ছুটি কাটাতে দেশের বাড়ি কিংবা দেশের বাইরে যাওয়া হলে লাগেজ গোছানো শুরু করা প্রয়োজন এখন থেকেই। নয়তো জরুরি সময়ে প্রয়োজনীয় জিনিসটি হাতের কাছে পাওয়া সম্ভব হবে না। পোশাক, জুতা ও গহনার বাইরেও অনুষঙ্গ অনেক কিছুরই দরকার হয় ঈদ ভ্রমনে। মনে করে এই সকল জিনিস সাথে না রাখলে সমস্যার মুখোমুখি হবার সম্ভবনা থাকে।
আজকের ঈদ ফিচারে তুলে ধরা হলো ঈদ ভ্রমণে ও ঈদের ছুটি কাটানোর সময়ে কী কী সামগ্রী ও পণ্য নিজের সাথে রাখা উচিৎ।
আরো পড়ুন: তিরিশ মিনিটেই ঘরে আসুক নতুনত্ব
পানীয়
পানি, জ্যুস ও স্যালাইন রাখুন নিজের সাথে। গরম আবহাওয়ার সঙ্গে বাড়তি বিড়ম্বনা হিসেবে যোগ দিবে ঈদের রাস্তার দীর্ঘ জ্যাম। পানির তেষ্টায় যেন কষ্ট পেতে না হয় সে বিষয়ে খেয়াল রাখুন।
শুকনো খাবার
দীর্ঘ পথ পাড়ি দেবার ফলে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুধাভাব দেখা দেবে। সে সময়ের জন্য সাথে নিন শুকনো খাবার। চিপস, চানাচুর, বিস্কুট, টোস্ট বিস্কুট, ওয়েফার, বাটারবন প্রভৃতি। চাইলে বাসা থেকে পিঠা কিংবা ঝরঝরে নুডলস রান্না করেও আনতে পারেন। রাস্তা থেকে কেনা খাবার না খাওয়াই উত্তম। এতে অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভবনা থাকে।
হাতপাখা
ফোল্ডিং কিংবা প্লাস্টিকের ছোট হাতপাখা সাথে রাখতে একদম ভুলবেন না। এমন ভ্যাপসা গরম আবহাওয়ায় হাতপাখা অনেকখানি নির্ভরতার নাম। বিশেষ করে ভ্রমণে যদি শিশু থাকে, তবে হাতপাখা অবশ্যই সঙ্গে রাখতে হবে।
পলিথিন
হ্যান্ডব্যাগে ছোট কয়েকটি পলিথিন নিয়ে নিন। নানান কাজেই পলিথিন প্রয়োজন হতে পারে। খাবারের প্যাকেট, অন্যান্য ময়লা রাস্তাঘাটে যেখানে সেখানে না ফেলে পলিথিনে জড়ো করে রেখে দিন। গন্তব্যে পৌছানোর পর পলিথিনটি নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে দিন।
সিভিট কিংবা লজেন্স
ভ্রমণে বমির প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়া খুবই কমন একটি সমস্যা। ওষুধ গ্রহণেও খুব একটা ভালো কাজ হয় না। অস্বস্তিদায়ক এই সমস্যাটি থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য মুখে সিভিট কিংবা লজেন্স রেখে দিতে হবে। এতে অনেকটা উপকার পাওয়া সম্ভব হয়। তাই সাথে এক পাতা সিভিট কিংবা কয়েকটি লজেন্স রেখে দিন।
বই, নোটবুক ও কলম
লম্বা পথ পাড়ি দেওয়ার ফলে বিরক্তিবোধ চলে আসে। লাগাতার গান শুনতেও একঘেয়েমি কাজ করে অনেক সময়। বই সে সময়ের জন্য সবচেয়ে উৎকৃষ্ট সঙ্গী। সাথে ছোট একটি নোটবুক ও কলম রাখুন ব্যাগে। প্রয়োজনীয় কোন তথ্য, কিংবা ছুটি শেষে কাজের প্ল্যান লিখে রাখতে পারবেন সহজেই।
বাড়তি টাকা
প্রয়োজন অনুযায়ী টাকা তো সাথে থাকবেই। সাথে ৩০-৪০ শতাংস বাড়তি ক্যাশ টাকাও রাখুন। কোন জরুরি প্রয়োজনে কিংবা বিপদে আপদে ক্যাশ টাকাই সবার আগে প্রয়োজন হয়। কারণ মফঃস্বল এলাকার দিকে এটিএম বুথ খুব একটা সহজলভ্য নয়। বিকাশের সুবিধা থাকলেও প্রয়োজনের সময় ক্যাশ টাকার বিকল্প নেই।
মোবাইল রিচার্জ কার্ড
ক্যাশ টাকা যে কারণে সাথে রাখা প্রয়োজন, ঠিক একই কারণে মোবাইলের রিচার্জ কার্ড রাখুন সাথে। ৫০ টাকার দুইটি কার্ড কিনে মানিব্যাগে রেখে দিন।
ব্যবহার্য অনুষঙ্গ
ব্যক্তিগত ব্যবহার্য কিছু সামগ্রী সাথে রাখুন। ঈদের ছুটি কাটাতে যেখানেই যান না কেন, এই জিনিসগুলো সবসময়ই কাজে আসবে। কী নেবেন সাথে? চিরুনি, টুথব্রাশ, মিনি টুথপেস্ট, ফেস ওয়াশ, মিনি সাবান, ফেস ক্রিম, লোশন, বডি স্প্রে, রেজর, বাড়তি স্যান্ডেল, রুমাল, গামছা, কটনবাড, সেফটিপিন, টুথপিক প্রভৃতি। আপনি যদি কোন মেডিকেশনে থাকেন তবে সেটা সবার আগে লাগেজে রাখুন। মেডিকেশনে না থাকলে জরুরি কিছু ওষুধ রাখুন নিজের সাথে।
ইলেকট্রনিক্স অনুষঙ্গ
প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিক্স পণ্য ছাড়া বর্তমান জীবন এক প্রকার অচলই বলা যায়। অথচ কোন এক অজানা কারণে অতি প্রয়োজনীয় এই জিনিসগুলো সাথে রাখতেই ভুলে যাই আমরা। তাই মনে করে আগে থেকেই প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিক্স পণ্যগুলো গুছিয়ে ব্যাগে রাখুন। ইয়ারফোন, পাওয়ার ব্যাংক, চার্জার, ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন নিতে ভুলবেন না যেন।
নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে ঈদের ভ্রমণ ও ছুটি কাটাতে পরিকল্পনা অনুযায়ী আজকে থেকেই লাগেজ গোছানো শুরু করে দিন। শেষ মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করে থাকলে বাদ যেতে পারে ভীষণ প্রয়োজনীয় জিনিসটি।