ঈদের দিনের নানান রকম প্রস্তুতির মাঝে, কোরবানির জন্যে আলাদাভাবে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়। এর মাঝে সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা দেখ দেয় রেফ্রিজারেটরের স্থান সংকুলান নিয়ে। কোরবানি পশুর মাংস সংরক্ষণের জন্য বাড়তি স্থানের প্রয়োজন হয়। পুরনো মাছ-মাংসের ভিড়ে নতুন মাংস রাখার জায়গা করা বেশ কষ্টকর হয়ে ওঠে। যে কারণে সম্পূর্ণ রেফ্রিজারেটর ভালোভাবে পরিষ্কার ও গোছানো প্রয়োজন।
ঈদ আসতে খুব বেশিদিন কিন্তু বাকি নেই। এখন থেকেই প্রস্তুতি না নিলে সব কাজ সামাল দেওয়া কষ্টকর হয়ে উঠবে। রেফ্রিজারেটর পরিষ্কার করা যতটা সহজ ভাবা হয়, আদতে ততটাও সহজ নয়। জেনে নিন কীভাবে সহজ কয়েকটি ধাপে ও অল্প সময়ের মাঝে রেফ্রিজারেটর পরিষ্কার করে নিতে পারবেন।
আরো পড়ুন: তিরিশ মিনিটেই ঘরে আসুক নতুনত্ব
১. প্রথমেই রেফ্রিজারেটরের কানেকশন বন্ধ করে নিতে হবে। এরপর ফ্রিজে থাকা সকল কিছু যেমন: কাঁচা মাছ-মাংস, বরফ, ফল, সবজী, রান্না করা কোন খাবার বের করে নিতে হবে।
২. ডিপ ফ্রিজের অংশে বরফ বেশি জমে। এমনকি নরমাল ফ্রিজের অংশেও বরফ জমে থাকে। বরফ গলার জন্য ফ্রিজের দরজা কিছুক্ষণ খুলে রেখে দিতে হবে। স্বাভাবিক তাপমাত্রায় বরফ গলে গেলে পরিষ্কার কাপড়ের সাহায্যে বরফ গলা পানি মুছে নিতে হবে।
৩. ফ্রিজের সকল র্যাক ও বক্স খুলে সেগুলো ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। এছাড়া র্যাক ও বক্স খুলে নেওয়ার ফলে ফ্রিজ পরিষ্কার করতে সুবিধা হবে।
৪. সাধারণত ফ্রিজের ভেতরের অংশ সাবান পানি দিয়ে পরিষ্কার করা হয়। কিন্তু সাবান পানি দিয়ে ফ্রিজের ভেতরের অংশ পরিষ্কার না করাই শ্রেয়। কারণ এতে ফ্রিজের ভেতর সাবানের গন্ধ ও প্রভাব রয়ে যায়। যা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর।
এক্ষেত্রে ব্যবহার করতে হবে ঘরে তৈরি ক্ষতিবিহীন মিশ্রণ। মিশ্রণটি তৈরিতে প্রয়োজন হবে দুই টেবিল চামচ ভিনেগার, দুই চা চামচ বেকিং সোডা ও পাঁচ গ্লাস পানি। এই মিশ্রণ রেফ্রিজারেটরের ভেতরের অংশ পরিষ্কার করার পাশাপাশি জীবাণুমুক্তও করবে। পাশাপাশি ফ্রিজের দুর্গন্ধ দূর করবে ও তৈরি হতে বাধা দিবে। ভিনেগারের কড়া গন্ধ দূর করতে চাইলে পরবর্তিতে লেবুর রস পানির সঙ্গে মিশিয়ে সেই মিশ্রণ দিয়ে ফ্রিজ মুছে নিতে হবে।
৫. ফ্রিজের কিছু অংশে খুব কঠিন দাগ লেগে থাকে। সেই দাগ দূর করার জন্য টুথপেস্ট ব্যবহার করতে হবে।
৬. রেফ্রিজারেটর পুরোপুরি পরিষ্কার হয়ে গেলে পুনরায় ফ্রিজে খাবার রাখতে হবে। তবে এই ব্যাপারে কয়েকটি নিয়ম মানতে হবে।
যে সকল খাবারের বাটি ও ফল-সবজী রাখা হবে, সকলই পরিষ্কার করে নিতে হবে। কাঁচা মাছ-মাংসের ক্ষেত্রে নতুন প্যাকেটে মুড়ে নিতে হবে।
কিছুটা পচে যাওয়া কিংবা অনেকদিনের পুরানো খাবার পুনরায় ফ্রিজে রাখাই ভালো। সেই খাবারগুলো হয় খেয়ে ফেলতে হবে নয়তো ফেলে দিতে হবে।
কাঁচা মাছ-মাংসের মাঝে বহুদিনের সংরক্ষিত মাছ-মাংস শনাক্ত করে আলাদা করতে হবে। মাছগুলো তেলে মচমচে করে ভেজে নিতে হবে ও মাংসগুলো ভালোভাবে কষিয়ে নিতে হবে পরবর্তিতে খাওয়ার জন্য।
যে সকল মাছ-মাংস পুনরায় ফ্রিজে রাখা হবে, সেগুলো এলোমেলোভাবে না রেখে ফ্রিজের এক পাশ বরাবর গুছিয়ে রাখতে হবে। এতে অনেকটা জায়গা খালি হবে এবং কোরবানির মাংস রাখার জন্য পর্যাপ্ত খালি স্থান পাওয়া যাবে।
কোরবানির ঈদে রেফ্রিজারেটর অনেক বেশি জরুরি একটি ইলেট্রনিক পণ্য। সঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় পণ্যটি ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত না করলে, নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। তাই হাতে সময় থাকতেই জরুরি কাজটি সেরে ফেলুন।