ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) কোনও দালালি-দখলবাজির সুযোগ হবে না বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
বুধবার (২ জুন) দুপুরে নগর ভবনের ব্যাংক ফ্লোরে করপোরেশনের তেলেগু সম্প্রদায়ের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের মধ্যে ‘পরিচ্ছন্নকর্মী নিবাস’র বরাদ্দপত্র ও চাবি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ মেয়র তাপস বলেন, ‘তেলেগু সম্প্রদায়ের মধ্যে পরিচ্ছন্ন কর্মী নিবাসের চাবি হস্তান্তরের মাধ্যমে আজ থেকে দালাল চক্রের অবসান ঘটলো। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে এখন থেকে আর দালালি করার সুযোগ পাওয়া যাবে না। যারা ন্যায্য দাবিদার, যারা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে কর্মরত পরিচ্ছন্নকর্মী, তারাই এ বাসার হকদার। তারাই এ বাসাগুলো পাবে। কোনও হকদার যেন বঞ্চিত না হয়, আমরা সেটা নিশ্চিত করবো।’
তিনি বলেন, ‘এরকম উদাহরণ আছে, বাসা বরাদ্দ পায় একজন আর গিয়ে দখল করে আরেকজন। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এখন থেকে আর কোনও দখলবাজি চলবে না। যারা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে কর্মরত শুধু তারাই বাসা পাবে।’
গৃহ ছাড়া যেন কেউ না থাকে সেটাই মুজিববর্ষের অঙ্গীকার উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ‘আপনাদের একটি বিষয় উপলব্ধি করতে হবে, যেকোনও সংস্থা বা যেকোনও প্রতিষ্ঠান যখন আবাসনের ব্যবস্থা নেয় বা উদ্যোগ গ্রহণ করে প্রথমে প্রাধিকার কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দের। পরবর্তীতে অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ তারপরে আসে কর্মচারী। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের অবহেলিত তেলেগু, হরিজন, দলিত সম্প্রদায়কে আগে আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। সেই উদ্যোগ সিটি করপোরেশন নিয়েছে।’
পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জন্য আলাদা আলাদা সম্প্রদায়ভিত্তিক আবাসনের ব্যবস্থা যেমন করা হবে তেমনি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে জানিয়ে ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করছে।’
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অনেক জায়গা উত্তর সিটি করপোরেশনের কর্মচারীরা দখল করে রেখেছে জানিয়ে তাপস বলেন, ‘আমরা সেগুলো দখলমুক্ত করার কার্যক্রম গ্রহণ করবো। যারা উত্তর সিটি করপোরেশনে চাকরি করেন তাদের উত্তর সিটি করপোরেশনের জায়গায় চলে যেতে হবে। যারা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে চাকরি করেন কেবল তারাই দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এসব সুযোগ-সুবিধা পাবেন।’
অনুষ্ঠানে গতকালের (১ জুন) জলজট প্রসঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, 'মঙ্গলবারের বৃষ্টিতে যেসব স্থানে জলজটের সৃষ্টি হয়েছে, সেখানে গতবারের চেয়ে কম জলাবদ্ধ হয়েছে। তারপরেও আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করছি, আগামীতে যেন এসব স্থান থেকে দ্রুত জলাবদ্ধতা নিরসন করা যায়। আমরা আশাবাদী অচিরেই জলাবদ্ধতার সমস্যার সমাধান হবে। আমাদের লক্ষ্য সাধারণ মাত্রার বৃষ্টিপাত হলে, ঢাকা শহরে যেন পানি না জমে। অতি ভারী মাত্রার বৃষ্টিপাত হলে যেন তিন ঘণ্টার মধ্যে, ভারী বৃষ্টিপাত হলে যেন দুই ঘণ্টার মধ্যে এবং মাঝারি ভারী বৃষ্টি হলে যেন এক ঘণ্টার মধ্যেই পানি নিষ্কাশন হয়ে যায়, সেই ভাবে আমরা আমাদের কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করছি।'
অনুষ্ঠানে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস ঢাকাবাসীকে উন্মুক্ত স্থানে বর্জ্য না ফেলার আহ্বান জানান।
সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দিন আহাম্মদের সভাপতিত্বে এই হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) কাজি মনিরুল ইসলাম, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাদল সরদার, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর লাভলী চৌধুরী।
সভা শেষে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস তেলেগু সম্প্রদায়ের ৯৫ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের মাঝে ‘শিমুল’ ও ‘মুকুল’ নামীয় পরিচ্ছন্ন কর্মী নিবাসের বরাদ্দপত্র ও চাবি হস্তান্তর করেন।