২০১৯ এর বার্ষিক হিসাব।
৫ টেস্ট। ১৭ ওয়ানডে। ৭ টি-টোয়েন্টি। এবং সবমিলিয়ে এই বছরে আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের অধিনায়ক ছিলেন পাঁচজন!
-হ্যাঁ আপনি ভুল পড়ছেন না!
নামগুলো জানিয়ে দেই। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মাশরাফি বিন মতুর্জা, তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান ও মুমিনুল হক।
বছরের শুরুতে ইনজুরির কারণে নিয়মিত টেস্ট অধিনায়ক সাকিব আল হাসান নিউজিল্যান্ড সফর মিস করেন। ২০১৮ সালে অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেয়ার পর মুশফিকুর রহিমও আর অধিনায়কত্বের প্রতি আগ্রহী নন। বাধ্য হয়ে নতুন অধিনায়ক খুঁজতে হয়ে ক্রিকেট বোর্ডকে। তামিম ইকবাল ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নামটাই ছিল তাদের পছন্দের শীর্ষে। শেষ পর্যন্ত নিউজিল্যান্ড সিরিজে টেস্ট সিরিজের জন্য মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে বেছে নেয় ক্রিকেট বোর্ড। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অবশ্য অধিনায়ক হিসেবে এটি প্রথম টেস্ট নয়। ২০১৮ সালে এমন আরেকটি টেস্টে তিনি স্টপগ্যাপ ক্যাপ্টেন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ড সিরিজে ওয়ানডে ক্রিকেটে অবশ্য মাশরাফি বিন মতুর্জাই অধিনায়কত্বের পালন করেন। তার নেতৃত্বেই আয়ারল্যান্ডে প্রথমবারের মতো তিনজাতি সিরিজের ওয়ানডে ট্রফি জেতে বাংলাদেশ। ইংল্যান্ড বিশ্বকাপেও মাশরাফিই বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেন। ২০১৫ সালের পর ২০১৯-টানা দুই বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেয়া প্রথম অধিনায়ক মাশরাফি বিন মতুর্জা।
বিশ্বকাপের পরপরই জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে শ্রীলঙ্কার মাটিতে বাংলাদেশ তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে যায়। এই সিরিজে খেলতে যাবার কিছুদিন আগে মাশরাফি ইনজুরিতে পড়েন। বাধ্য হন সিরিজ থেকে সরে দাড়াতে। ওয়ানডে সিরিজের অধিনায়ক হিসেবে ক্রিকেট বোর্ড তামিম ইকবালের নাম ঘোষণা করে।
ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের ১৪ তম অধিনায়ক হলেন তামিম ইকবাল। তার আগে ২০১৬-১৭ মৌসুমে অবশ্য তামিম ইকবাল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একটি টেস্টে অধিনায়কত্ব করেছিলেন। তবে ২০১৯ সালে ওয়ানডে ক্রিকেটে তামিমের নেতৃত্বের অভিষেক হলো চরম বাজে। শ্রীলঙ্কায় তিন ম্যাচের তিনটিতে হারল বাংলাদেশ তার অধিনায়কত্বে। ব্যাট হাতে তিন ম্যাচের সিরিজে তামিম করলেন সাকুল্যে ২১ রান! পুরো সিরিজে তামিম ইকবাল ছিলেন যেন অসহায় এক ক্রিকেটারের প্রতিচ্ছবি!
সেপ্টেম্বরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট এবং তিনজাতি টি-টোয়েন্টি সিরিজে নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসান দায়িত্বে ফিরলেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রামে বৃষ্টিভেজা টেস্ট ম্যাচ হারল বাংলাদেশ ২২৪ রানের বড় ব্যবধানে। টি-টোয়েন্টি সিরিজের ফাইনাল বাতিল হওয়ায় আফগানিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশ ট্রফি ভাগাভাগি করল।
২৯ অক্টোবর আইসিসি সাকিবকে এক বছরের জন্য সব ধরনের ক্রিকেটে নিষিদ্ধ করলো। ক্রিকেট জুয়াড়ির কাছ থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পরও সেটা গোপন রাখায় সাকিব এই নিষেধাজ্ঞায় পড়েন।
এদিকে নভেম্বরের শুরুতে বাংলাদেশ দলের ভারত সফর। দুই টেস্ট এবং তিনটি টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য নতুন অধিনায়ক ঘোষণা করল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। টেস্টে বাংলাদেশের অধিনায়ক হলেন মুমিনুল হক। টেস্ট ক্রিকেটে মুমিনুল বাংলাদেশের ১১তম অধিনায়ক। আর মাহমুদউল্লাহকে ঘোষণা করা হলো টি-টোয়েন্টির অধিনায়ক।
একটু মনে করিয়ে দেই-বছরের শুরুতে দুই ম্যাচের জন্য টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব পেয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। আর বছরের শেষে সেই তিনি টেস্ট দলে থাকলেও অধিনায়ক অন্য কেউ। তবে বছর শেষ করলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ষষ্ঠ অধিনায়ক হিসেবে।
সম্পূরক তথ্য হলো-অধিনায়ক হিসেবে এটি কিন্তু মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অভিষেক নয়। ২০১৮ সালের দুটি টি- টোয়েন্টিতে তিনি বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
২০১৯ সালে ৫ টেস্টের একটিতে জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ১৭টি ওয়ানডেতে জিতেছে ৭টি। হেরেছে ১১টিতে। টি-টোয়েন্টি খেলেছে এই সময়ে ৭টি। জিতেছে ৪টিতে। আর ২৯টি এই আর্ন্তজাতিক ম্যাচে বাংলাদেশের অধিনায়ক ছিলেন পাঁচজন।
২০১৯ সালকে তাহলে অধিনায়ক নির্বাচনের বছর হিসেবে চিহ্নিত করতে পারে বিসিবি!