নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ বর্তমানে কার্যত দু’ভাগে বিভক্ত। দলীয় নেতাকর্মীদের ছোট একটি অংশকে সাথে নিয়ে প্রায় হুংকার ছাড়েন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। অপরদিকে, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে অধিকাংশ নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ।
এ উপজেলার রাজনীতি এখন পাল্টাপাল্টি হামলা, মামলা, হানাহানি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাল্টাপাল্টি স্ট্যাটাস নির্ভর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব স্ট্যাটাস স্থানীয় রাজনীতিতে বাড়তি একটি মাত্রা যোগ করে। আমার এসব কর্মকান্ড নিয়ে চায়ের আড্ডায় চলে অনেক রসালো গল্প। তবে শান্তি এবং স্বস্তিতে নেই এ উপজেলার সর্ব স্তরের মানুষ। তারা ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের হানাহানি কাটাকাটি ও ফেইসবুকে পাল্টাপাল্টি কঠিন বাক্যবাণে জর্জরিত।
বুধবার দিবাগত রাত ১টায় কাদের মির্জা তার নিজ ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি স্ট্যাটাস দেন। ওই স্ট্যাটাসের এক ঘণ্টা ২৫ মিনিট পর পাল্টা স্ট্যাটাস দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জানুর রহমান বাদল।
কাদের মির্জার স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন, ‘আমার ছেলে তাশিক মির্জাকে তৎকালীন ওসি তদন্তের রবিউল এর উপস্থিতে থানার সামনে সন্ত্রাসীরা পাইপগান দিয়ে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে চৌছির করে রক্তে রঞ্জিত করেছে। ওই সব সন্ত্রাসী হলো- কিলার বাদল, কিলার রাহাত, কিলার আকরাম উদ্দিন সবুজ, কিলার রুমেল, কিলার রিমন, কিলার কচি, কিলার মঞ্জু। এদের নেতৃত্বে শতাধিক সন্ত্রাসী উপস্থিত ছিল। ওই দিন একটি ভিডিওতে দেখা যায় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তারকে সন্ত্রাসীরা হুমকি দিয়ে বলছে, মির্জার ছেলেসহ তার কোনো লোককে চিকিৎসা দিবে না। সন্ত্রাসীরা ডাক্তারদের অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে আমরা অন্য স্থান থেকে ডাক্তার এনে চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। অন্য দিকে ওসি রনি ওই মূহুর্তে আমার অফিসে এসে আমার নেতা কর্মীদের অবরুদ্ধ করে রাখে যেন কেউ বাহিরে না যেতে পারে। আমার ছেলেকে আহত করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনও আসামি গ্রেফতার হয়নি। আমার ছেলেকে যারা রক্তাক্ত করেছে ওই সব সন্ত্রাসী আজ রাত ১০টার সময় থানার সামনে এবং পুরো বাজারে অস্ত্র নিয়ে সুসজ্জিত হয়ে অস্ত্র মহড়া দিচ্ছে। সন্ত্রাসীরা আমার নেতা কর্মীদের মারার জন্য বাজারে অবস্থান নেয়। অতচ পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যারা আমার ছেলেকে রক্তাক্ত করছে তাদের গ্রেফতার করা না হলে যেকোন পরিস্থিতির জন্য আমি দায়ী থাকবো না। আবদুল কাদের মির্জা, মেয়র বসুরহাট পৌরসভা।’
অন্যদিকে বাদল তার স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন, ‘আ কা মির্জার এই পোস্ট থেকে আমি নিশ্চত হলাম সে এখন পালিয়ে যেতে চাচ্ছে। এছাড়া অবশ্যই আর কোন উপায়ও নেই। একটা অঘটন সে ঘটাবে, আর জেলে যাবে এবং সেখান থেকে মুক্তি নিয়ে সে আমেরিকায় তার দ্বিতীয় আবাসস্থলে চলে যাবে। নতুবা সে যাদের দিয়ে অপকর্ম করিয়েছে তারা তাকে যেতে দিবেনা। তাই আমি বলবো তোমরা দ্রুত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে আত্নসমার্পন কর। নতুবা গণরোষের শিকার হতে পার।’