গাইবান্ধার জামালপুর ইউনিয়নে ঘাঘট নদীর তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। অব্যাহত ভাঙনের ফলে বেশ কিছু ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি বিলীন হয়েছে নদীগর্ভে।
সরেজমিনে বুধবার (২১ অক্টোবর) সকালে জামালপুর ইউনিয়নের পাতিল্যাকুড়া-চকদাড়িয়া (উত্তরপাড়া) নামকস্থানে দেখা যায় নদী ভাঙনের চিত্র। এসময় ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান মণ্ডলকে পরিদর্শন করতেও দেখা গেছে।
জানা যায়, গত সেপ্টেম্বর মাসে জামালপুর ইউনিয়নে ভয়াবহ বন্যা হয়েছে। সম্প্রতি পানি কমতে থাকায় শুরু হয়েছে ঘাঘটের অব্যাহত ভাঙন। এ ভাঙনের কবলে ইতিমধ্যে খবির উদ্দিন, জরিপ মিয়া ও দফির উদ্দিনের ১০টি ঘরবাড়ি চলে গেছে নদীগর্ভে। একই সঙ্গে ফসলি জমিও বিলীন হয়েছে অনেকের।
এছাড়া সাহেব উদ্দিন, আফছার আলী ও সামাদ মুন্সীর বাড়িসহ আরও অন্তত শতাধিক বসতবাড়ি হুমকির মুখে পড়েছে। হুমকির সম্মুখীন এসব পরিবারের মানুষরা ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে অন্যত্র। নদী ভাঙনের শিকার মানুষদের মধ্যে অনেকে আশ্রয় নিয়েছে আত্নীয়-স্বজনদের বাড়িতে। আবার কেউ কেউ আশ্রয় নিতে শুরু করেছে অন্যের জমিতে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগী মানুষগুলো দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এ পর্যন্ত সরকারি কিংবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কোনো সহায়তা মেলেনি তাদের। পাতিল্যাকুড়া-চকদাড়িয়া (উত্তরপাড়া) নামকস্থানে নদী ভাঙন প্রতিরোধের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনো কাজ হয়নি বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
ক্ষতিগ্রস্ত খবির উদ্দিন নামের এক বৃদ্ধ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, দরিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে সংসার চালিয়ে আসছিলাম। এরই মধ্যে ঘাঘট নদীর ভাঙনে বিলীন হয়েছে ঘরবাড়ি। ফলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করতে হচ্ছে। এখন পর্যন্ত সরকারি সহায়তা পাওয়ায় দুর্বিসহ জীবন-যাপন করছি।
সফুরা বেওয়া নামের আরেক বৃদ্ধা বলেন, ঘাঘট নদীর ভাঙনে ঝুঁকিতে রয়েছে বসতবাড়ি। যে কোনো মুহূর্তে চলে যেতে পারে নদীর পেটে। এ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়ছি।
জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান মণ্ডল বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করার পাশাপশি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে।