নানা বিতর্কে বিতর্কিত ডাকসু!



ইমরান হোসাইন, ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দীর্ঘ আটাশ বছর পর অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। নির্বাচন প্রক্রিয়াটি শুরু হয়েছিল নানা বিতর্ক দিয়ে। এখনও সে বিতর্ক চলমান। নির্বাচনের আগে প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক আচরণ, সহাবস্থান নিশ্চিত করতে না পারা, ভোটকেন্দ্র একাডেমিক ভবনের বাইরে থাকা, ছাত্রত্ব না থেকেও ভোটে অংশগ্রহণ ইত্যাদি ছিল বিতর্কের বিষয়। সে বিতর্ক থামেনি নির্বাচনের পরও। কখনও সমন্বয়হীনতা, একে অপরকে দোষারপ করা, পদধারী নেতাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজির অভিযোগ, বিভিন্ন জায়গায় ডাকসু ভিপির ওপর হামলা, ডাকসু ভবনে হামলা-বছর জুড়ে এসব বিতর্ক চলছেই।

তবে এত সব বিতর্কের মধ্যে ভালো কাজের জন্যও আলোচনায় ছিল ডাকসু। মোটাদাগে ক্যাম্পাসে জো বাইক সেবা চালু, হলগুলোতে গেস্টরুমের নির্যাতন অনেকাংশে বন্ধ, পরিবহন ট্রিপ বাড়ানো, লাইব্রেরির সময় বৃদ্ধি, ভেন্ডিং মেশিনে ন্যাপকিন ছিল ডাকসুর উল্লেখযোগ্য কাজ।

আদালতের বাধ্যবাধকতায় ২৩ জানুয়ারি ডাকসুর তফসিল ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে ভোটগ্রহণের তারিখ হিসাবে ১১ মার্চ দিনকে ধার্য করা হয়। তফসিল ঘোষণার পরপরই ক্যাম্পাসে সহাবস্থানের দাবিতে সরব হতে থাকে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনগুলো।

১১ মার্চ সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে ভোট গ্রহণ। মোট ১৮টি আবাসিক হলে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ওই দিন রাতেই ব্যালট ভর্তি বাক্স পাওয়ার অভিযোগে স্থগিত করা হয় কুয়েত মৈত্রী হলের ভোট গ্রহণ। হট্টগোল বাধে রোকেয়া হলেও। এছাড়া নির্বাচনে ছাত্রলীগ কর্তৃক ভোট প্রদানে বাধা, অনিয়ম, কৃত্রিম লাইন তৈরি, রাতে ব্যালট বাক্স ভরা এসব অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন ছাত্রলীগ ছাড়া বাকী সব প্যানেল। ছাত্রলীগ ছাড়াও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল কোটা সংস্কার আন্দেলনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, প্রগতিশীল ছাত্র ঐক্য, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, স্বতন্ত্র জোট ও একক প্রার্থীরা।

নির্বাচন বর্জন করে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে তারা। ১১ মার্চ রাত সোয়া তিনটার দিকে ফলাফল ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। ঘোষিত ফলাফলে ডাকসুর পঁচিশটি পদে ২৩টিতেই জয় পায় ছাত্রলীগ। এছাড়া ভিপি পদে জয়ী হন কোটা সংস্কার আন্দোলন কারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক নুরুল হক নুর এবং সমাজসেবা সম্পাদক পদে তার সংগঠনের আখতার হোসেন। ছাত্রলীগ সভাপতি (দুর্নীতির দায়ে অব্যাহতিপ্রাপ্ত) রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে হারান নুরুল। শোভনের সমর্থকরা হট্টগোল বাধিয়ে দেয়।

একদিকে নির্বাচন বর্জন কারীদের আন্দোলন অন্যদিকে ভিপি পদে জয়ী হতে না পেরে ছাত্রলীগের বিবাদমান অবস্থান। পরে বিকেলে টিএসসিতে নুরকে জড়িয়ে ধরে আলিঙ্গন করে শোভন। নুরকে সহযোগিতা করার অঙ্গীকার করেন তিনি। এদিকে পুনঃনির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনকারীদের আন্দোলন চলমান ছিল। পরে বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটি গঠন করে। কিন্তু সেটা আর আলোর মুখ দেখেনি।

নানা বিতর্কের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী আমন্ত্রণে গণভবনে যান ডাকসু নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা। ২৪ এপ্রিল ডাকসু ভবনে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম কার্যনির্বাহী সভা। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আজীবন সদস্য হিসেবে মনোনীত করে ছাত্রলীগ থেকে নির্বাচিতরা। কিন্তু দ্বিমত পোষণ করে ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর। শুরু হয় আবারও বিতর্ক।

এরপর দেখা যায় ডাকসুর সমন্বয়হীনতা। পৃথক মন্ত্রণালয়ের মতোই চলতে থাকে ডাকসু। প্রত্যেকে সম্পাদক, সদস্য সবাই সবার মতো কাজ করতে থাকে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ডাকসু ভিপিকে দাওয়াত দেওয়া হয় না, ডাকসুর কর্মচারী নিয়োগে ভিপির নাম না থাকা, প্রেস রিলিজে স্বাক্ষর না থাকা সবকিছু সৃষ্টি করে নতুন আরেক বিতর্ক।

এরপর সিনেটে ৫ জন ছাত্রপ্রতিনিধি নির্বাচনকালে ডাকসুর বাহির থেকে মনোনীত করা হয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে। যেটাকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা যৌক্তিকভাবে মেনে নিতে পারেনি।

এরপরই কয়েকদফা আক্রমণের শিকার হন ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর। নির্যাতিত শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়াতে গিয়ে সলিমুল্লাহ হলে ছাত্রলীগ কর্মীদের হাতে লাঞ্ছিত হন।এরআগে বগুড়ায় ইফতার মাহফিলে যোগ দিতে গিয়েও হামলার শিকার হন। নিজ এলাকা পটুয়াখালীর গলাচিপায়ও ছাত্রলীগ কর্মীদের হাতে তিনি হামলার শিকার হন।এরই মধ্যে সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে ওঠে ১৩ কোটি টাকার টেন্ডার বাণিজ্যের অভিযোগ। যেটাকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে থাকে তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামক একটি সংগঠন। সর্বশেষ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ও ছাত্রলীগের যৌথ হামলার শিকার হন নুর ও তার সহযোগীরা। দিনে দুপুরে ডাকসু ভবনের বাতি বন্ধ করে তাদের ওপর রড, স্ট্যাম্প, কাঠ, বাঁশ নিয়ে চড়াও হয় ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। এতে নুর ও তার সহযোগীসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়। যাদের মধ্যে আশঙ্কাজনক রয়েছে এখনও চারজন।

ডাকসুর বিতর্ক এখানেই শেষ নয়। ছাত্রলীগ থেকে নির্বাচিত জিএস রাব্বানী নৈতিক স্খলনের দায়ে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কৃত হন। তার বিরুদ্ধে এমফিলে ভর্তি জালিয়াতির অভিযোগও আছে। তবুও তিনি কিভাবে ডাকসুতে স্বপদে বহাল থাকেন সেটা নিয়েও বিতর্ক এখনও চলছে।

ডাকসুর এজিএস সাদ্দামের একটি ব্যক্তিগত একাডেমিক সংবাদ গণমাধ্যমে আসে। যেখানে দেখা যায় সাত বছরেও তিনি অনার্সের গন্ডি পেরুতে পারেনি। এমন একজন অনিয়মিত শিক্ষার্থী কিভাবে ডাকসুর এজিএস হন সেটা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন অনেকে।

এছাড়া ডাকসুতে প্রতিনিধিত্ব করা অনেকের বিরুদ্ধে ভর্তি না হয়ে ডাকসু নেতা এমন একটি শিরোনামে একটি দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হয়। যাতে দেখা যায় চিরকুটের মাধ্যমে ভর্তি হয়ে তারা ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বিজয়ী হয়েছে। সে ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। জালিয়াতি করেছেন যারা তাদের পদ বাতিল করে পুনঃনির্বাচনের দাবিসহ উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন তারা।

অথচও ডাকসু ঘিরে স্বপ্ন দেখেছিল শিক্ষার্থীরা। কিন্তু তাদের সে আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি ডাকসুতে। বরং ডাকসু ছিল বিভিন্নভাগে বিভক্ত। ডাকসু নেতারা পদকে ব্যবহার করেছে নিজেদের স্বার্থে। টকশো আর দলীয় লেজুড়বৃত্তি থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি তারা। বরং বিভিন্ন সময় জন্ম দিয়েছে বিভিন্ন বিতর্কের। ডাকসু ঘিরে বিতর্কই অব্যাহত রয়েছে বলে মনে করেন শিক্ষার্থীরা। সে বিতর্ক আদৌ থামবে কিনা সেটাও বলতে পারছেন না কেউ।

দেশের ফুটবলে উত্থান-পতনের ছোঁয়া



নজরুল ইসলাম, স্পোর্টস রিপোর্টার, বার্তা২৪.কম
ভালো-মন্দ মিলিয়ে একটি বছর পার করল বাংলাদেশের ফুটবল

ভালো-মন্দ মিলিয়ে একটি বছর পার করল বাংলাদেশের ফুটবল

  • Font increase
  • Font Decrease

মাঠের পারফরম্যান্সে উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে ২০১৯ সালকে বিদায় জানিয়েছে বাংলাদেশের ফুটবল। শুধু স্বপ্নভঙ্গের গল্প লেখেনি দেশের ফুটবলাররা। উৎসব করার মতো সাফল্যও ধরা দেয় লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের হাতে। সদ্য বিদায় নেওয়া বছরে দেশের ফুটবলের সেই হাসি আর কষ্টমাখা স্মৃতিগুলো একবার রোমন্থন করা যাক-

কাতার বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে বাংলাদেশ

২০১৯ সালে মাঠের লড়াইয়ে বেশ উজ্জ্বল ছিল বাংলাদেশের জাতীয় ফুটবল দল। উতড়ে যায় বিশ্বকাপ প্রাক বাছাই পর্বের বাধা। দুরন্ত পারফরম্যান্সে লাওসকে হারিয়ে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে পা রাখে অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে দাপুটে প্রতিরোধ গড়ে ড্র ছিনিয়ে নেয় দেশের দামাল ছেলেরা। যে পারফরম্যান্স বাংলাদেশের ফুটবলের সোনালি অতীতে ফিরে যাওয়ার আভাস দেয়।

অন্য দিকে প্রীতি ম্যাচে কম্বোডিয়ার বিপক্ষেও জেতে বাংলাদেশ। আর ঢাকায় ভুটানকে দুই ম্যাচে ধরাশায়ী করে কোচ জেমি ডে-র শিষ্যরা।

ছেলেদের অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলে ট্রফি জয়

সদ্য অতীত হওয়া বছরে অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলে শিরোপা ছিনিয়ে নিয়েছে দেশের ছেলেরা। মালদ্বীপকে হারিয়ে চার দলের উয়েফা অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলে সেরা হয় বাংলাদেশ।

এএফসি কাপের সেমিতে আবাহনী

ক্লাব ফুটবলে গেল বছর নতুন কীর্তি গড়ে ঢাকা আবাহনী লিমিটেড। এএফসি কাপের আঞ্চলিক সেমি-ফাইনালের টিকিট কাটে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী দলটি। তা আবার প্রথমবারের মতো। শেষ চারের প্রথম লেগে জয়ও ছিনিয়ে নেয় আবাহনী। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রতিপক্ষ উত্তর কোরিয়ান ক্লাব এপ্রিল টোয়েন্টি ফাইভকে ধরাশায়ী করে তারা। কিন্তু পিয়ংইংয়ের ফিরতি লেগে হারের তেতো স্বাদ নিয়ে ঘরে ফেরে আবাহনী।

এসএ গেমসে স্বপ্নভঙ্গ

নেপাল এসএ গেমসে আর্চারির দশটি স্বর্ণপদকই জিতেন রোমান সানারা। সুবাদে নিজেদের পুরনো রেকর্ড ভেঙে ১৯টি স্বর্ণপদক জেতার নতুন রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশ। কিন্তু ফুটবলে লেখা হয় ব্যর্থতার গল্প।

খেলার কথা অনূর্ধ্ব ২৩ দলের। সেখানে বাংলাদেশ লড়াই করেছে জাতীয় দল নিয়ে। তার চেয়ে বড় কথা। নেপাল এসএ গেমসে ফুটবল দল পাঠায়নি শক্তিশালী প্রতিপক্ষ ভারত। তাই বাংলাদেশের ফাইনালে উঠার সম্ভাবনা জোরালো ছিল। কিন্তু গেমসে প্রথমবারের মতো ভুটানের কাছে হেরে ফাইনালে উঠার স্বপ্ন ভেঙে যায় বাংলাদেশের ছেলেদের। আর গেমসে মেয়েদের দলই পাঠায়নি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।

এএফসির সেরা গোল

মামুনুল ইসলাম ও সোহেল রানার গোল দর্শকদের ভোটে এএফসি-র সপ্তাহ সেরা গোলের মর্যাদা পায়। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে উত্তর কোরিয়ার ক্লাব এপ্রিল টোয়েন্টি ফাইভের বিপক্ষে করা আবাহনীর মিডফিল্ডার সোহেল রানার গোলটি জায়গা করে নেয় এএফসি-র সেরা গোলের তালিকায়। তার আগে এএফসি কাপের গ্রুপ পর্বে নেপালের মানাং মার্সিয়াংদি ক্লাবের বিপক্ষে আবাহনীর মাঝ-মাঠের তারকা ও বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মামুনুল ইসলামের গোল সপ্তাহ সেরা নির্বাচিত হয়।

শেখ কামাল ক্লাব কাপ

শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপে শিরোপা জিতে নেয় মালয়েশিয়ার তেরেঙ্গানু এফসি। চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের ফাইনালে চট্টগ্রাম আবাহনীকে ২-১ গোলে হারায় তেরেঙ্গানু। রানার্স-আপ ট্রফি নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় কোচ মারুফুল হকের বন্দরনগরীর ক্লাবটিকে।

বসুন্ধরার লিগ ট্রফি

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) প্রথমবার পা রেখেই সবাইকে চমকে দেয় বসুন্ধরা কিংস। নিজেদের অভিষেক মৌসুমেই ঘরে তুলে দেশের লিগ ট্রফি। লিগের ২২তম ম্যাচে মোহামেডানের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেই শিরোপা নিশ্চিত করে ফেলে টুর্নামেন্টের নবাগত দলটি।

গোল্ডকাপ সেরা মেয়েরা

বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা অনূর্ধ্ব-১৯ গোল্ডকাপে ছোবল দিয়েছিল ঘূর্ণিঝড় ফণী। বাজে আবহাওয়ার কারণে ফাইনাল ম্যাচটিই মাঠে গড়ায়নি। অন্য ফাইনালিস্ট লাওসের সঙ্গে যুগ্মভাবে শিরোপা ভাগাভাগি করে দেশের মেয়েরা।

এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলে আঁখিরা

গেল বছর ফের এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলের মূল পর্বে খেলে দেশের মেয়েরা। টুর্নামেন্টের মূল পর্বে টানা দ্বিতীয়বারের মতো অংশ নেয় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। তবে নেপালের সাফ ফুটবলের শেষ চারে উঠেও ভারতের কাছে হেরে বিদায় নেয় বাংলাদেশের মেয়েরা।

ক্লাব পাড়ায় শুদ্ধি অভিযান

ক্যাসিনোর মূল উৎপাটন করতে মতিঝিলের ক্লাব পাড়ায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চালায় শুদ্ধি অভিযান। এতে স্তব্ধ হয়ে পড়ে মোহামেডান, আরামবাগ ও ফকিরেরপুলসহ ঢাকার অন্য ফুটবল ক্লাবগুলো। জুয়া আর ক্যাসিনোর অভিশাপ থেকে মুক্ত হয়ে নতুনভাবে এগিয়ে চলার চেষ্টা করছে এখন অভিযুক্ত ক্লাবগুলো।

;

আলোচনায় ছিল জঙ্গিদের নতুন কৌশলে হামলা



শাহরিয়ার হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

২০১৬ সালে পুরো বাংলাদেশকে স্তম্ভিত করে দিয়েছিল গুলশানে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা। এ ঘটনার পরে জঙ্গিরা আর মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারেনি। একের পর এক অভিযানে মেরুদণ্ড ভেঙে যায় জঙ্গি চক্রের।

তবে ২০১৯ সালে এসে হঠাৎ জঙ্গিরা তাদের কৌশল পরিবর্তন করে নতুনভাবে হামলার পরিকল্পনা করে। রাজধানীসহ একাধিক জায়গায় আইইডি বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে তারা।

এ ঘটনা আমলে নেন স্বয়ং পুলিশ প্রধান ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। তিনি বলেন, জঙ্গিরা হামলার ধরন বদলে (লোন উলফ) ‘একাকী’ হামলার কৌশল আঁটায় তা উদ্বেগের নতুন কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জঙ্গিরা এবার টার্গেট করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের।

অতীতের একাধিক হামলার ঘটনা পর্যালোচনা করে এবং বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে পুলিশের সব ইউনিটে নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশও দেন পুলিশ প্রধান। সে অনুযায়ী সারা দেশের পুলিশ সতর্ক হয়ে ওঠে।

সর্বশেষ খুলনার খানজাহান আলী থানার আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় এ হামলা হয়। কেউ হতাহত না হলেও আসবাবপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়, উদ্ধার করা হয় ককটেল।

গত তিন বছরে কোণঠাসা হয়ে থাকা জঙ্গিরা নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করে ২০১৯ সালে। এরই ধারাবাহিকতায় বছরের শুরুতে অর্থাৎ মার্চ ও এপ্রিল মাসে গুলিস্তান এবং মালিবাগে পুলিশ বক্স ও পুলিশ ভ্যানে বোমার বিস্ফোরণ ঘটনায় তারা। আর ২৩ জুলাই প্রায় একই সময়ে পল্টন ও খামারবাড়িতে দুই পুলিশ বক্সের পাশে তারা বোমা রেখে যায়। যদিও বোমা দুটি বিস্ফোরিত না হওয়ায় তেমন কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

এসব ঘটনার মধ্য দিয়ে জঙ্গিরা তাদের অস্তিত্ব জানান দিয়েছে ২০১৯ সালে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএসের নজরে আসতে চায় এ দেশের জঙ্গিরা। আইএস জঙ্গিগোষ্ঠী যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাইট ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে প্রত্যেকটি ঘটনার দায়ও স্বীকার করেছে।

পুলিশ বলছে, হামলায় ব্যবহৃত হতো ককটেল কিন্তু ইমপ্রোভাইজড। যা সাধারণ ককটেলের চেয়ে শক্তিশালী। প্রত্যেকটা ঘটনা ‘লোন উলফ’ (একাকী) বা উলফ প্যাকের (৪/৫ জন মিলে) পরিকল্পনা ফলো করে হামলা করে জঙ্গিরা। 

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বিশেষ করে জঙ্গি প্রতিরোধে বিশেষায়িত সংস্থা কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট- সিটিটিসির কর্মকর্তারা বলছেন, ‘লোন উলফ (একাকী) বা উলফ প্যাক (৪/৫ মিলে)’ হামলার কৌশলে জঙ্গিদের সংগঠিত হওয়ার বিষয়টি বাংলাদেশে নতুন ছিল। এর সদস্যরা নিজেরা নিজেরা র‌্যাডিক্যালাইজড হয়ে হামলা চালানোর চেষ্টা করছে। এরকম একাধিক ‘উলফ প্যাক’ রয়েছে বলেও ধারণা করছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।

গোয়েন্দারা বলছেন, সাংগঠনিকভাবে সক্রিয় হওয়ার পাশাপাশি ‘সেল্ফ র‌্যাডিক্যালাইজড’ হয়ে ‘লোন উলফ’ বা ‘উলফ প্যাক’-এর মাধ্যমে হামলার পরিকল্পনা করলে তা ঠেকানো অনেক কঠিন হয়ে পড়বে। আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনগুলোও এভাবে হামলা চালানোর জন্য নিয়মিত আহ্বান চালিয়ে আসছে।

জানতে চাইলে সিটিটিসির প্রধান ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, হলি আর্টিজানের ঘটনার পর জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক আমরা ভেঙে দিতে পেরেছি। কিন্তু এরা যেহেতু বিচ্ছিন্ন ও মতাদর্শিকভাবে এক্সিস্ট করে, সে হিসেবেই তারা বিচ্ছিন্নভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই চেষ্টা বা কার্যক্রম চালানোর প্রক্রিয়া হিসেবেই এরকম আরও কিছু ছোট ছোট ‘স্লিপার সেল’ বা ‘উলফ প্যাক’ তৈরি হয়েছে। অভিযান চালিয়ে তাদের আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।

;

লিভারপুল-ব্রাজিলের শিরোপা উৎসব, ব্যালন ডি'অরে মেসির রেকর্ড



নজরুল ইসলাম, স্পোর্টস রিপোর্টার, বার্তা২৪.কম
কেটেছে লিভারপুল-ব্রাজিলের শিরোপা খরা, ব্যালন ডি'অর রাজ্যে মেসির ফেরা

কেটেছে লিভারপুল-ব্রাজিলের শিরোপা খরা, ব্যালন ডি'অর রাজ্যে মেসির ফেরা

  • Font increase
  • Font Decrease

বর্ণিল একটি বছর পার করল আন্তর্জাতিক ফুটবল। বিতর্ক, সাফল্য, শিরোপা জয় আর চমকে ভরা বছরটা সন্দেহ নেই স্মরণীয় থাকবে বিশ্ব ফুটবলের ইতিহাসের পাতায়। ঘটনাবহুল বিদায়ী বছরের স্মৃতিচারণায় নিশ্চিত আগামী দিনগুলোতে মুখরিত থাকবেন ফুটবল অনুরাগীরা। লিভারপুলের চ্যাম্পিয়নস লিগ, পর্তুগালের ন্যাশন্স কাপ আর ব্রাজিলের কোপা আমেরিকা জয়, উয়েফা অ্যাওয়ার্ডে ভার্জিল ফন ডাইকের চমক, মেসির নিষেধাজ্ঞা আর ষষ্ঠ ব্যালন ডি'অর জয়ের কীর্তি গড়ার মতো গেল বছরের আলোচিত ঘটনায় একবার চোখ ফেরানো যাক তাহলে-

ব্রাজিলের কোপা আমেরিকা জয়

কোপা আমেরিকায় দীর্ঘদিন ধরে চলছিল শিরোপা খরা। তা প্রায় এক যুগ। সেই খারাপ সময়টা পেরিয়ে ২০০৭ সালের পর ব্রাজিলের ঘরে বিদায়ী বছরে প্রথম এসেছে কোপা আমেরিকার ট্রফি। ফাইনালে পেরুকে হারিয়ে আসরের নবম শিরোপা জিতে অনেক দিনের হতাশা দূর করেছে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। ২০১৪ বিশ্বকাপে জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে হারের ক্ষত কিছুটা হলেও শুকিয়ে দিয়েছে ঘরের মাঠের এ শিরোপা জয়।

মেসির নিষেধাজ্ঞা

মেজর ফুটবল আসরে আর্জেন্টিনার দুঃস্বপ্নটা কিছুতেই যেন কাটছে না। ২০১৯ কোপা আমেরিকায় আর্জেন্টিনার সেই দুঃস্বপ্নটা আরো একটু স্থায়ী হলো বৈকি! দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবলের সর্বোচ্চ এ টুর্নামেন্টের শেষ চারে চির শত্রু ব্রাজিলের মাঠে তাদের কাছেই হেরে ফুটবল জাদুকর লিওনেল মেসি ফের পুড়লেন শিরোপা না জেতার আক্ষেপের আগুনে। সেই হতাশা হজম করতে না পেরে দিয়ে ফেলেন বিতর্কের জন্ম। যেটা নিপাট ভদ্র মেসির সঙ্গে কোনোভাবেই যায় না।

প্রতিবেশী ব্রাজিলের কাছে হেরে রেকর্ড ষষ্ঠবারের ব্যালন ডি'অর জয়ী এ সুপারস্টার আয়োজকদের দাঁড় করান নিজের কাঠগড়ায়। অভিযোগ তোলেন পাতানো' কোপা আমেরিকা আয়োজনের। চিলিকে হারিয়ে কোপার তৃতীয় সেরা দলের মর্যাদা ছিনিয়ে নেওয়ার ম্যাচে মেসি দেখেন লাল কার্ড। ফের মাথা গরম করে ফেললেন। বেফাঁস মন্তব্য করে বিতর্কের রসদ যোগান দেন আর্জেন্টাইন এ ফুটবল মহাতারকা। এবার অভিযোগ করেন- স্বাগতিক ব্রাজিলকে জেতাতেই সব ব্যবস্থা করে রেখেছে দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের সর্বোচ্চ ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা কনমেবল। ঠিক এ অপরাধেই আন্তর্জাতিক ফুটবলে তিন মাসের জন্য নিষিদ্ধ হন মেসি।

ন্যাশন্স কাপ পর্তুগালের

ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর হাত ধরে ২০১৬ সালে ইউরো জয়ের পর ইউরোপিয়ান ফুটবলে গেল বছর আরো একটি বড় সাফল্য পায় পর্তুগাল। জিতে নেয় তারা উয়েফা ন্যাশন্স কাপের প্রথম আসরের ট্রফি। এ সাফল্যেও অসামান্য অবদান রাখেন পর্তুগিজ মেগাস্টার রোনালদো। পাঁচবারের ব্যালন ডি'অর জয়ী সিআর সেভেনের হ্যাটট্রিকে সুইজারল্যান্ডকে ধসিয়ে ফাইনালের টিকিট কাটে পর্তুগাল। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে ধরাশায়ী করে নিজেদের দ্বিতীয় মেজর ট্রফি ঘরে তুলে কোচ ফার্নান্দো সান্তোসের শিষ্যরা।

ব্যালন ডি'অরে মেসির রেকর্ড

প্রিয় জন্মভূমি আর্জেন্টিনার হয়ে এবছরও বড় কোনো শিরোপা জিততে পারেননি লিওনেল মেসি। ক্লাব বার্সেলোনার হয়ে জিতেন শুধু লা লিগা ট্রফি। কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে বল পায়ে তার ফুটবল জাদু মুগ্ধ করে রাখে পুরো দুনিয়াকে। সুবাদে ফিফার বর্ষসেরা ফুটবলার বনে যান মেসি। তার ধারাবাহিকতায় ব্যালন ডি'অরে নিজের রাজ্যত্ব ফিরে পান আর্জেন্টাইন এ ফুটবল জাদুকর। ২০১৯ সালের ব্যালন ডি'অর জিতে লিখে ফেলেন নতুন ইতিহাস। পুরনো রেকর্ড ভেঙে গড়েন ষষ্ঠ ব্যালন ডি'অর জয়ের রেকর্ড।

ভার্জিল ফন ডাইকের চমক

লিভারপুলের হয়ে দুরন্ত পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে সবার নজর কাড়েন ভার্জিল ফন ডাইক। দ্য রেড শিবিরকে উপহার দেন চ্যাম্পিয়নস লিগ ট্রফি। সুবাদে সবাইকে চমকে লিওনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে পিছনে ফেলে এ ডাচ ডিফেন্ডার জিতে নেন উয়েফার বর্ষসেরা ফুটবলার অ্যাওয়ার্ড।‌

লিভারপুলের ঘরে চ্যাম্পিয়নস লিগ

লিভারপুল সর্বশেষ ইউরোপ সেরার তকমা জিতে ছিল ২০০৫ সালে। দীর্ঘ ১৫ বছরের শিরোপা খরা কাটিয়ে কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপের অধীনে সদ্য অতীত হওয়া বছরে চ্যাম্পিয়নস লিগ ট্রফি জিতেছে দ্য রেড শিবির। টটেনহ্যাম হটস্পারকে হারিয়ে ষষ্ঠ চ্যাম্পিয়নস লিগ ট্রফি ছিনিয়ে নেয় অ্যা‌নফিল্ড শিবির। তবে লিভারপুলের লিগ ট্রফির খরাটা এখনো কাটেনি। ১৯৯০ সালে সর্বশেষ লিগ ট্রফি জেতে তারা। তবে মাঠের লড়াই আর ফর্ম দেখে এটা বলাই যায়, কোনো অঘটন না ঘটলে দীর্ঘ ৩০ বছর পর চলতি মৌসুমের ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ট্রফি উঠতে যাচ্ছে লিভারপুলের শোকেজেই।

;

যাদের ঘিরে আবর্তিত বিশ্ব রাজনৈতিক দৃশ্যপট



ফাতিমা তুজ জোহরা, আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সদ্য বিগত ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক অঙ্গন মাতিয়েছেন তারা। বিশ্বের রাজনৈতিক মঞ্চের পুরোটা জুড়েই ছিল তাদের দাপট। আলোচনা-সমালোচনা কিংবা নিন্দা-প্রশংসায় তারা আকর্ষণ করেছিলেন সকলের দৃষ্টি। তারা ছিলেন ২০১৯ সালে বিশ্বরাজনৈতিক মঞ্চের কুশীলব। বছরের পুরোটা সময়ই তাদেরকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে আন্তর্জাতিক রাজনীতির দৃশ্যপট।

বছর জুড়েই আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে তাদের নিয়ে তৈরি হয়েছিল নানা ইস্যু। তারা আলোচনার পাশাপাশি জন্ম দিয়েছেন অনেক সমালোচনার। বছরের বিভিন্ন সময় তাদের কর্মকাণ্ডে প্রশংসা কিংবা নিন্দার ঝড় উঠেছে গণমাধ্যমে এমনকি নিজের দেশে বা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে।

২০১৯ সালে বিশ্বমঞ্চে এমন অনেক নেতার দেখা পাওয়া গেছে, যারা নিন্দার ছিলেন নির্লিপ্ত, খামখেয়ালীতে ছিলেন লাগামছাড়া, সমালোচনায় ছিলেন ভ্রূক্ষেপহীন, শক্তি ও ক্ষমতার ব্যবহারে ছিলেন অতি উগ্র মনোভাবাপন্ন। অতীতে বিশ্ব রাজনীতির মঞ্চের দুই-চার জন নেতার ব্যক্তিত্ব আলোচনার টেবিলে উঠে আসলেও ২০১৯ সালে তেমন আলোচিত-সমালোচিত নেতার তালিকা বেশ বড়। শুধু ইউরোপ বা আমেরিকায় নয়, এশিয়া বা আফ্রিকায় এমন নেতার দেখা পাওয়া গেছে, নানা কথা ও কাজের জন্য মানুষ তাদেরকে মনে রাখবে। ২০১৯ সাল বিদায় নিলেও তাদের ইমেজ বিদায় নেবে না আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে। ইতি বা নেতিবাচক কারণে মানুষের মনে অনেক দিন রয়ে যাবে তাদের নাম।

বার্তা২৪.কম বিশ্লেষণ করেছে ২০১৯ সালে বিশ্ব রাজনৈতিক মঞ্চে সরব এমনই কয়েকজন আলোচিত-সমালোচিত আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে, যাদেকে বলা যেতে পারে বিগত বছরের বৈশ্বিক দৃশ্যপটের প্রধান কুশীলব:

ডোনাল্ড ট্রাম্প (যুক্তরাষ্ট্র)

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও লেখক হিসেবে রাজনীতি ও প্রশাসনে এসেই সবার নজরে চলে আসেন নানা কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে।

যদিও তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা হাতে নেওয়ার আগে থেকেই তুমুল সমালোচনার জন্ম দেন এবং নির্বচনী প্রচারণার কাজের শুরুতেই অসংলগ্ন কটূক্তি আর লাগামছাড়া কথাবার্তার জন্য নিন্দার সম্মুখীন হন। মার্কিন নেতাকে এক অর্থে বিশ্ব নেতা হলেও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য তিনি বিশ্ব নেতা তো অনেক দূরের কথা, তার পূর্বসূরি নেতৃত্বকেও করেছেন হেয় প্রতিপন্ন।

রাজনৈতিক, কূটনৈতিক সম্পর্ক ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কাজে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে ব্যর্থতার পাশাপাশি তিনি চীন, রাশিয়া, ইরাক, উত্তরকোরিয়া শেষমেশ যুক্তরাজ্যের সঙ্গেও সম্পর্ক প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। চীনের সঙ্গে বাণিজ্যিক অবস্থার অবনতি, রাশিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক ইস্যুতে জলঘোলা, ইরানের সঙ্গে হরমুজ প্রণালী নিয়ে বিতর্ক, আফগানিস্থানের সঙ্গে শান্তি চুক্তিতে ব্যর্থ, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সামরিক চুক্তিতে বিতর্ক ইত্যাদি কাজ করে সমালোচিত হন তিনি।

ইতোমধ্যে বিশ্ব মিডিয়াতে বেশ বড় জায়গা জুড়ে আছে তার ইমপিচমেন্ট ইস্যু। যদিও বিষয়টিকে তিনি কোনো দোষ হিসেবে দেখছেন না। এটা তিনি এমনিতেই বলেছেন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন বেশ আগে। উগ্র কথাবার্তা, শ্বেতাঙ্গ উন্নাসিকতা, নিজ দেশে অভিবাসী নাগরিকদের প্রতি অসহিষ্ণুতা ইত্যাদি কারণে ঘরে-বাইরে পুরো বছর জুড়েই সমালোচিত হয়েছেন এই মার্কিন নেতা। অতীতের বহুমাত্রিক ও সমন্বয়বাদী মার্কিন নেতৃত্বের তালিক বিষম রকম ব্যতিক্রম আর বিপরীত ছিলেন তিনি।

বরিস জনসন (ব্রিটেন)

ব্রিটেনের রাজনীতিতের যখন ব্রেক্সিটের জোয়ার-ভাটা শুরু হয় তখন তিনি বেশ উত্তাপ ছড়িয়ে ক্ষমতায় আসেন। নির্বাচনী প্রচারণায় ছিল- ২০১৯ সালের নভেম্বরের মধ্যে ব্রেক্সিট থেকে ইংল্যান্ডকে রের করে নিয়ে আসা। কিন্তু সেই প্রচারণায় ব্যর্থ হন তিনি। কথা রাখতে পারেননি বরিস জনসন। একইসঙ্গে কূটনৈতিক ইস্যুতে ট্রাম্পকে চক্ষুশূল মনে করছেন জনসন। ক্ষমতায় আসার আগে ট্রাম্পের প্রিয় পাত্র জনসন এখন সেই ট্রাম্পকেই ব্রিটেনের নির্বাচন নিয়ে নাক গলাতেও মানা করেন। প্রথা ভেঙে ১২ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে নিরঙ্কুশ জয় পায় জনসনের কনজারভেটিভ পার্টি।

তবে ব্রেক্সিট ইস্যুকে কেন্দ্র করেই বিগত চার বছর ধরে ক্ষমতার রদ বদল হয়েছে বেশ কয়েকবার। আর এখন ছেড়া পালের হাল ধরে বিপাকে পড়েছেন বরিস, যদিও তার ক্ষমতায় আরোহণকে গণ্য করা হয় বছরের সেরা চমক হিসেবে।

জেসিন্ডা আরডার্ন (নিউজিল্যান্ড)

সন্ত্রাস ও রক্তপাতের বিরুদ্ধে শান্তি, সমন্বয় ও ঐক্যের প্রতীক হয়েছিলেন পশ্চিমা শ্বের এই নেত্রী। তার পুরো নাম জাসিন্ডা কেট লরেল আরডার্ন। নিউজিল্যান্ডের হ্যামিলটন শহরে ১৯৮০ সালের ২৫ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন। ২০১৭ সালের ২৬ অক্টোবর থেকে নিউজিল্যান্ডের ৪০তম এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এছাড়াও তিনি ২০১৭ সালের ১ আগস্ট থেকে নিউজিল্যান্ড লেবার পার্টির সভাপতির দায়িত্বও পালন করছেন।

২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ডে বন্দুকধারীর গুলিতে ৫১ জন প্রার্থনারত নিরীহ মানুষ নিহতের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যে ভূমিকা জেসিন্ডা আরডার্ন রেখেছেন তা সকলের নজরে আসে। এমন বিতর্কিত বিষয়ে জেসিন্ডার অবস্থান সকল রাষ্ট্রপ্রধানের জন্য অনুকরণীয়। হামলার শিকার শরণার্থী মুসলিমদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন তিনি। তাদের জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দিয়েছেন। এমনকি এই হামলাকে সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন তিনি। সামরিক যুদ্ধাস্ত্র অটোমেটিক সাব-মেশিনগানের বেসামরিক ব্যবহারকে তিনি নিষিদ্ধ করেছেন। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ যে বিশ্ব সমস্যা এবং একে ধর্মের নামে না ডেকে অপরাধের আলোকে দেখার শিক্ষা দিয়েছেন তিনি। পশ্চিমা জগতে সর্বধর্মের মিলন ও পারস্পরিক সৌহার্দ্যের উজ্জ্বল উপমা তিনি স্থাপন করেছেন সন্ত্রাস ও রক্তপাতের কঠিন পরিস্থিতিতে।

জাস্টিন ট্রুডো (কানাডা)

বছর জুড়েই মানবিকতা আর পরমত সহিষ্ণুতার কারণে আটলান্টিকের উত্তর তীরের দেশ কানাডার এই নেতা বিশ্বে মনোযোগের পাশাপাশি অর্জন করেন শ্রদ্ধা ও সম্মান।

জাস্টিন ট্রুডো কানাডার লিবারেল পার্টির নেতা হিসেবে ২০১৫ সালে দেশটির ২৩তম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। জো ক্লার্কের পর তিনি কানাডার দ্বিতীয় কম বয়সী প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। তার বাবা পিয়েরে ট্রুডোও কানাডার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।

কানাডার রাজধানী অটোয়াতে জন্ম নেয়া ট্রুডো কলেজ জিন-দ্যে-ব্রেবুফ এ পড়ালেখা করেন। ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৪ সালে এবং ১৯৯৮ সালে ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলম্বিয়া থেকে স্নাতক করেন। বাবার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াতে দেয়া একটি বক্তব্যের মাধ্যমে সবার নজরে আসেন ট্রুডো। স্নাতক শেষে ট্রুডো ভ্যানকুভারের ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় শিক্ষকতাও করেন।

গৃহযুদ্ধ কবলিত সিরিয়ার বাস্তুহারা মানুষের প্রতি সহায়তায় হাত বাড়ানো, মন্ত্রিসভার ১৫টি পদে নারী নিয়োগ, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সচেতনতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করে ইতোমধ্যে উদারপন্থী সরকার হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছেন ট্রুডো। ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা ও বিদ্বেষের মুখে তিনি সংখ্যালঘুর ধর্মীয় স্বাধীনতা ও অধিকারের পক্ষে জোরালো বক্তব্য রেখেছেন।

আবি আহমেদ (ইথিওপিয়া)

শান্তিতে নোবেল পেয়ে আফ্রিকান নেতা ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ বিশ্বব্যাপী আলোচিত ও সমালোচিত হয়েছেন। মূলত ইথিওপিয়ায় শান্তি রক্ষা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক উন্নয়ন, সীমান্ত এলাকায় বিরোধ নিষ্পত্তি এবং প্রতিবেশী দেশ ইরিত্রিয়ার সঙ্গে সমঝোতা করায় তাকে এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। কিন্তু সমালোচকরা তাকে আপসকামী বলেও অভিযুক্ত করেছে।

২০১৮ সালের ২ এপ্রিল ১৫তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যে থাকা ইথিওপিয়াতে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা ছিল তার। শুরুতেই তিনি জরুরি অবস্থার অবসান, বন্দিদের মুক্তি, বিদেশিদের বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করে দিয়ে আলোচনায় আসেন। দুই দশক ধরে চলমান বৈরী সম্পর্কের অবসান ঘটিয়ে ইরিত্রিয়ার সঙ্গে সংলাপে বসেন তিনি। তারই ফলশ্রুতি শান্তিচুক্তি এবং বিশ বছর ধরে চলমান যুদ্ধের অবসান হয়। ইথিওপিয়ার অলিখিত নিয়ম অনুযায়ী ক্ষমতাসীন জোটের প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া এই নেতা আফ্রিকার গন্ডি পেরিয়ে বিশ্বমঞ্চেও আলোচিত হয়েছেন।

অং সান সুচি (মায়ানমার)

২০১৩ সালে শান্তিতে নোবেল পাওয়া এই নারী নেত্রী প্রবল সমালোচিত হন সামরিক জান্তাকর জাতিগত নিধনে সমর্থন করার কারণে। তিনি দীর্ঘদিনের বন্দি জীবন থেকে মুক্তির দুই বছরের মাথায় বিশাল ব্যবধানে জয়ী হয়ে ক্ষমতার অংশ হন। কিন্তু তারপর তার অবস্থান রাতারাতি পাল্টে যায়।

মায়ানমারের গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধার তাকে ‘নেলসন মেন্ডেলা’র উত্তরসূরি খেতাব এনে দেয়। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি সেই উপাধির মর্যাদা ধরে রাখতে পারেন নি।

সুচি মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু শান্তির জন্য বিশ্বখ্যাতি ‘অর্জন’ করে তা ‘রক্ষা’ করার ক্ষেত্রে তিনি পরাজিত হয়েছেন। মিয়ানমারের নিপীড়িত সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলা হয় সুচির নামে। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী কর্তৃক হত্যা, ধর্ষণ, বান্তুচ্যুতি এবং অগ্নিসংযোগসহ জাতিগত রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অত্যাচারের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারের সম্মুখীন হতে হয়েছে।

থেরেসা মে (ব্রিটেন)

ব্রেক্সিট ইস্যুতে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে আলোচনায় আসেন সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। ব্রেক্সিট ইস্যুতে দলের সমর্থন হারিয়ে নাকাল হয়ে চলতি বছর জুনে সিদ্ধান্ত নেন ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াবার। আর ব্রেক্সিটের জের ধরে ডেভিড ক্যামেরুনের পর দ্বিতীয় নেতা হিসেবে আলোচনায় আসেন থেরেসা মে।

থেরেসা মে ব্রেক্সিটকে জগাখিচুড়ি পাকিয়েছে বলে মন্তব্যও করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ব্রিটেনের দ্বিতীয় নারী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই গত তিন বছর ধরে ব্রেক্সিট নিয়ে বেশ অস্বস্তিতে পড়েন মে। এই নিয়ে দেশটির পার্লামেন্টে বেশ কয়েক বার ভোটও হয়েছে। এতে কয়েক বার মে’র পক্ষে রায় গেলেও পার্লামেন্টে নিয়মিত তোপের মুখে ছিলেন তিনি।

নরেন্দ্র মোদি (ভারত)

বছরজুড়ে বিতর্কে ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ব্যপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা এনে দিয়ে আলোচনায় আসেন মোদি। আর এখন সমালোচনার দাবানলে পুড়ছেন তিনি।

কাশ্মীর ইস্যুতে সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল, আসামে এনআরসির (নাগরিকপঞ্জি) চুক্তি, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএবি), সম্প্রতি সিএবি'র বিরুদ্ধে ভারত জুড়ে বিক্ষোভ ইত্যাদি ইস্যুকে কেন্দ্র করে নিজেকে স্বৈরচারী ও হিন্দুত্ববাদী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন মোদি। শান্তি, ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের আহ্বান জানিয়ে গেলেও বিভিন্ন আইনের রদ বদল করে নাম লিখিয়েছেন কট্টরপন্থি নেতা হিসেবে। সমালোচকদের মতে, বৃহত্তর গণতন্ত্রের দেশ ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র যথেষ্ট ম্লান হয়েছে তার শাসনামলে।

বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু (ইসরায়েল)

রক্ষণশীল ও ইহুদি মৌলবাদী দেশ ইসরায়েলের কোনও নেতা বিশেষ কোনও কারণ ছাড়া বিশ্ব মিডিয়ার খবরে আসেন না। সেক্ষেত্রে সাবেক ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তা থেকে প্রধানমন্ত্রী হওয়া নেতানিয়াহু সব সময় ছিলেন মিডিয়ার আলোচনায়।

এক দশকেরও বেশি সময় ধরে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী পদে। দল ও সরকারের ভেতরে নিজেকে গড়ে তুলেছেন স্বৈরাচারী নেতা হিসেবে। মাথায় নিয়েছেন দুর্নীতির অভিযোগ এবং পরিণত হয়েছেন আরব ও ফিলিস্তিনি জনতার নিধনকারী রূপে। মধ্রপ্রাচ্যের শান্তি প্রচেষ্টা তার কারণে একাধিক বার মুখ থুবড়ে পড়েছে।

নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ঘুষ, প্রতারণা ও বিশ্বাস ভঙ্গের কারণে তিনটি পৃথক দুর্নীতির অভিযোগ দায়েরও করা হয়। ইসরায়েল রাষ্ট্রের ইতিহাসে যা এবারই প্রথম ঘটলো। তথাপি ক্ষমতা ছাড়বেন না বলে ঘোষণা দেন নেতানিয়াহু। চলতি বছর দুই দফায় নির্বাচনে নেতানিয়াহু বা তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা সরকার গঠন করতে পারে নি। তবু ক্ষমতা ছাড়ার পাত্র নন তিনি। সামনের বছরের মার্চ মাসে আবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তখনই জানা যাবে নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ভাগ্য সম্পর্কে।

২০১৯ সালর এইসব নেতৃবৃন্দ ২০২০ সালও বিশ্ব রাজনীতির মঞ্চে সরব থাকবেন। তাদের আচার-আচরণের বিশেষ কোনও পরির্তন হবে, নাকি নতুন কোনও নেতার আগমনে তারা ছিটকে পড়বেন, সেটা কেবল সদ্য-আগম ২০২০ সালের গর্ভে লুক্কায়িত ভবিষ্যতই বলতে পারবে।

;