৭শ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে আম বিক্রি, অনলাইনে ৯ কোটি

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী | 2023-08-26 01:27:50

ভাদ্র মাসের শেষ সপ্তাহে রাজশাহীতে প্রায় শেষ হয়ে গেছে আম। বাজারে আশ্বিনা জাতের যে আম পাওয়া যাচ্ছে, সেটাও চলতি সপ্তাহের পরে আর দেখা মিলবে না। ফলে আশ্বিন মাস আসার আগেই এবার শেষ হয়ে যাচ্ছে আমের মৌসুম। অথচ আশ্বিন মাসে পাকে বলেই আমটির নামকরণ করা হয়েছিল- ‘আশ্বিনা’!

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, একেবারে শেষ সময়ে আশ্বিনা জাতের আম বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে। আর চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে এনে ঝিঁনুক জাতের কিছু আমও রাজশাহীর বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। সেগুলোর দাম কেজি প্রতি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা।

ফলে বিদায় বেলায় মোকামের হিসাব-নিকাশও শেষ করেছেন ব্যবসায়ীরা। হিসাব রাখছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরও। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে আড়ত-মোকাম মালিকদের সাথে কথা বলে মৌসুমে আম বেচাকেনা মোট পরিমাণ বের করার চেষ্টা করছেন অধিদফতরের কর্মকর্তারা।

সেই হিসাব অনুযায়ী- এবার ৭০০ কোটি টাকারও বেশি আমের বেচাকেনা হয়েছে। আর করোনাকালীন সময়ে অনলাইনে রাজশাহী থেকে ৯ কোটিরও বেশি টাকার আম দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ডেলিভারি করেছেন তরুণ উদ্যোক্তারা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামসুল হক বার্তা২৪.কম-কে বলেন, এ মৌসুমে ৭০০ কোটি টাকার আম বেচাকেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তথ্য অনুযায়ী- সেটা একমাস আগেই ছাড়িয়ে গেছে। ঈদের পর থেকে আশ্বিনাসহ বিভিন্ন জাতের যেসব আম বিক্রি হয়েছে সেটাও প্রায় ৬০/৭০ কোটি টাকার। সেই হিসাবও আমরা সংগ্রহ করছি।

আশ্বিনা জাতের আম

তিনি বলেন, ‘আম্পানে এবার বড় ক্ষতি হয়ে গেছে। প্রায় ১৫০ কোটি টাকার আম ঝরে পড়েছে। তা না হলে রাজশাহীতে এবার আমের বেচাকেনা ১ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতো। তবুও দাম ভাল থাকায় কোন বাগান মালিক বা ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। সবাই লাভবান হয়েছে। আম পরিবহণেও কোন ভোগান্তি পোহাতে হয়নি।’

এদিকে, কৃষি অধিদফতরের তথ্যমতে- এবারই সবচেয়ে বেশি অনলাইনে আম বেচাকেনা হয়েছে। ১১০/১১৫টি গ্রুপ অনলাইনে আম সরবরাহ করেছেন। তারা বেশিরভাগই বয়সে তরুণ এবং কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তারা পুরো মৌসুম জুড়ে আম সরবরাহ করে লাভবান হয়েছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী রাজু আহম্মেদ ও তার বন্ধুরা মিলে মে মাস থেকে জুলাই পর্যন্ত অনলাইন আম বিক্রির কাজ করেছেন। তিনি জানান, তারা প্রায় ৫০০ মণ আম অনলাইনে বিক্রি করেছেন। তিন মাসে তারা প্রত্যাশার চেয়ে বেশি টাকা লাভবান হয়েছেন।

আব্দুস সালাম নামে আরেক শিক্ষার্থী জানান, এবার প্রথম তিনি ও তার দুই বন্ধু মিলে অনলাইনে আমের অর্ডার এবং ডেলিভারি করেছেন। শেষ দিকে আমের দাগ ও পোকার কারণে সরবরাহ বন্ধ রাখেন। তবুও প্রায় ৮৫০ মণ আম বিক্রি করেছেন।

নতুন উদ্যোক্তারা আগামী মৌসুমেও অনলাইনে আম বেচাকেনায় যুক্ত থাকার ব্যাপারে আশাবাদী। তবে কুরিয়ার চার্জ কমানোর জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণের কর্মকর্তা শামসুল হক বলেন, ‘চলতি বছরই আমরা কুরিয়ার প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে কথা বলেছিলাম, চার্জ আরও কিছুটা কমানোর জন্য। তবে তারা রাজি হয়নি। আগামী বছর মন্ত্রণালয় থেকেই কোন সুপারিশ অনুমোদন করিয়ে আনা যায় কিনা সে ব্যাপারে আমরা সচেষ্ট থাকবো।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর