এতোদিনে আমাদের জানা হয়ে গেছে নিজেকে সুস্থ রাখার জন্য পরিষ্কার থাকা কতটা জরুরি। বিশেষত করোনাভাইরাসে যেন সংক্রমিত হতে না হয় সেজন্য হাতকে পরিষ্কার রাখা। শুধু করোনাভাইরাস নয়, যেকোন জীবাণু, ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াই সংক্রমিত হতে পারে বহুল ব্যবহৃত বিভিন্ন স্থান তথা দরজার হাতল, লিফটের সুইচ কিংবা লাইট-ফ্যানের সুইচ থেকে।
বারবার পরামর্শ দেওয়ার দরুন এটাও এখন আর অজানা নেই যে, নিজেকে সুস্থ রাখার প্রধান শর্তই হল সাবানের সাহায্যে ২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে হাত ধোয়া। সাবান হাতে থাকা ক্ষতিকর জীবাণুসহ করোনাভাইরাসকে ধ্বংস করতে কাজ করে।
কিন্তু বারবার হাতের কথাই বলা হচ্ছে, মাথার ত্বক বা চুলের গোড়ায় জীবাণু থাকতে পারে কিনা সেটা নিয়ে খুব একটা আলোচনা নেই। সাধারণভাবেই চুলে হাত চলে যায়, সেক্ষেত্রে চুল থেকেও জীবাণু হাতে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এক্ষেত্রে শ্যাম্পু কি জীবাণু ধ্বংসে কার্যকর?
সাবান যেভাবে ফেনা তৈরি করে, ঠিক অনুরূপভাবে শ্যাম্পুও ফেনা তৈরি করে। কিন্তু সাবান তৈরি করাই হয় জীবাণু ধ্বংসের জন্য, অন্যদিকে শ্যাম্পু তৈরি মূল উদ্দেশ্য চুল ও মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখা। মাথার ত্বকের মরা চামড়া, ময়লা ও বাড়তি তেলকে সরিয়ে ফেলাই শ্যাম্পুর প্রধান কার্যকারিতা।
তবে কিছু বিশেষজ্ঞরা এখানেও জানাচ্ছেন ইতিবাচক খবর, শ্যাম্পু ব্যবহারে চুলে থাকা বিভিন্ন মাইক্রোঅর্গানিজমস তথা অণুজীব দূর করা সম্ভব। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্যান ডিয়েগো স্টেট ইউনিভার্সিটির রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন বিভাগের অ্যাসোসিয়েট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্ট্যানলি ম্যালয়, পিএইচডি জানান, শ্যাম্পুর ফেনা চুলে উপস্থিত অণুজীবদের পানিতে মিশিয়ে ফেলে এবং ধুয়ে নিয়ে যায়। এছাড়া বেশিরভাগ শ্যাম্পুতে ডিটারজেন্ট থাকে মাথার ত্বকের প্রাকৃতিক তেলকে দূর করার জন্য। এই সকল ডিটারজেন্ট বেশ কিছু ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের মেমব্রেনসকে ক্ষতিগ্রস্ত করে অকার্যকর করে দেয়।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, সাবানের চাইতে তুলনামূলক হালকা ডিটারজেন্ট ব্যবহার করা হয় শ্যাম্পুতে। যেন তা চুল ও মাথার ত্বকের ক্ষতি না করে। এ কারণে জীবাণু ধ্বংসে সাবানের চাইতে শ্যাম্পু কম কার্যকর হলেও, ফেনার সাহায্যে জীবাণুদের ধুয়ে সরিয়ে ফেলার ক্ষেত্রে শ্যাম্পু খুব ভাল কাজ করে।