সাবেক তত্ববধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন একাত্তর টিভির টক শো-তে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ বলায় সাংবাদিক সমাজে, মানবাধিকার কর্মী ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
এমন অশোভন আচরণের জন্য সাবেক তত্ববধায়ক সরকারের এই উপদেষ্টাকে ‘প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার’ আহ্বান জানিয়েছেন সাংবাদিকরা।
মইনুল হোসেনের বক্তব্যের প্রতিবাদে নারী সাংবাদিক ও নারী আন্দোলন কর্মীরা বিবৃতিও দিয়েছেন। বিবৃতিতে মানবাধিকার নেত্রী ড. সুলতানা কামাল, খুশী কবির সাক্ষর করেন।
এছাড়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন ও মুন্নী সাহা, শাহনাজ মুন্নীসহ শতাধিক নারী সাংবাদিক এবং নারী আন্দোলনকর্মীর বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একজন সাংবাদিক ও নারীকে অশালীন মন্তব্য করায় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
সাংবাদিক ফারজানা রুপার তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে মইনুল হোসেনকে ক্ষমা চাওয়া আহ্বান জানিয়ে পোস্ট করেন।
সেই পোস্টে সাংবাদিক কাবেরী মৈত্রেয় লেখেন, বিকৃত রুচির মানুষকে প্রকাশ্যে বিচারের আওতায় আনা হোক।
সাংবাদিক শারমীন ইব্রাহিম লেখেন, কি দুঃসাহস!!! প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতেই হবে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ও কলামিস্ট জাকির হোসেন এক পোস্টে লেখেন, শিক্ষার আলো এদের হৃদয়ে প্রবেশ করে নি। আমি আরেকদিন এক টক শো তে সাংবাদিকের উদ্দেশ্যে তাকে বলতে শুনেছি আপনারা সাংবাদিকরা পড়াশোনা তো করেন না।
ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বেসরকারি টিভি চ্যানেল ডিবিসি‘র এডিটর নবনীতা চৌধুরী এক পোস্টে দেন।
সেই পোস্টে ‘সাংবাদিক সমাজকে মইনুল হোসেনের‘ বিরুদ্ধে প্রতিবাদের আহ্বান জানান এটিএন বাংলার হেড অব নিউজ প্রভাস আমীন। তিনি তার কমেন্টে লিখেন, এটা শুধু নারী সাংবাদিকদের বিষয় নয়। সবাই মিলে প্রতিবাদ করতে হবে।
মঙ্গলবার ৭১ টিভির লাইভ টকশো-তে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টি ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে প্রশ্ন করেন- ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলা হচ্ছে, আপনি জামায়াতের প্রতিনিধি হয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে উপস্থিত থাকেন? আপনি কি আসলেই জামায়াতের প্রতিনিধি? এমন প্রশ্নের উত্তের মইনুল হোসেন বলেন, আপনার দু:সাহসের জন্য ধন্যবাদ দিচ্ছি। আপনি চরিত্রহীন বলে মনে করতে চাই। আপনি যে প্রশ্ন করেছেন তা আমার জন্য বিব্রতকর।
শিক্ষিত ও ভদ্র মহিলা হিসেবে অন্য প্রশ্ন করেন বলে মন্তব্য করেন ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন।
টক শো এক পর্যায়ে তিনি এখনকার সাংবাদিকরা- ‘কেউ বাকশালী করে, কেউ বিএনপি করে’- বলেও মন্তব্য করেন।
এরপর থেকে সাবেক তত্ববধায়ক সরকারের এই উপদেষ্টার বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় ওঠে।