রাতের আধাঁরে পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে গাজীপুর সদরের এক মৎস্য খামারির বিপুল পরিমাণ মাছ নিধন করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে ৮ লক্ষাধিক টাকার মাছ মারা গেছে বলে দাবি করেছেন খামারি। অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
গত সোমবার (৫ এপ্রিল) গাজীপুর সদর উপজেলার আতুরী গ্রামে মো. মুনসুর আলী সরকারের মৎস্য খামারে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর আগে ‘দেশ গড়ি মৎস্য খামার’ প্রতিষ্ঠা করেন আতুরী গ্রামের মো. মুনসুর আলী সরকার। নিজের ৩টি ও এলাকার ৪টি পুকুর লিজ নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ মাছ চাষ করে আসছিলেন তিনি। পুকুরটি গ্রাম অঞ্চলে হওয়ায় দেশি প্রজাতির মাছের সংখ্যাই বেশি। রুই, মৃগেল, কাতল, চিতল, তেলাপিয়া, আইড়, শোল, টেংড়া, শিং, মাগুরসহ ২০-২৫ প্রজাতির মাছ চাষ করা হয় তার খামারে।
গত সোমবার রাতে কিংবা মঙ্গলবার ভোরে দুর্বৃত্তরা ২টি পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে। এতে মঙ্গলবার সকাল থেকে মরা মাছ পানিতে ভাসতে দেখা যায়। মরা মাছের মধ্যে রুই, কাতল, চিতল, টেংড়া ও শিং মাছের সংখ্যাই বেশি। এ ছাড়া পুকুরে নেমে বিষক্রিয়ায় প্রতিবেশীদের হাঁসের বাচ্চা মারা গেছে।
ভুক্তভোগী মো. মুনসুর আলী সরকার ও তার ভাই বাবুল সরকার জানান, তারা দীর্ঘদিন যাবৎ এখানে মাছ চাষ করছে। পুকুরে বিষ প্রয়োগে তাদের ৮ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। তাদের ক্ষতিগ্রস্থ করতে এলাকার এমরান সরকার, রুহুল আমিন ভুঁইয়া ও লাহিদ হোসেন ভুঁইয়া এসব করেছে। পুকুর পাড়ে তাদের রেখে যাওয়া রাসায়নিক বিষের একটি ব্যাগ পাওয়া গেছে। ঘটনার পর তাদের বিরুদ্ধে জয়দেবপুর থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
তারা আরও জানান, ঘটনার ৭-৮ দিন আগে অভিযুক্তরা সুযোগ মত মৎস্য খামারের ক্ষতি করার হুমকি দিয়েছিল। এর আগেও বেশ কয়েকবার আমাদের মৎস্য খামার দেখে ঈর্ষান্বিত হয়ে তারা ক্ষতির চেষ্টা করেছে। নানা হুমকি দিয়েছে। পরে ২০২০ সালের ১১ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে জয়দেবপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি নম্বর ৪০৪) করা হয়। জিডির পর তারা আরও বেশি ক্ষীপ্ত হওয়ায় স্থানীয় মাতব্বররা বিষয়টি নিয়ে সালিস-দরবার করেন। কিন্তু অভিযুক্তরা গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কর্ণপাত না করে পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে মৎস খামারের ক্ষতি করেই ছাড়ল।
আমতলী ফাঁড়ির আইসি পরিদর্শক দুলাল সরকার জানান, মাছ নিধনের ঘটনায় ভুক্তভোগীরা জয়দেবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। এরপর তাৎক্ষণিক আমতলী ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। প্রাথমিক তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।