গত কয়েকদিনে কয়েকজন মডেল ও অভিনেত্রী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। এদের মধ্যে বহুল আলোচিত দুই মডেল ফারিয়া মাহাবুব পিয়াসা এবং মরিয়ম আক্তার মৌ। এই তালিকা আরও বড় হতে পারে বলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সূত্র জানিয়েছে।
এসব মডেল-অভিনেত্রীর বাসা থেকে মদ, ইয়াবা, সিসাসহ নানা সামগ্রী জব্দ করা হয়। জানা গেছে, তারা ধনাঢ্য পরিবারের সন্তানদের সঙ্গে লেট নাইট পার্টি করেন। এবং পরে তাদের ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ হাতিয়ে নেন। কথিত এসব মডেল ও অভিনেত্রী রাতে পার্টির আয়োজন করায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের রাতের রানী বলে মন্তব্য করছে। এবং তাদের একটি গ্রুপ রয়েছে বলে ধারণা করছে। এই গ্রুপের সদস্যরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় থেকে এসব পার্টির আয়োজন করেন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদ বলেন, মডেল পিয়াসা ও মৌ ব্লাকমেইল করা সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য। ওই চক্রের সদস্যরা রাতের রানী বলেই সংশ্লিষ্টদের কাছে পরিচিত। তারা সারাদিন ঘুমিয়ে কাটাতেন। রাতে বিভিন্ন পার্টিতে গিয়ে উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের টার্গেট করে বাসায় ডেকে আনতেন।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে- কাদের অভিযোগের ভিত্তিতে কথিত এসব মডেল-অভিনেত্রীকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। কারাই বা তাদের বিরুদ্ধে ব্ল্যাকমেইলিং এর অভিযোগ করেছেন। অনেকের অভিযোগ, প্রকৃত ঘটনা অনেকটা ধোঁয়াশায় রেখে মডেল ও অভিনেত্রীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উচিত পুরো বিষয়টা জনগণের সামনে তুলে ধরা।
এদিকে গ্রেফতারকৃত ফারিয়া মাহবুব পিয়সা এবং মরিময় মৌ নামে দুই নারীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পুলিশ তাদের রিমান্ডেও নিয়েছে। আগে থেকেই ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা তার নানা কর্মকাণ্ডের জন্য আলোচিত। অন্যদিকে, মরিময় মৌ তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ঢাকার অভিজাত পাড়ার অনেক কিছুই আমাদের নাগালের বাইরে। এখনকার খুব কম ঘটনাই প্রকাশ্যে আসে। তবে সম্প্রতি অভিজাত ক্লাবে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা বেশ আলোচিত হয়েছে। আর এসব সে ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এর মধ্যে খবরে এলো দুই কথিত নারী মডেল।
তবে কথিত মডেল গ্রেফতারের ঘটনায় কিছু প্রশ্নের উত্তর এখনও খোলসা নয়। তাদের বাসায় মদ, ইয়াবা সিসা থাকার ছবি প্রকাশ পেয়েছে। গণমাধ্যমে এসেছে তাদের উচ্ছৃঙ্খল জীবন-যাপনের কথা। কীভাবে ক্লাব থেকে ছেলেদের তারা বাসায় নিয়ে যেতেন তার বিবরণীও আমরা জানতে পেরেছি।
কিন্তু, সেই ছেলে বা পুরুষ কারা তা এখনও খোলাসা নয়। ব্ল্যাকমেইলের শিকার পুরুষরা কোনো মামলা এখন পর্যন্ত দায়ের করেননি। তারা কি নাবালক না শাবালক তাও স্পষ্ট নয়। খুব কম বয়সী হলেতো তারা ঢাকার অভিজাত ক্লাবেও গভীর রাতে প্রবেশ করতে পারার কথা নয়।
শত শত বছর ধরেই এটা বলা হয়ে থাকে, আইনের চোখে সবাই সমান। মামলা ও অভিযোগের বিষয়ে পরিষ্কার না করে কেন এসব নারীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে!যদিও অতীতে দেখা গেছে, কেউ কেউ হয়ত একটু বেশিই সমান। নারী বলে কাউকে অভিযোগ থেকে মুক্তি দেওয়ার সুযোগ নেই। আবার ফৌজদারি অপরাধের ক্ষেত্রে অভিযোগও স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন। আইনের সমতা বিধানের প্রয়োগের মাধ্যমে কেবল আইনের শাসন কায়েম করা সম্ভব।
সৌজন্যে: মানবজমিন