চারদিকে পুকুর খনন করে মৎস্য চাষ করায় রংপুরের পীরগাছায় দাদন গুচ্ছগ্রামটি ভাঙনের মুখে পড়েছে। এরইমধ্যে ধসে পড়েছে গুচ্ছগ্রামে চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি। ফলে এখনই ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে পুরো গ্রাম পুকুরে ধসে যাওয়ার আশঙ্কা করছে বাসিন্দারা।
সোমবার (১৭ আগস্ট) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দাদন গুচ্ছগ্রামে ৩০টি পরিবারের বসবাস। গুচ্ছগ্রামের চারদিকে পুকুর। সামনের দিকে পুকুরের পাড় ভাঙতে ভাঙতে চলাচলের রাস্তা ধসে পড়েছে। পেছনের দিকে ভাঙন বেশিরভাগ ঘরের এক থেকে দুই হাতের মধ্যে চলে এসেছে। পাড় ভেঙে পানিতে ধসে পড়েছে গুচ্ছগ্রামের গাছ। গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা নিজ উদ্যোগে বালুর বস্তা ফেলে ঘরসহ রাস্তা রক্ষার চেষ্টা করছে।
আশ্রিতদের অভিযোগ, গুচ্ছগ্রামে ঘর বরাদ্দের পর থেকে এ পর্যন্ত কেউ তাদের আর খোঁজ নেয়নি। সরকারিভাবে তাদের কোনো সহযোগিতা করা হয়নি। বর্তমানে গুচ্ছগ্রামের ঘরগুলো বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে পরিবারগুলো চরম দুর্ভোগে পড়ে। গুচ্ছগ্রামের সংস্কারেও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে দরিদ্র এ পরিবারগুলো কোনো পুনর্বাসন সহায়তা না পাওয়ায় মানবেতর জীবন যাপন করছে।
গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা আমেনা বেগম বলেন, ‘ভাবছিনু গুচ্ছগ্রামে থাকলে সরকার হামার খবর নেবে। হামরা সবাই ভাল থাকমো। একন তো কায়ো হামার খোঁজ নিবার আইসে না।’
আরেক বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভাঙন এখন ঘরের কাছাকাছি চলে এসেছে। গুচ্ছগ্রামটি তৈরির সময় পুকুরের পাড় ১০ থেকে ১২ ফুট দূরে ছিল। কিন্তু প্রতি বছর বর্ষায় পুকুরের পাড়ে ব্যাপক ভাঙন দেখা দেয়। আমরা বালুর বস্তা দিয়ে বারবার ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছি। চারদিকে একসাথে ভাঙনের কারণে আমরা আর শেষ সম্বলটুকু রক্ষা করতে পারছি না।’
কান্দি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘গুচ্ছগ্রামটি দীর্ঘদিন আগে নির্মাণ করা হলেও সংস্কার করা হয়নি। তাই গুচ্ছগ্রামের সংস্কার জরুরি হয়ে পড়েছে।’
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আব্দুল আজিজ বলেন,‘বিষয়টি আমার জানা নেই। গুচ্ছগ্রামটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’