পিরিয়ডের সময়ে পেটে ব্যথার সমস্যাটি খুবই কমন। এ সময়ে তলপেটসহ কোমর ও পিঠের অংশে ব্যথা দেখা দেয়। সঙ্গে মাথাব্যথা, বমিভাব, পেটের সমস্যার মত উপসর্গগুলোও দেখা দেয়। অনেকের ক্ষেত্রে পেটে ব্যথার মাত্রাটি হয় অনেক বেশি, ফলে অন্যান্যদের চাইতে সহজেই বেশি দুর্বল ও অসুস্থ হয়ে পড়েন। এক্ষেত্রে ব্যথা কমাতে ওষুধ গ্রহণ না করে কিছু প্রয়োজনীয় নিয়ম ও পদক্ষেপ গ্রহণ কমিয়ে আনবে শারীরিক কষ্ট।
২০১২ সালের একটি গবেষণা থেকে দেখা গেছে পেটের ব্যথাযুক্ত স্থানে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) তাপমাত্রার গরম ভাপ নেওয়া হলে সমস্যা অনেকখানি কমে আসে। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে এতো ভালো কাজ করে যে ওষুধ গ্রহণের মতই কার্যকরি হয়ে ওঠে। এক্ষেত্রে তোয়ালে গরম করে কিংবা বোতলে গরম পানি ভরে কাপড়ের সাহায্যে মুড়ে পেটের কাছে ধরে রাখতে হবে।
বেশ কিছু পরীক্ষা থেকে দেখা গেছে অন্তত ২০ মিনিটের ম্যাসাজ থেরাপি মেন্সট্রুয়াল ক্রাম্প (ব্যথা) কমায়। ২০১০ সালে ২৩ জন নারীর উপর পরীক্ষা করে দেখা গেছে, পিরিয়ডকালীন পেটে ব্যথা হয় এন্ডোমেট্রিওসিস এর ফলে। গবেষকেরা দেখেছেন উপকারী এসেনশিয়াল অয়েলের সাহায্যে পেটে ম্যাসাজ করলে লক্ষণীয় উপকার পাওয়া সম্ভব হয়। এক্ষেত্রে ল্যাভেন্ডার, সেইজ, আমন্ড এসেনশিয়াল অয়েল সমৃদ্ধ ক্রিম ব্যবহারেও উপকার পাওয়া যাবে।
পিরিয়ডের সময়ে কিছু খাবার সচেতনভাবেই এড়িয়ে যেতে হবে, কারণ এই সকল খাবার গ্রহণে পেটে ব্যথার সমস্যাটির সাথে পেট ফাপাভাব বেড়ে যায় অনেকখানি। তৈলাক্ত খাবার, কোল্ড ড্রিংক্স, ক্যাফেইন সমৃদ্ধ পানীয়, লবনাক্ত খাবার, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার থেকে এ সময়ে দূরে থাকাই শ্রেয়।
পিরিয়ডে পেটে ব্যথা, ফাঁপাভাব ও অস্বস্তিজনিত সমস্যা কমাতে পর্যাপ্ত পানি পান খুবই উপকারী ভূমিকা রাখে। পানি শরীরকে আর্দ্রতা প্রদান করে যা পিরিয়ডজনিত শারীরিক সমস্যাকে কমিয়ে আনতে কাজ করে। সাধারণত দৈনিক ৭-৮ গ্লাস পানি পানের কথা বলা হয়। পিরিয়ডের সময়ে ৯-১০ গ্লাস পানি পানের চেষ্টা করতে হবে। এছাড়া এ সময়ে অনেক নারীর বমিভাব, ডায়রিয়া, দুর্বলতা ও মাথা ঘোরানোর সমস্যা দেখা দেয়। এক্ষেত্রে পানি পান সমস্যাগুলো কমাতে উপকারে আসবে এবং শরীরে পানির মাত্রা ঠিক রাখবে।
পিরিয়ডকালীন সময়ে বেশিরভাগ সময়েই জাংক ফুড ও চিনিযুক্ত খাবার গ্রহণের প্রবল ইচ্ছা দেখা দেয়। কিন্তু এই সকল খাবার পেটে ব্যথার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে অনেকখানি। বরং এ সময়ে ফ্রেশ ফল-সবজি ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ উপকারী খাবার বেশি করে খেতে হবে। ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ বীজ, আমন্ড ও সবুজ শাকে প্রদাহ বিরোধী উপাদান থাকে। যা পেট ব্যথা কমাতে কাজ করবে।