পুড়ে যাওয়া ধংসস্তুপ থেকে তখনও ধোয়ার কুণ্ডলী বের হচ্ছে। আধপোড়া টিন, ঘরের আসবাবগুলো থেকে অপেক্ষাকৃত কম পুড়ে যাওয়া জিনিস বা তৈজসপত্র খুঁজে খুঁজে সংগ্রহ করছে বস্তিবাসী।
বেশ কিছু আধাপোড়া বা পুড়ে কয়লা হয়ে যাওয়া চাল থেকে বেছে বেছে চাল সংগ্রহ করছেন চল্লিশোর্ধ এক নারী। এমন দৃশ্য অগ্নিকাণ্ডে ছাই হয়ে যাওয়া মহাখালী সাত তলা বস্তির।
সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই নিজে থেকেই বলতে শুরু করলেন, আগুনে সব শ্যাষ পুইড়া। একটা সুতাও বাইর করতে পারি নাই। টাকা পয়সা যা ছিলো সেগুলাও পুইড়া গেছে। এক বোতল পানি যে কিন্না খামু সেইটার উপায়ও নাই। পোলাপাইনের লগে আমরাও না খায়া রইছি। এখনো কেউ কোন খাবার নিয়া আসে নাই। তাই বাধ্য হইয়া পোড়া চাউলের থাইকা চাউল বাইছা নিতাছে। অন্তত সিদ্ধ কইরা নুন দিয়া তো খাইতে পারব- এসব বলতে বলতেই চোখের পানিও মুছলেন আসমা খাতুন।
কথা হয় বস্তিতেই দর্জির দোকান করা আবুল হাসনাতের সাথে। তিনি বলেন, আমরা তো কিছু বের করতে পারি নাই। আমাদের খাওয়ারও কোন ব্যবস্থা নাই।
নাঈম নামে এক তরুণ জানান, আমার ঘরের কিছু জিনিস রক্ষা করি। বাহিরে আইসা দেখি এগুলাও কারা জানি চুরি কইরা নিয়া গেছে।মানুষ কত খারাপ হয়!
এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন এনজিও, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বা জনপ্রতিনিধিদের এখানে দেখা যায় নাই। একজন ব্যাক্তি উদ্যোগে কিছু কাপড় দিয়েছে।
আগুন নিয়ন্ত্রণ শেষে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে অবৈধ গ্যাস ও বিদ্যুতের লাইন থেকে এই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডের শিকার ভুক্তভোগী বস্তিবাসির দাবি, প্রায় তিন থেকে চারশত ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।কেউ কোন কিছু বের করতে পারেনি।
তারা অভিযোগ করেছেন, বরাবরের মতো ফায়ার সার্ভিস দেরিতে এসেছে। প্রথমে দুই ইউনিট কাজ করায় এতটা ক্ষতি হয়েছে বলেও তাদের অভিযোগ।