স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, আমিন বাজারে যেখানে বর্জ্য রাখা হয়েছে সেখানে ইকো পার্ক করার পরিকল্পনা আছে। এখানে ৫০ মিলিয়ন টন বর্জ্য জমা আছে। বর্জ্য পুড়িয়ে ফেলব, তখন জায়গা খালি হয়ে যাবে। আর কোথাও স্তুপ আকারে বর্জ্য রাখার দরকার হবে না। এই জায়গাটাতে ইকো পার্ক করব।
শনিবার (২২ আগস্ট) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের গাবতলী কাঁচাবাজার ও ডিএনসিসির অস্থায়ী যান্ত্রিক ওয়ার্কশপ পরিদর্শন এবং সেখান থেকে আমিনবাজার ল্যান্ডফিল্ড পরিদর্শন শেষ মন্ত্রী একথা বলেন। এসময় পাশে ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাচ্ছে সরকার। এজন্য এরইমধ্যে একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা হয়েছে। বর্জ্য নিষ্পত্তি করার জন্য আমরা ইনসিনারেশন প্লান্ট স্থাপন করব। বর্জ্য পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে।
তিনি বলেন, নাগরিকের উন্নত জীবনের জন্য পরিচ্ছন্ন নগরী অপরিহার্য। ঢাকা শহরকে একটা পরিচ্ছন্ন নগরীতের রূপান্তর করার জন্য সিটি করপোরেশনের সঙ্গে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় যৌথভাবে কাজ করছে। আমাদের ইনসিনারেশন প্লান্ট স্থাপন হবে, সেখানে বর্জ্যকে পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে।
তিনি বলেন, বর্জ্য স্বাভাবিকভাবে সৃষ্টি হবে। সেই বর্জ্যকে যদি নিষ্পত্তি করতে না পারি তাহলে বর্জ্য স্তুপ আকারে রাখার মতো এমন জায়গা বাংলাদেশে পাওয়া অসম্ভব। শুধু তাই না যদি কোথাও স্তুপ আকারে রাখা হয় সেখান থেকে বায়ু দূষণ হবে এবং রোগ জীবাণুর সৃষ্টি হবে। যে কারণে স্বাভাবিকভাবেই আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্লান্ট প্রতিষ্ঠা হবার পর সেখানে যে সমস্ত ধোঁয়া নির্গত হবে তাতে কোনো রকম দূষণ হবে না।
মন্ত্রী বলেন, প্লান্টটা এমন আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে করা হবে। সেখান থেকে যে বায়ু নির্গত হবে তা আমাদের স্বাভাবিক বাতাসে যে পরিমাণ কার্বন, নাইট্রোজেনসহ অন্যান্য উপাদান আছে তার চেয়ে বেশি হবে না। সেখান থেকে যে পানি বের হবে, সেই পানিটাও ড্রিংকিং ওয়াটারের মত তৈরি করা হবে। এরপর অবশিষ্ট বর্জ্য দিয়ে রাস্তার ব্লক টাইলস বানাবে। অর্থাৎ এখানে যা ঢুকবে আর কিছুই বের হবে না। জিরো হয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এটা যদি করতে পারি তাহলে বর্জ্য আর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকবে না। এটা সম্পূর্ণরূপে পরিবেশবান্ধব করা হবে।
যেখানে সেখানে বর্জ্য পড়ে থাকে এবিষয়ে মন্ত্রী বলেন, যেহেতু এই বর্জ্যগুলোকে আমরা নিষ্পত্তি করতে পারছি না। যার ফলে রাখার জায়গার বাইরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ছে। বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্লান্ট বাস্তবায়িত হলে আমাদের দৈনিক যে পরিমাণ বর্জ্য উৎপাদন হচ্ছে সেটাও যেমনিভাবে নিষ্পত্তি করা হবে। তেমনিভাবে এখান থেকেও কিছু কিছু বর্জ্য প্রতিদিন নতুন বর্জ্যের সঙ্গে মিলিয়ে পুড়িয়ে ফেলবে।
মন্ত্রী বলেন, একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। আমরা সময় দিয়েছি ১৮ মাস ওরা ২০ মাস সময় চেয়েছে। আমরা বলেছি যেদিন চুক্তি হবে এরপর থেকে ১৮ মাসের মধ্যে প্লান্ট স্থাপন করতে হবে। সেখান থেকে প্রতিদিন ৩৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। প্রায় ১৩৪ একর জায়গার ওপর নির্মিত হবে বিশাল এই প্লান্টটি। এতে রাজধানী ও আশাপাশের বর্জ্য নিঃশেষ হবে। রাজধানীতে বর্জ্যের শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।