সবুজ ক্ষেত জুড়ে শুধু লাউ আর লাউ। আর এই লাউয়ের আবাদ করেই লাখপতি বনে গেছেন কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার বলিদাপাড়া এলাকার বাসিন্দা ওয়াসিম। চলতি মৌসুমে লাউ চাষে করে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন তিনি। তার এই সফলতা দেখে অনেকেই লাউ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
জানা যায়, ওয়াসিম পড়াশোনা শেষ করার পর বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি শুরু করেছিলেন। করোনাকালীন সময়ে চাকরি চলে যাওয়ায় নিজের গ্রামে ফিরে আসেন তিনি। বাড়িতে ফিরে এসে বসে না থেকে বড় ভাইয়ের পরামর্শে শুরু করেন লাউ চাষ।ফলন ভালো হওয়ায় লাভবান হন তিনি। তার এই লাউয়ের জমিতে কাজ করে বেশ কয়েকজন শ্রমিক তাদের জীবিকা নির্বাহ করছেন।
ওয়াসিম বলেন, দুই বিঘা জমি ইজারা নিয়ে লাউয়ের চাষ শুরু করি। লাউয়ের চাষ করতে প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আর এখন পর্যন্ত এই জমি থেকে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছি। আরও যে পরিমাণ লাউ জমিতে আছে সেখান থেকে ৫০ হাজার টাকারও বেশি বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করছি।
ওয়াসিম আরও বলেন, ছোটবেলায় বড় ভাইয়ের সবজি বাগানে লাউসহ বিভিন্ন সবজি চাষের ব্যাপারে অভিজ্ঞতা লাভ করি। এমএ পাস করে ঢাকায় গিয়ে চাকরি করি। কিন্তু করোনার সময়ে চাকরি চলে যাওয়ায় আবার গ্রামে ফিরে আসি। তখন দেখলাম পুরনো জ্ঞান কাজে লাগিয়ে কৃষি অফিসারের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে হাইব্রিড জাতের লাউয়ের চাষ শুরু করি। এরপর প্রয়োজনীয় কীটনাশক ও সারের ব্যবহার করি।
তিনি বলেন, আমার লাউ চাষের জমিতে শ্রমিকদের সাথে আমি নিজেও কাজ করি। তবে আমার লাউ ক্ষেতে রাসায়নিক সার ব্যবহারের পাশাপাশি আমাদের দেশীয় সবুজ সারের ব্যবহার করি। আর এইসব সার প্রয়োগের ফলেই আমার লাউয়ের ফলন ভালো হয়েছে।
মিরপুর উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাহিরুল ইসলাম জানান, এই অঞ্চলে ওয়াসিম লাউ চাষে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তার দেখাদেখি অনেকেই লাউ চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এ অঞ্চলে আগামী বছর লাউ চাষের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাবে। লাউ চাষের ব্যাপারে আমরা কৃষকদের বিভিন্ন উপায়ে সহযোগিতা করে যাচ্ছি। কৃষকরা লাউ চাষের ব্যাপারে আমাদের সাথে যোগাযোগ করলে আমরা তাদের সহযোগিতা করবো।