করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে বাসাতে থাকতে হচ্ছে সকলকে। নিজেকে ও পরিবারের সবাইকে নিরাপদ রাখতে নিজ বাসায় থাকা বর্তমানে সবচেয়ে নিরাপদ। বাসাতে দীর্ঘদিন যাবত থাকা হচ্ছে বলে বাইরের ধুলাবালি ও রোদের ক্ষতিকর ইউভি রশ্মির নেতিবাচক প্রভাব থেকে দূরে থাকা যাচ্ছে সহজেই। এতে করে ত্বকজনিত সমস্যা কমে এসেছে বহুলাংশে। তবে ইদানিংকালের সময়ের মাঝে সবচেয়ে বেশি যে সমস্যা দেখা দিয়েছে, তা নিয়ে চিন্তিত হওয়াটাই স্বাভাবিক।
লকডাউনে ঘরে থাকার এ সময়ে অতিরিক্ত চুল পড়ার সমস্যায় ভুগছেন অনেকেই। সাধারণভাবে দৈনিক একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের ৫০-১০০টি চুল পড়তে পারে। তবে অনিয়ন্ত্রিত হারে চুল পড়া শুরু হলে তার মাত্রা ছাড়িয়ে যায় অনেক বেশি।
যেখানে বাসায় ধুলাবালি থেকে দূরে চুল ভালো থাকার কথা, সেখানে উল্টো অতিরিক্ত চুল পড়ার সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে। এমনকি উপকারী উপাদানে তৈরি ঘরোয়া হেয়ার প্যাক ব্যবহারেও খুব একটা উপকার পাওয়া যাচ্ছে না।
এমন সমস্যার পেছনে যে কারণটি কাজ করে তা হল পুষ্টির ঘাটতি। খেয়াল করে দেখুন, আমাদের শরীরের সিংহভাগ ভিটামিন-ডি পাওয়া হয় রোদের আলো থেকে। প্রায় দুই মাস যাবত বাইরে বের না হওয়ার জন্য রোদের আলোর সংস্পর্শে যাওয়ার মাত্রা নেমে এসেছে শূন্যের কোঠায়। যার ফলে সহজেই শরীরে ভিটামিন-ডি এর ঘাটতি তৈরি হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব হেলথ এর গবেষণার তথ্যানুসারে শরীরে ভিটামিন-ডি এর অভাব থেকে চুল অতিরিক্ত পড়ার সমস্যাটি দেখা দিতে পারে। অন্যান্য পুষ্টির পাশাপাশি ভিটামিন-ডি নতুন চুল গজাতে ও চুলের ফলিকলকে মজবুত রাখতে কাজ করে।
যখন শরীরে তার প্রয়োজনীয় ভিটামিন-ডি’র ঘাটতি দেখা দেয়, চুল পড়ার হার বৃদ্ধির সঙ্গে চুলের বৃদ্ধিও বাধাপ্রাপ্ত হয়। এমনকি অ্যালোপেশিয়ার (মাথায় টাক পড়া) সাথেও ভিটামিন-ডি’র ঘাটতির সম্পর্ক পাওয়া গিয়েছে।
ভিন্ন একটি গবেষণার তথ্য থেকে দেখা যায়, ১৮-৪৫ বছর বয়সী যে সকল নারীদের মাঝে অ্যালোপেশিয়ার সমস্যা ও প্রাদুর্ভাব রয়েছে, তাদের মাঝে ভিটামিন-ডি’র ঘাটতিও লক্ষ্য করা গেছে।
বাইরে বের হওয়া যেহেতু কোনভাবেই নিরাপদ নয়, নিজের বাড়ির ভেতরে থেকেই পর্যাপ্ত ভিটামিন-ডি পাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। বারান্দায় যদি রোদের আলো পাওয়া যায় তবে সকালের নরম রোদ অন্তত ১৫-২০ মিনিট গায়ে লাগানোর চেষ্টা করতে হবে।
বারান্দায় রোদ না আসলে ছাদে গিয়ে রোদের সংস্পর্শে আসা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে মাস্ক, গ্লভস ইত্যাদি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। পাশাপাশি প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে ভিটামিন-ডি যুক্ত খাবার তথা- দুধ, টকদই, তৈলাক্ত মাছ প্রভৃতি রাখার চেষ্টা করতে হবে।