গ্রামীণ রাস্তা বা কোনো শহর উপ শহরের রাস্তার কাজের মান নিয়ে দীর্ঘ দিনের অভিযোগ থেকে পরিত্রাণ দিতে বদ্ধপরিকর স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, ৬০ ভাগ বা ৮০ ভাগ নয় শতভাগ মান সম্পন্ন কাজ করতে হবে। কাজের মান নিয়ে কোনো কম্প্রোমাইজ করব না। এজন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। যারা সারাদেশের কাজের মান পর্যবেক্ষণ করবে। এখানে কেউ অনৈতিক সুবিধার আশ্রয় নিয়ে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা থাকবে।
মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) রাতে বার্তা২৪.কম আয়োজিত ‘বন্যা ও করোনা পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কতটা প্রস্তুত স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়’ শীর্ষক লাইভ অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে একথা বলেন এলজিআরডি মন্ত্রী। বার্তা২৪.কম এর সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট শাহজাহান মোল্লার সঞ্চালনায় লাইভ অনুষ্ঠানে মন্ত্রী দেশের বন্যা পরিস্থিতি ও করোনা পরিস্থিতি নিয়ে নানা প্রশ্নের জবাবে দেন।
গ্রামীণ রাস্তার কাজ নিয়ে অভিযোগের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমি স্থানীয় সরকার বিভাগের সকল নির্বাহী প্রকৌশলদের নিয়ে বৈঠক করেছি। সেখানে কিছু নির্দেশনা দিয়েছি। আমি রাস্তা নির্মাণ করা আগে রাস্তার পাশে মানকি হ্যামার দিতে বলেছি। তাছাড়া বিটুমিনের থিকনেস ঠিক রাখার জন্য যা করার সেগুলো করতে হবে। অনেকেই সেটা করেন না, যেন তেন ভাবে করে রাখে। এরকম কোন অভিযোগের সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা নকশার পরিবর্তন করেছি যেটা এখন পরিকল্পনা কমিশনে অনুমোদনের অপেক্ষায়। ভাল বিটুমিন দিয়ে কাজ করতে হবে। এত কিছু বলার পরেও কেউ যদি অনৈতিকতার সাথে সম্পৃক্ত হয়, দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত হয় বা খারাপ কাজ করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রকৌশলীদের কেউ কেউ চাপের কথা বলেছেন। আমি বলে দিয়েছি কেউ চাপ দিলে আমাকে বলবেন, আর তাদের বলে দিতে হবে যদি খারাপ কাজ করি তাহলে তার চাকরি থাকবে না। ভাল কাজ করলে স্যালুট খারাপ কাজ করলে শাস্তি আমি এই নীতিতে বিশ্বাস করি। আমার এলাকাতেও সুশাসন কায়েম করতে চাই। সেখানে আমার আত্মীয় স্বজন হোক আর যেই হোক যে ভাল কাজ করবে তাকে স্যালুট আর যে খারাপ করলে আত্মীয় হলেও ছাড় নয়।
মানুষের মুখের কথায় যে কাজ দেওয়া হয় তার ৬০ ভাগ কাজও যদি যথাযথভাবে করে তাতেও কাজের মান এত খারাপ হয় না এর সঙ্গে আপনি একমত কি না? ৬০ ভাগ কেন করবে? শতভাগ করবে। এটা তো কোন কথা হলো না ৬০ ভাগ করবে, ৮০ ভাগ করবে। যে কন্ট্রাকটারকে কাজ দেওয়া হয় সেখানে তার লভ্যাংশ ধরা হয়, কিছু মিসম্যাচ ধরেই কাজ দেওয়া হয়। সেখানে ৬০ ভাগ কেন করবে। শতভাগ করলে লভ্যাংশ পাবে না করলে পাবে না। কাজের মান যাচাই করার জন্য আমরা ২০টা টিম করেছি। অল্প দিনের মধ্যে অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে আর একটা উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন টিম করা হবে। যারা সারা দেশে কাজগুলো সুপারভাইজ করবে। আমি বলে দিয়েছি শতভাগ কোয়ালিটি দিতে হবে।
রাস্তা আছে তো ব্রিজ নেই, আবার ব্রিজ আছে তো রাস্তা নেই এমন কেন হয়? মন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন সময়ে কিছু কিছু অপরিকল্পিত কাজ যে হয় নাই তা না। হাজারটা কাজের মধ্যে দুই একটা হয়েছে। দেখা গেছে ব্রিজগুলো এমন জায়গায় করা হয়েছে যেটা করার দরকার ছিল না অথবা এমনভাবে করা হয়েছে সেখানে রাস্তাই এখন করা যাচ্ছে না। এরকম কিছু কিছু ঘটনার সম্পর্কে আমি নিজেও অবহিত। তবে ওই সকল কাজ জনকল্যাণমুখী করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বলে দিয়েছি যত্রতত্র আর কোন ব্রিজ করা যাবে না।
মন্ত্রী বলেন, খাল নদীর নাব্যতা রক্ষা করেই সকল পরিকল্পনা নিতে হবে। এজন্য নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সমন্বয় করে প্লানগুলো করবে। যদি কোথও কোন ব্রিজ ভাঙার প্রয়োজন হয় তাহলে অবশ্যই সেটা ভাঙতে হবে। আর এখন কোথাও কাজ হাফডান করে রাখা যাবে না। আমরা টাইম লাইন দিয়ে দিতে বলেছি কোন কাজ কবে শেষ হবে। সেভাবেই পরিকল্পনা দিতে হবে। কেউ অর্ধেক কাজ করে ফেলে রাখবে এটি আর হবে না।