কাপ্তাই হ্রদে মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিত করতে পুরো হ্রদের বিভিন্ন এলাকার আটটি অংশকে অভয়াশ্রম ঘোষণা করে সরকার। কিন্তু এসব অভয়াশ্রমগুলোতে মৎস্যসম্পদ সুরক্ষিত রাখতে হিমশীম খাচ্ছে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) কর্তৃপক্ষ। কিছু অসাধু মৎস্য ব্যবসায়ীদের প্রত্যক্ষ মদদে অবৈধ মৎস্য শিকারীরা প্রায় প্রতিদিনই অভয়াশ্রমগুলোতে মাছ শিকার করছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
এদিকে স্বল্প জনবল ও প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সার্পোট না থাকায় এসব অবৈধ জেলে ও মাছ শিকারীদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে অনেকটাই হিমশীম খাচ্ছে বিএফডিসি কর্তৃপক্ষ। সরকারিভাবে পর্যাপ্ত নজরদারির ব্যবস্থা করতে না পারায় অভয়াশ্রমগুলো থেকে প্রতিদিনই বড় বড় মা-মাছগুলো ধরে নেওয়া হচ্ছে।
রাঙামাটি শহরের উপকন্ঠেই ফিসারি বাঁধ, গর্জনতলী, ডিসি বাংলো সংলগ্ন এলাকা, ট্রাক টার্মিনাল, পোড়াপাহাড়ের পেছনের হ্রদ, রাজবাড়ি এলাকাজুড়েই প্রতিদিনই বড়ষি, অবৈধ জাঁক ও জাল দিয়ে মাছ ধরে অবৈধ মৎস্য শিকারীরা। প্রতিদিনই এসব এলাকা থেকে বড় বড় রুই/কাতল, বোয়াল মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির ডিমওয়ালা মাছ ধরে স্থানীয় বাজারগুলোতে বিক্রি করছে অসাধু ব্যবসায়ীরা।
বিএফডিসি’র উপব্যবস্থাপক জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এসব অবৈধ শিকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিদিনই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। বিএফডিসির ব্যবস্থাপক তৌহিদুল ইসলাম স্যারের নির্দেশনায় আমরা আমাদের সাধ্যমতো প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসছি। বিশাল এলাকাজুড়ে সময়মতো পৌঁছানোর আগেই অনেকেই সটকে পড়ে, তারপরও আমরা বিভিন্ন ধরনের জাল ও বরশি থেকে শুরু করে নৌ-যানও জব্দ করে নিয়ে আসি।’
তিনি আরও বলেন, ‘শুক্রবারের মতো ছুটি দিনেও আমরা বসে থাকিনি। বিএফডিসি অফিসের পেছনে কাপ্তাই হ্রদে ভেসে উঠা চরে এবং বাঁধের বিভিন্ন অংশে অভিযান চালিয়ে শতাধিক বড়ষি জব্দ করেছি।’
উপব্যবস্থাপক জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘হ্রদ পাড়ের মানুষ তাদের নিজেদের জন্যই কাপ্তাই হ্রদকে তথা হ্রদের মৎস্য সম্পদ রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে। স্থানীয় জনসাধারণ যদি আমাদেরকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা না করে তাহলে একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই ধরনের অবৈধ মাছ ধরা বন্ধ করা খুবই কষ্টসাধ্যও বটে।’
কাপ্তাই হ্রদেও মৎস্য সম্পদ রক্ষায় অবৈধ মৎস্য শিকারী ও অসাধু ব্যবসায়িদের বিরুদ্ধে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার আহবান জানিয়ে উপব্যবস্থাপক জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা তথ্য প্রদানকারীর নাম ও ঠিকানা গোপন রাখবো।’