করোনাকালে পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ৮৪ দশমিক ৬ শতাংশ মানসিক স্বাস্থ্যগত সমস্যায় ভুগছে। যাদের মধ্যে পুরুষ শিক্ষার্থীর তুলনায় নারী শিক্ষার্থীরা এই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন বেশি। তাদের এই সমস্যায় পড়ার প্রধান কারণ হিসেবে দেখা গেছে, পরিবারের সদস্যদের প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হওয়া।
শিক্ষার্থীভিত্তিক সামাজিক প্রতিষ্ঠান আঁচল ফাউন্ডেশনের এক জরিপ বলছে,পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন, যা জরিপে অংশ নেওয়া মোট বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর ৮৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর দেশের ২ হাজার ৫৫২ জন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর ওপর চালানো ওই জরিপে এসব তথ্য উঠে আসে। এতে দেখা যায়, মহামারিতে পুরুষ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৮০ দশমিক ৩৮ শতাংশ এবং নারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৮৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন।
শনিবার সামাজিক সংগঠন আঁচল ফাউন্ডেশনের সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। 'বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর কভিড-১৯ প্যানডেমিকের প্রভাব' শীর্ষক জরিপে এ চিত্র উঠে আসে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আঁচল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তানসেন রোজ। আরও উপস্থিত ছিলেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. ইমরান মাহমুদ, সহকারী অধ্যাপক আফসানা বেগম ও সাইকোলজিস্ট দীপন সরকার।
জরিপে অংশ নেওয়া ১ হাজার ৫৪১ জন অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তার কথা ভেবে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন বলে মনে করেন। দ্বিতীয় কারণ হিসেবে ১ হাজার ৫৩৭ জন শিক্ষার্থী একাকিত্বকে দায়ী করেছেন। ১ হাজার ৫৮ জন শিক্ষার্থী সেশনজটকে কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। ১ হাজার ২৮ জন টিউশন চলে যাওয়ায় এবং আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে মানসিক অশান্তিতে ভুগছেন।
মানসিক স্বাস্থ্য সুস্থ রাখার জন্য বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে যোগাযোগ, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বেশি বেশি যোগাযোগ করা, একাকি না থাকা, সময় মতো খাওয়া-দাওয়া, ঘুমসহ মানসম্মত জীবনযাপন করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।