শারীরিক সুস্থতার জন্য নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা অপরিহার্য একটি বিষয়। শরীরে পানির ঘাটতি তথা ডিহাইড্রাশন থেকে দেখা দিতে পারে নানা ধরনের শারীরিক অসুস্থতাজনিত সমস্যা। এদিকে মুদ্রার অপর পিঠেও রয়েছে ভিন্ন এক জটিলতা।
যেহেতু পানি পান করা আবশ্যক, অনেকেই প্রয়োজনের অতিরিক্ত পরিমাণ পান করে থাকেন। অথচ একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক ৭-৯ গ্লাস পরিমাণ পানি পান করা প্রয়োজন। এর চেয়ে কম কিংবা বেশি হলেই বিভিন্ন ধরনের শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে থাকে। ডিহাইড্রেশন সম্পর্কে জানা থাকলেও, অতিরিক্ত পানি পানের ফলে কী ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে সেটা জানেন না অনেকেই। আজকের ফিচারে সে বিষয়ের প্রতি আলোকপাত করা হল।
ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতার মতো অতিরিক্ত পানি পানের ক্ষেত্রেও বমিভাব ও মাথা ঘোরানোর সমস্যা দেখা দেয়। অতিরিক্ত পানি পান করা হলে কিডনির উপর চাপ পড়ে এবং কিডনি বাড়তি পানিকে প্রসেস করতে পারে না। ফলে অতিরিক্ত এই পানি শরীর সংগ্রহ করা শুরু করে। এটা থেকেই বিভিন্ন ধরনের অস্বস্তিদায়ক শারীরিক লক্ষণ যেমন- মাথা ঘোরানো, বমিভাব এমনকি ডায়রিয়ার মতো সমস্যাও দেখা দেওয়া শুরু হয়।
মাথা ঘোরানো, বমিভাব ও ডায়রিয়ার মতো পানিশূন্যতা ও অতিরিক্ত পানি পানের ক্ষেত্রে সাধারণ শারীরিক লক্ষণ হলো দিনভর মাথাব্যথা থাকা। অতিরিক্ত পানি পান করা হলে রক্তে লবণের মাত্রা কমে যায়। এতে করে কোষগুলো ফুলে যায়। এমনকি অতিরিক্ত পানি পানের ফলে মগজ স্বাভাবিকের চাইতে ফুলে ওঠে এবং মাথার খুলিতে চাপ প্রয়োগ করে। এটা থেকে মাথাব্যথার সমস্যাটি দেখা দেয়।
অতিরিক্ত পানি পানের ফলে হাইপোন্যাট্রেমিয়া (hyponatremia) দেখা দেয়। স্বাভাবিকের চাইতে রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা কমে গেলে হাইপোন্যাট্রেমিয়া হয়। এর ফলে হাত, পা ও ঠোঁটে ফুলে যায় এবং বিবর্ণ হয়ে যায়। যারা খাপছাড়াভাবে পানি পান করে, তাদের এ কারণে ওজনও বেড়ে যায়।
সঠিকভাবে কাজ করা ও স্বাস্থ্যকর শরীর পাওয়ার মূলমন্ত্রই হলো সবকিছু নিয়ন্ত্রণে ও ব্যালেন্সে থাকা। যখনই প্রয়োজনের বেশি পানি পান করা হবে, ইলেক্ট্রোলাইটের মাত্রা কমে যাবে। এতে করে সুস্থ থাকার জন্য যেমন ব্যালেন্সের প্রয়োজন, তেমনটা পাওয়া যাবে না। ইলেক্ট্রলাইটের অসামঞ্জস্যতা থেকে পেশীর দুর্বলতা ও ব্যথাভাব দেখা দেয়।
পান করা পানিকে কিডনি পরিশোধিত করে রক্তে পানির মাত্রাকে সাম্যাবস্থায় তথা ব্যালেন্স রাখায় কাজ করে। অতিরিক্ত পানি পান করা হলে কিডনিকে বেশি কাজ করতে হয়। এতে করে স্ট্রেস হরমোন নিঃসরণের মাত্রা বেড়ে যায় এবং যার ফলস্বরূপ সহজেই শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে। এই ক্লান্তিভাব থেকেই দেখা দেয় দুর্বলতা।
আরও পড়ুন: