‘সবার দোড়গোড়ায়, সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বিশ্বে ৭ এপ্রিল পালিত হবে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস ২০২০। করোনার এই সংকট মুহূর্তে দেশে দেশে চলছে লকডাউন, সবাই এখন ঘরবন্দী।
ঘরবন্দী জীবনে বেঁচে থাকার নতুন নতুন উপায় খুঁজছে মানুষ। কেউ কেউ ভাবছেন যখন লকডাউন তুলে নেওয়া হবে তখন অবশ্যই আমাদের জীবন বদলে যাবে। তাই আসুন, এখন এই সময়টা ব্যয় করি স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য এবং নতুন চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত হই।
করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশ-বিদেশের অনেক নামি-দামি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা এখন বাড়ি থেকে কাজ করেছেন। লকডাউনে যারা বাড়ি থেকে কাজ করছেন, খাদ্যাভাসে তাদের পরিবর্তন আসতে পারে। কারণ আমরা সবাই ঘরের তৈরি খাবার খেতে বেশ পছন্দ করি, তার মানে যখন যা চাচ্ছেন তখন তাই খেতে পারছেন।
তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসে আপনার ডায়েট চার্টটি যাতে ঠিক থাকে তার কয়েকটি টিপস তুলে ধরা হলো-
*** স্বাভাবিক খাবার খাবেন
লকডাউনে একটি সুবিধা হলো সবাই ঘরে বসে নিজের পছন্দমত রান্না করে খাবার খাওয়া যাচ্ছে। তবে খাবারে সবার ব্যালেন্স করা উচিত। প্রতিদিন খাবারে পরিমিত কার্বস, পর্যাপ্ত প্রোটিন, দুগ্ধজাত এবং প্রচুর সবজি রাখুন। পুষ্টিকর খাবার আপনার শক্তির স্তর এবং কর্মক্ষমতা বাড়াতে প্রভাব রাখবে। এটি আপনাকে জাঙ্কে ভরা ক্যালোরি খেতে কন্ট্রোলে রাখবে।
*** প্রোটিন খুব গুরুত্বপূর্ণ
আপনার কতটুকু প্রোটিন দরকার সে সম্পর্কে ভালো করে জানুন, পরিমিত পরিমাণে তা গ্রহণ করুন। একটি লক্ষ্য রাখতে হবে, বেশি খাবার গ্রহণের ফলে কাজের স্পৃহা কমে যাবে, ওজন দ্রুত বেড়ে যাবে। এজন্য প্রতিদিন হাফ প্লেট সবজি, এক চতুর্থাংশ কার্বস, এক চতুর্থাংশ প্রোটিন গ্রহণ করুন এবং প্রতিদিন ১৫০-২৫০ মিলিমিটার দুধ পান করুন।
***খাবার খাওয়ার সময় ঠিক রাখুন
বাড়ি থেকে কাজ করছেন বলে এর মানে এই নয়, আপনি আপনার ইচ্ছামতো সময়ে খাবার খাবেন। একটি কর্মব্যস্ত দিনের মতো আপনার খাবার গ্রহণের সময় ঠিক রাখুন। কমপক্ষে সকাল ৯টার মধ্যে সকালের নাস্তা সেরে নিন। লাঞ্চ ও সকালের নাস্তার মধ্যে ১০ থেকে ১৫ মিনিট স্ন্যাকসের জন্য ব্রেক নিন, যা আপনাকে রিফ্রেশ রাখবে। স্ন্যাকসে খেতে পারেন ফল, বাদাম, কর্ন সিদ্ধ, ছোলা। পরিমিত পরিমাণে খাবেন, পুরো খাবারের বক্স নিয়ে বসবেন না আবার! আর একটা বিষয় খেয়াল রাখবেন, আপনারা কাজে ব্যবহৃত টেবিলটি যেন রান্না ঘর বা খাবার সবসময় হাতের কাছে পাওয়া যাবে এমন স্থানে বসাবেন না।
*** বেশি করে পানি পান করুন
আমরা সবাই জানি, অতিরিক্ত পরিমাণে ক্যাফেইন সেবন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক। তবে দিনে ২-৩ কাপ পর্যাপ্ত। সবাই বাসায় থাকার কারণে, যখন তখন কফির আড্ডা হতে পারে, তবে এই যোগ দিবেন না। লকডাউনের এই সময়টা পরিবারের সঙ্গে থাকতে পারছি সেটা আমাদের ভাগ্য। তাই খাওয়ার সময়ে পরিবারের সঙ্গেই খাবেন। খাওয়া এবং কাজ উভয় সমন্বয় করবেন। যতটা সম্ভব ডাইনিং টেবিলে খেতে বসবেন, এতে পঞ্চইন্দ্রিয় সক্রিয় থাকে, যা হজমে সাহায্য করে।
*** প্রতিদিন শরীরচর্চা
ঘরে থাকার সময়টা আপনি শরীর চর্চায় ব্যয় করতে পারেন। এখন ইউটিউবে শরীর চর্চার সব ধরনের নিয়ম দেওয়া আছে, প্রতিদিন নতুন নতুন নিয়মে শরীর চর্চা করুন। এই কাজে আপনার পরিবারের সদস্যকেও যুক্ত করুন।
মনে রাখবেন দুঃসময়েরও সময় শেষ! বাড়িতে বসে কাজ করছেন, কারণ আমরা চাকরিজীবী। এই সময়টাতে নিজের স্বাস্থ্য, শরীর ও মনের যত্ন নিন, হয়ত এমন সুযোগ আর পাবেন না। সুস্থ থাকুন, নিরাপদে থাকুন, ঘরে থাকুন।