প্রত্যেক পর্যটন এলাকা সুন্দর রাখতে নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু অসচেতনতার কারণে পর্যটন এলাকার স্বাভাবিক সৌন্দর্য হারাতে বসেছে। সম্প্রতি লক্ষ্মীপুরের পর্যটন কেন্দ্র খোয়া সাগর দিঘী এলাকা পরিদর্শনকালে যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা দেখে পর্যটকদের অসচেতনতাই বেশি লক্ষ্য করা যায়।
পর্যটন মন্ত্রণালয় ও লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসনের অর্থায়নে দিঘীর উত্তর ও পশ্চিমের একাংশ প্যালাসাইটিং দিয়ে পর্যটকদের বসার ব্যবস্থা করা হয়। এজন্য কয়েকটি পাকা বেঞ্চ নির্মাণ করা হয়। সৌন্দর্য রক্ষার্থে একটি গোলঘর নির্মাণ করা হয় দিঘীর পশ্চিম পাড়ে। এছাড়া বসার জন্য বেশ কয়েকটি পাকা বৃত্তাকার বেঞ্চ রয়েছে। বসার স্থানে সড়কের পাশে ১৩টি সোলার ল্যাম্পপোস্ট লাগানো হয়। এতে রাতেও দিঘীর সৌন্দর্য মানুষের মন কাড়ে। আর দিঘীর পাড়ের দক্ষিণা বাতাস মানুষকে প্রশান্তির শহরে ভাসিয়ে নেয়।
তবে দুঃখের বিষয় পর্যটকদের অসেচতনতার কারণে সৌন্দর্য হারাতে পারে ঐতিহ্যবাহী দিঘীটি। বসার জন্য দেওয়া পাকা বৃত্তাকার বেঞ্চের মাঝখানে ময়লা ফেলে তা নোংরা করে রাখা হচ্ছে। খাবার পলিথিন ও খোসা ফেলা হচ্ছে দিঘীর পানিতে।
এভাবে চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে পরিষ্কার পানি দূষিত হয়ে কালো আকার ধারণ করবে। পানি থেকে দুর্গন্ধও ভেসে আসবে। কারণ ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট স্থান থাকলেও সচেতনতা কাজ করছে না অধিকাংশ পর্যটকদের মধ্যে। একটু খেয়াল করলেই দেখা যায়, প্রত্যেকটি ল্যাম্পপোস্টের নিচে ময়লা ফেলার জন্য ড্রাম দেওয়া রয়েছে। তবুও কেউ নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলছে না।
সূত্র জানায়, ১৩৬৭.৫৯ বর্গকিলোমিটারের ছোট্ট জেলা লক্ষ্মীপুর। এই জেলার ৪টি উপজেলাই মেঘনা নদী বেষ্টিত। ইতিমধ্যে মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকা পর্যটকদের মন জয় করে নিয়েছে। রয়েছে জমিদার বাড়ি। ঈদসহ বিভিন্ন ছুটিতে এসব এলাকায় পর্যটকদের ভিড় দেখা যায়।
বিশালতার কারণে দিঘীর এক পাশ থেকে অন্যপাশে কুয়াশাচ্ছন্ন দেখাতো। যে কারণে এর নামকরণ করা হয় খোয়া সাগর দিঘী। জনশ্রুতি রয়েছে দুই শতাধিক বছর পূর্বে আশপাশের এলাকা মাটি ভরাট এবং মানুষের জন্য ব্যবহারিক পানি সংরক্ষণের প্রয়োজনে দালালবাজারের জমিদার ব্রজবল্লভ রায় দীঘিটি খনন করান। জেলার বাসিন্দারা ছাড়াও বাইরের মানুষ এই দিঘীর সৌন্দর্য দেখতে আসেন। আর জেলা শহরের মানুষগুলোতো প্রতিদিন বিকেলে ছুটে যান দিঘীর পাড়ে।
পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বাবু বলেন, প্রকৃতির সৌন্দর্য ধরে রাখতে প্রয়োজন মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি। তাহলেই প্রকৃতি আলো ছড়াবে। মানুষের সচেতনতার মাধ্যমেই প্রকৃতি আরও সুন্দর হয়ে উঠবে। কোন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রয়োজন নেই, নিজেকেই সমাজ ও প্রকৃতির সেবক হিসেবে কাজে লাগাতে হবে।