ট্রাকসহ পণ্য পরিবহনের গাড়িও বন্ধ, অনড় অবস্থানে সরকার

ঢাকা, জাতীয়

সাব্বির আহমেদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-25 23:11:23

সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘটে সমর্থন নিয়ে সারাদেশে চলছে না ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান ও পণ্য পরিবহন গাড়ি।

রোববার (২৮ অক্টোবর) সকাল ৬টা থেকে ডাকা ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট চলছে। দুপুর পর্যন্ত পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন ও সরকারের সঙ্গে কোনো বৈঠকের খবর পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ধর্মঘট কোথায় গিয়ে গড়ায় এমন বক্তব্য দিয়ে বলেছেন, সরকারের এই মেয়াদে আইন পরিবর্তনের সুযোগ নেই।

এ অবস্থায় সহসা পরিস্থিতি উন্নত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।

বাংলাদেশ ট্রাক কাভার্ড ভ্যান মালিকদের নেতা রুস্তম আলী বলেছেন, সারাদেশে ৩ লাখ ১০ হাজার ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান রয়েছে। তারাও এই ধর্মঘটে সমর্থন দিয়েছেন। ফলে গণপরিবহনের মতো ট্রাক কাভার্ড ভ্যান ও পণ্য পরিবহনের কোনো গাড়ি চলছে না।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেছেন, শ্রমিকদের ডাকা এই ধর্মঘট অযৌক্তিক এবং অবৈধ।

এক পরিবহন শ্রমিক নেতা বলেন, হঠাৎ করে এ কর্মসূচি দেওয়া হয়নি। সরকারের পরিবহন মন্ত্রী ও মন্ত্রণালয়ে বহুবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মন্ত্রী কেবল বিফ্রিংয়ে ব্যস্ত। তাকে গত কয়েকদিন থেকে পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় তারা বাধ্য হয়েছে ধর্মঘট কর্মসূচি দিয়েছেন।

এদিকে ‘ধর্মঘট কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় দেখি’-এমন বক্তব্য দেওয়ার পর পরিবহন শ্রমিকরা আরও শক্ত অবস্থানে গিয়েছেন। তারা ৪৮ ঘন্টার আগে কর্মসূচি শেষ করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন।

তাদের দাবিতে পরিবহন মালিক নেতাদের সমর্থন দেখা যাচ্ছে। রাস্তায় কোনো পরিবহন মালিক তার কোম্পানির বাস নামাননি। ঢাকার ভেতরে বিআরটিসির কিছু বাস চলছে। কিন্তু সেটা অপ্রতুল। এ অবস্থায় হাজার হাজার মানুষ বিপাকে পড়েছেন গণপরিবহন না পেয়ে। পায়ে হেঁটে অনেকে কর্মস্থলে যাচ্ছেন যাচ্ছেন। বাস না পেয়ে একটি ময়লার গাড়িতে করে মানুষ যাচ্ছে-এমন ছবিও সো্শ্যাল মিডিয়ার ভাইরাল হয়েছে।

এক হাজারের বেশি বাস রযেছে এমন একটি বাস কোম্পানির একজন পরিবহন মালিক জানান, একদিন সড়কে বাস না চললে তার লাখ লাখ টাকা লোকসান হয়। ব্যাংকের কিস্তি আটকে পড়ে। এ অবস্থায় ক্ষতি সহ্য ছাড়া কোনো উপায় নেই। তারা অপেক্ষা করছেন সরকার হয়তো কোনো উদ্যোগ নেবে শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠক করে- পরিস্থিতি সামাল দেবে।

তবে দুপুর গড়ালেও পরিস্থিতি সমাধানে কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।

মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর শ্রমিক ফেডারেশন সড়ক পরিবহন আইনের বিভিন্ন ধারার সংশোধনের দাবি জানিয়ে আসছিল। কিন্তু সরকার আইন পরিবর্তন বা সংশোধনে পরিবনহ শ্রমিকদের কথায় সাড়া দেননি।

তিনমাস আগে রাজধানী ও সারাদেশে বেশ কয়েকটি সড়ক দুর্ঘটনার পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরু হয়েছিলো। এ প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয়ে মতামতের জন্য আটকে থাকা আইনটি দ্রুত পাশ করা হয়।

শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী এ আইনের আইনের আটটি বিষয় সংশোধনের জন্য গত মাসের ২৭ তারিখ সরকারকে চিঠি দিয়েছিলেন।

এর মধ্যে প্রথম বিষয়টি হচ্ছে, সড়ক দুর্ঘটনার জামিন অযোগ্য করার বিষয়টি সংশোধন করা। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে তারা ধর্মঘট ঘোষণা করেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর