নদীর তীরে দর্শনার্থীদের কাছে টানছে রঙিন মেঘ

, জাতীয়

ফরহাদুজ্জামান ফারুক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 09:20:12

রংপুর শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ইউনিয়ন। এর খুব কাছাকাছি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নটি। তিস্তা নদী তীরবর্তী এই দুই ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকাটি এখন বিনোদন স্পট। এখানে নির্মাণাধীন একটি বেসরকারি সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে ঘিরে প্রকৃতি প্রেমীদের ভিড় বেড়েছে নদীর তীরে।

এখানকার লাটশালা ও খোদ্দার চরে সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে সাহেবগঞ্জ বাজার পর্যন্ত বাঁধের আদলে সাড়ে তিন কিলোমিটার নতুন সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া সাহেবগঞ্জ থেকে পাওটানা পর্যন্ত আগের বাঁধটি সংস্কার করে পাকাকরণের কাজ চলছে। এই সড়ক ধরে গন্তব্যে পৌঁছানোর সময় দৃষ্টিনন্দন প্রকৃতি নজর কাড়বে। এখন নদীর তীর ঘেঁষে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় কোনো উপলক্ষ্য ছাড়াই এখানে দেখা মিলবে নানান বয়সী মানুষের পদচারণা।

বর্ষাকাল আর বন্যার পানিতে যৌবন ফিরে পাওয়া তিস্তার অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভিড় আছে ভ্রমণ পিপাসুদের। সাথে পীরগাছা ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হাজারো মানুষের কাছে বিনোদন স্পটে পরিণত হয়েছে এলাকাটি।

তিস্তার অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভিড় আছে ভ্রমণ পিপাসুদের

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেক্সিমকোর অঙ্গপ্রতিষ্ঠান তিস্তা সোলার লিমিটেড দেশের সবচেয়ে বড় সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি এখানে নির্মাণ করার উদ্যোগ নিয়েছে। এরইমধ্যে ২০০ মেগাওয়াটের এ প্রকল্পের জন্য দুই উপজেলার প্রায় ১ হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করে, তা ভরাট করা হয়েছে। বাঁধের মতো তৈরি করা হচ্ছে দীর্ঘ সড়ক।

বর্তমানে এই প্রকল্প এলাকায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মানুষের আনাগোনা থাকে। নদীর বুকে নৌকার ছুটে চলা আর বিকেল বেলা আকাশে মেঘের রঙিন রূপ, মনে দোলা দেয়। শিল্পীর রঙ তুলিতে আঁকা ছবির মতোই যেন এখানকার আকাশ। রঙিন মেঘ আর নদীর রুপ অসাধারণ। নদীর কোল ঘেঁষে বাঁধের মতো সড়ক ধরে হাটতে হাটতে হারিয়ে যেতে মন চাইবে। কিন্তু এখানে হারিয়ে যাওয়া মানা। আর সন্ধ্যালগ্নে লাবণ্য লুকিয়ে মেঘের রঙ পরিবর্তনও বিমোহিত করে প্রকৃতি প্রেমীদের।

নৌকাতেও ভ্রমণ করেন অনেকে

সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ছাড়াও ছাওলা ইউনিয়নের পাওটানা বাজার থেকে একটু দূরে তিস্তা সংলগ্ন বোল্ডারেরপাড় নামকস্থানটিও কম নয়। এখানেও বিনোদন পিপাসুদের ভিড় রয়েছে। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষ আসেন জলমগ্ন নদী দেখতে। কেউবা আসেন নদী তীরে বসে একটু হিমেল হাওয়ায় গা ভাসাতে। অনেকে আবার রংপুরের বাহিরে থেকেও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে এখানে আসেন।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সংবাদ কর্মী আমিনুল ইসলাম জুয়েলের সাথে কথা হয়। তিনি জানান, তিস্তা, ঘাঘট ও বুড়াইল নদ-নদী বেষ্টিত পীরগাছাতে তেমন কোনো বিনোদন কেন্দ্র নেই। তবে দর্শনীয় স্থান হিসেবে তিনটি জমিদার বাড়ি, দেবী চৌধুরাণীর পুকুর, বিরবিরিয়ার বিল, তিন গম্বুজ বিশিষ্ট প্রাচীন মসজিদ এবং সৈয়দপুর ও পাওটানাতে নদী তীরে বোল্ডারপার রয়েছে। এসব স্পটের সাথে এখন নতুন করে নির্মাণাধীন সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি যোগ হয়েছে।

প্রিয়জনদের নিয়ে ঘুরতে আসেন প্রকৃতিপ্রেমীরা

উন্নতমানের বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় প্রকৃতি প্রেমীরা সময় কাটানোর পাশাপাশি আনন্দ উল্লাস করতে তিস্তা নদীর তীরে বেড়াতে আসেন বলেও তিনি জানান।

এ সম্পর্কিত আরও খবর