয় না, প্রভাব ফেলে পুরো জীবন ব্যবস্থার উপরেই। যত বেশি নেতিবাচক ভাবনা, তত বেশি মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা। এ কারণে নেতিবাচক চিন্তা-ভাবনা দূরে সরিয়ে রাখা প্রয়োজন। কীভাবে নেতিবাচক ভাবনা থেকে দূরে থাকা সম্ভব হবে? বিভিন্ন থেরাপিস্টের পরামর্শের ভিত্তিতে জানানো হলো পাঁচটি কার্যকর পদ্ধতি।
মাথার ভেতরে যখন নেতিবাচক চিন্তাভাবনা ঘুরপাক খায়, তখন স্বাভাবিকভাবেই কারোর সাথে কথা বলতে বা দেখা করতে ইচ্ছা করে না। নিজেকে সবার কাছ থেকে আলাদা করে রাখতে এবং চুপচাপ থাকতে ইচ্ছা করে। কিন্তু এতে করে নেতিবাচক চিন্তা আরও বেশি ডালপালা ছড়ায়। নেতিবাচক ভাবনাকে বেশি দূর গড়াতে দিলে তা প্রকট আকার ধারণ করে। তাই এ সময়ে কাছের মানুষদের সাথে কথা বলা, তাদের সাথে আলোচনা করার জন্য দেখা করতে হবে। তাদের সাথে সময় কাটাতে হবে। সম্ভব হলে নিজের চিন্তা তাদের সামনে তুলে ধরতে হবে। এতে করে নেতিবাচক চিন্তার ধারাকে কমিয়ে আনা যাবে সহজেই।
বেশিরভাগ সময় নেতিবাচক চিন্তা দেখা দেওয়া শুরু করে ধীরে ধীরে, সময় নিয়ে। যখনই নেতিবাচক চিন্তা মাথায় দানা বাঁধা শুরু করবে নিজেকে সেখান থেকে বের করে আনার চেষ্টা করতে হবে। যেকোন ধরনের কাজের সাথে নিজেকে যুক্ত করতে হবে, যেন মন অন্য দিকে পরিচালিত হয়। নেতিবাচক চিন্তা থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিতে পারলে তা আর বাড়তে পারবে না।
যদি নেতিবাচক চিন্তা থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব না হয় তবে সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ হবে সেটা লিখে ফেলা। মনের ভেতর ঘুরপাক খাওয়া নেতিবাচক ভাবনাগুলোকে শব্দবন্দী করে ফেলতে পারলে মন অনেকখানি হালকা হয়ে যাবে এবং একই ভাবনা বারবার উঁকি দিবে না।
কোন বিষয় নিয়ে নেতিবাচক ভাবনা কাজ করা শুরু করলে নিজের মন ও মনোযোগকে অন্যদিকে সরানোর সবচেয়ে ভালো উপায় হবে পরবর্তী সময়কে নিয়ে চিন্তা করা। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, আগামী সপ্তাহের পরীক্ষা, মিটিং বা ডেডলাইন নিয়ে চিন্তা করা। আগামী সপ্তাহ বেশি দূরের হয়ে গেলে চিন্তা করতে হবে পরবর্তী এক ঘন্টার পর কি করা হবে সেটা নিয়ে। অন্য কোন কাজের বা কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে চিন্তা করলে নেতিবাচক ভাবনা বাড়তে পারে না।
যতই পরামর্শ দেওয়া হোক না কেন, মনকে সে অনুযায়ী পরিচালনা করা সবচেয়ে কষ্টকর একটি বিষয়। সেক্ষেত্রে যে কাজটি করা যেতে পারে, প্রতিদিন নির্দিষ্ট একটি সময়ে আহা ঘণ্টা সময় নির্বাচন করা যেতে পারে। যে সময়ে নেতিবাচক চিন্তাগুলো নিয়ে ভাবা যাবে। এতে করে সারাদিনে মাথায় নানান বিষয়ে নেতিবাচক ভাবনা ঘুরপাক খেলে, তাদেরকে একপাশে সরিয়ে রাখা সম্ভব হবে।