মস্তিষ্কের কোনও অংশের রক্ত পরিবহণ বাধার মুখে পড়লে বা কমে গেলে মস্তিষ্কের কলাগুলো নষ্ট হয়, তখন স্ট্রোক হয়ে থাকে। এছাড়াও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, মেদবহুলতা, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনই মূলত স্ট্রোকের জন্য দায়ী।
তবে রক্তচাপ, হৃদরোগ, মধুমেহ, কোলেস্টেরল, মেদবহুলতা, ধূমপান ও মদ্যপান বন্ধ করা কম করা, অবসাদ কমানো ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে স্ট্রোকের ঝুঁকিও কমিয়ে আনা সম্ভব হয়। প্রতিদিন এক্সারসাইজ এবং সুষম আহার গ্রহণের ফলেও সুফল লাভ করা যায়।
এমন কিছু খাবার আছে, যা আমরা প্রতিদিন খেয়ে থাকি এবং সেগুলো আমাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। সেই খাবারগুলো স্ট্রোকের ঝুঁকি কম করার জন্য এড়িয়ে যাওয়া ভালো।
যেসব খাবারে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে-
প্রক্রিয়াজাত খাবার
দিনের শুরু ও শেষ যদি জাঙ্ক ফুড দিয়ে করে থাকেন, তা হলে এখনই সাবধান হয়ে যান। কারণ আপনি স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছেন। ক্র্যাকার, চিপস, স্টোর থেকে কিনে আনা খাবার এবং ভাজা খাবারের মতো প্রক্রিয়াজাত খাবার বা জাঙ্ক খাবারে প্রচুর পরিমাণে ট্রান্স ফ্যাট থাকে।
এর ফলে এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, যা ধমনীতে জমে এবং ব্লকেজের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এটি শরীরে ইনফ্লেমেশানের কারণ। এই প্রদাহ বাড়তে থাকলে স্ট্রোক হার্ট অ্যাটাকের মতো সমস্যা দেখা দেয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
স্মোকড ও প্রক্রিয়াজাত মাংস
স্মোকড ও প্রক্রিয়াজাত মাংসে সোডিয়াম নাইট্রাইটের মতো কিছু উপাদান থাকে, যা রক্তবাহিকার ক্ষতি করে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। এর ফলে অক্সিডেটিভ চাপ দেখা যায়, যা রক্তবাহিকার দেওয়াল ধ্বংস করে এবং কলাগুলিতে আঘাত হানে। হট ডগ, বেকন, সালামি এমনই কিছু স্মোকড ও প্রক্রিয়াজাত মাংসের উদাহরণ। নিজের খাদ্য তালিকায় এর উপস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখাই শ্রেয়।
টেবিল সল্ট
স্ট্রোক থেকে বাচতে টেবিল সল্ট ব্যবহার বাদ দিন। তবে প্রাকৃতিক অপরিশোধিত লবণ, যেমন হিমালয়ান লবণ স্ট্রোকের ঝুঁকি বৃদ্ধির সঙ্গে জড়িত নয়। খাবারের স্বাদবৃদ্ধিতে এই লবণ ব্যবহার করা যায়। লবণ রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়, যা ধমনী, মস্তিষ্ক ও হৃদযন্ত্রের ক্ষতি করে। তাই দিনে লবণ গ্রহণের পরিমাণ ৫ গ্রামের নীচে কমিয়ে আনলে রক্তচাপ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে কমে আসতে পারে।
সফট ড্রিঙ্ক
সফট ড্রিঙ্ক অনেককেই আকৃষ্ট করে। অনেকের ধারণা ডায়েট ড্রিঙ্কে সমস্যা হয় না। তবে নানা অধ্যয়নে ডায়েট সফ্ট ড্রিঙ্ক পান করলে স্ট্রোক ও ভাসকিউলার রোগের ঝুঁকি বাড়ে। তাই এ ধরনের খাবার এড়িয়ে গেলে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমানো যাবে এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন সম্ভব হবে।