লকডাউনের এ সময়ে ঘরে থাকতে হচ্ছে সবাইকে। অনেকেরই বাসা থেকেই অফিসের কাজ করতে হচ্ছে। সেই সাথে ঘরোয়া কাজ তো আছেই। তবে চব্বিশ ঘন্টা বাসায় থাকার ফলে আলস্য ভাব দেখা দেওয়াটা ব্যতিক্রম কিছু নয়। এতে করে দিন গড়িয়ে দুপুর আসলে ঘুমভাব দেখা দেয়। ঘুমভাবে জন্য কোন কাজে মন বসানোও কঠিন হয়ে পড়ে।
কিন্তু বড়রা সবসময় বলেন, ভাতঘুম কিংবা দুপুরের ঘুম ওজন বাড়িয়ে দেয়। আসলে বিষয়টি কতটা সত্য। লম্বা সময় বাসায় থাকার ফলে অনেকের দুপুরে ঘুমানোর অভ্যাস হয়ে যাবে। তবে কি সবারই ওজন বেড়ে যাবে?
আসল বিষয়টি হল ঘুমানোর সময়। ভরপেট ভাত খেয়েই যদি ঘুমাতে চলে যান তবে ওজন বাড়বে, সাথে দেখা দিবে হজমজনিত সমস্যাও। সেটা দুপুরে হোক কিংবা রাতে। খাবার খাওয়ার পরপর ঘুমানোর অভ্যাসটি সবসময়ই খারাপ। এছাড়া ঘুমানোর সময় শরীর সবচেয়ে কম ক্যালোরি বার্ন করে। এ জন্য খাবার খাওয়ার পর ঘুমানো হলে প্রয়োজনের চাইতে অনেক কম ক্যালোরি বার্ন হয় এবং বাড়তি ক্যালোরি শরীরে জমা হয়। যা থেকে পরবর্তীতে বেড়ে যায় ওজন।
কিন্তু তাই বলে দুপুরে অল্প সময়ের ঘুম কিন্তু খারাপ নয়। বরং দুপুরে ৩০ মিনিট থেকে ৯০ মিনিটের ঘুমের উপকারিতা অনেক। দুপুরের ঘুম-
১. স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে অবদান রাখে।
২. রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখে ও উচ্চ রক্তচাপ কমায়।
৩. নার্ভকে শান্ত করতে অবদান রাখে।
৪. মন ও মেজাজ ভালো রাখে।
৫. কাজ করার স্পৃহা বৃদ্ধি করে।
৬. শারীরিক ও মানসিক অবসন্নতা কমায়।
৭. শরীরকে রিল্যাক্স রাখে।
৮. মনোযোগ বৃদ্ধি করে।
৯. সৃজনশীলতা বৃদ্ধিতে অবদান রাখে।
প্রশ্ন আসতে পারে, দুপুরে ঘুমের এতো উপকারিতা থাকলে ঘুমানোর সঠিক সময় কোনটি? স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, দুপুরের খাবার দেড়টা-দুইটার মাঝে খেয়ে ফেলা হলে অন্তত দুই ঘন্টা সময় নিতে হবে ঘুমানোর জন্য। এ সময়ের মাঝে অন্তত ১০০ স্টেপ হাঁটতে হবে, কিছু কাজ করতে হবে- যেন শরীর সচল থাকে। এরপর চারটার দিকে ঘুমানো যেতে পারে।
এছাড়া দেখা গেছে দুপুর ৩টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত মস্তিষ্ক সবচেয়ে কম কাজ করে। এ সময়ের ঘুম মস্তিষ্ককে বিশ্রাম দেয়। যা পরবর্তীতে সারাদিনের ফুয়েল হিসেবে কাজ করে।
তাই ভামঘুমকে নয়, বরং নিয়ম ও সময় মেনে দুপুরে ঘুমালে ওজন তো বাড়বেই না, বরং নিজেকে ফুরফুরে রাখা সম্ভব হবে।